ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
সোমবার ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ১১ কার্তিক ১৪৩২
ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া নিয়ে বিব্রত হচ্ছেন?
নতুন সময় ডেস্ক
প্রকাশ: Saturday, 25 October, 2025, 12:57 PM

ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া নিয়ে বিব্রত হচ্ছেন?

ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া নিয়ে বিব্রত হচ্ছেন?

লজ্জা ও দ্বিধার কারণে শরীরের নানা সমস্যার কথা আমরা অনেক সময় প্রকাশ করি না, চেপে যাই। বিশেষ করে প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণের সমস্যা বা ব্লাডার নিয়ে কথা বলা আমাদের সমাজে এখনো একধরনের অস্বস্তির বিষয়। অথচ এ সমস্যা খুবই সাধারণ। সবচেয়ে বড় কথা, এর বেশির ভাগই প্রতিরোধযোগ্য বা নিয়ন্ত্রণযোগ্য। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, মূত্রথলি–সম্পর্কিত অনেক ভুল ধারণা বা ‘মিথ’ আজও ছড়িয়ে আছে আমাদের চারপাশে।

মিথ ১: আমার ব্লাডার ছোট, তাই বারবার প্রস্রাব হয়

অনেকে মনে করেন, ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া মানেই ব্লাডার ছোট। বাস্তবে বিষয়টি একেবারেই তা নয়। বেশির ভাগ মানুষের ব্লাডারের ধারণক্ষমতাই যথেষ্ট। সমস্যা হয় তখন, যখন ব্লাডার ঠিকভাবে সংকুচিত বা প্রসারিত হতে পারে না কিংবা মস্তিষ্ক থেকে সংকেত পেতে দেরি হয়। অর্থাৎ ছোট ব্লাডার নয়; বরং এর কার্যকারিতার সমস্যার কারণে ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে।

মিথ ২: কেবল বয়স্ক বা নারীরাই ব্লাডারের সমস্যায় ভোগেন

এটিও সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। যদিও গর্ভধারণ, সন্তান জন্মদান ও হরমোন পরিবর্তনের কারণে নারীদের মধ্যে ব্লাডার ইনকন্টিনেন্স বা নিয়ন্ত্রহীন মূত্রথলির প্রবণতা কিছুটা বেশি, তবে পুরুষদেরও এ সমস্যা হতে পারে। বয়স বা লিঙ্গপরিচয় যা–ই হোক, জীবনযাত্রা, অতিরিক্ত ওজন, ধূমপান, এমনকি কিছু ওষুধও এর ঝুঁকি বাড়াতে পারে।

মিথ ৩: পানি কম খেলে সমস্যা কমবে

অনেকেই ভাবেন, পানি কম খেলে প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাবে, ফলে ব্লাডারও ‘আরাম পাবে’। আসলে তা নয়। পানি কম খেলে প্রস্রাব ঘন হয়ে যায়, যা ব্লাডারকে আরও বেশি উত্তেজিত করে, বাড়িয়ে দেয় প্রস্রাবের চাপ। তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করা জরুরি। অল্প অল্প করে, সারা দিনে সমানভাবে ভাগ করে পানি খেতে হবে।

মিথ ৪: কেগেল ব্যায়ামই একমাত্র সমাধান

কেগেল (প্রস্রাব নিয়ন্ত্রণের ব্যায়াম) ব্লাডারের চারপাশের মাংসপেশি মজবুত করতে দারুণ কার্যকর, তবে এটি একমাত্র সমাধান নয়। কিছু ক্ষেত্রে খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন, ক্যাফেইন ও অ্যালকোহল গ্রহণ কমানো, ওজন নিয়ন্ত্রণ বা ওষুধ প্রয়োজন হতে পারে। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী থেরাপি বা ফিজিওথেরাপিও উপকার দিতে পারে।

মিথ ৫: আগে থেকেই প্রস্রাব করে নেওয়া ভালো অভ্যাস

অনেকে ঘর থেকে বের হওয়ার আগে বা দীর্ঘ পথ ধরার আগে প্রস্রাব করে নেন। কিন্তু সময়ের আগেই বারবার ব্লাডার খালি করলে শরীরের স্বাভাবিক সংকেতের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে যায়। এতে ব্লাডার ছোট হয়ে যেতে পারে এবং পরে আরও ঘন ঘন প্রস্রাবের প্রবণতা দেখা দিতে পারে।

সচেতনতার শুরু নিজ থেকেই

‘ওভারঅ্যাকটিভ ব্লাডার’ বা অতি সক্রিয় মূত্রথলি এমন একটি অবস্থা, যেখানে মানুষ ঘন ঘন প্রস্রাবের চাপ বোধ করে, অনেক সময় ধরে রাখতে না পারার আশঙ্কা থাকে। শারীরিকভাবে এটি বিপজ্জনক না হলেও মানসিক ও সামাজিক জীবনে প্রভাব ফেলে। তবে এ সমস্যার সমাধান সম্ভব। সঠিক জীবনযাপন, পর্যাপ্ত পানি পান, নিয়মিত ব্যায়াম, ওজন নিয়ন্ত্রণ এবং চিকিৎসকের পরামর্শে চিকিৎসা গ্রহণ—এসবই ব্লাডারকে সুস্থ রাখার মূল চাবিকাঠি।

মূত্রথলির সমস্যা কোনো লজ্জার বিষয় নয়; বরং এটি শরীরের একটি সংকেত। ভুল ধারণার বেড়াজাল থেকে বেরিয়ে এসে সচেতন হোন, সমস্যা থাকলে কথা বলুন, প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের সাহায্য নিন। কারণ, নিজের শরীর সম্পর্কে জানাই হলো সুস্থ জীবনের প্রথম পদক্ষেপ।

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status