|
ড্রাইভিং লাইসেন্সে কর্তৃত্ব হারাচ্ছে বিআরটিএ, দায়িত্ব পাচ্ছেন সেনাবাহিনী
বিধান বিশ্বাস, চট্টগ্রাম
|
![]() ড্রাইভিং লাইসেন্সে কর্তৃত্ব হারাচ্ছে বিআরটিএ, দায়িত্ব পাচ্ছেন সেনাবাহিনী এবার সেই কর্তৃত্ব হারাতে যাচ্ছে সংস্থাটি। জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ২০২৫ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সড়ক পরিবহন ও সেতু উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ঘোষণা দিয়েছেন- বিআরটিএ আর ড্রাইভিং লাইসেন্স ইস্যু করবে না। এই দায়িত্ব দেয়া হবে সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন করপোরেশনের (বিআরটিসি) প্রশিক্ষণ কেন্দ্রগুলোকে, পাশাপাশি কিছু বেসরকারি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানকেও। বিআরটিএর বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় লাইসেন্স নিতে গিয়ে হয়রানির শিকার হন আবেদনকারীরা, এ অভিযোগ নতুন নয়। অনলাইন আবেদন থেকে শুরু করে ব্যবহারিক পরীক্ষায়ও অনিয়মের অভিযোগ আছে। যানবাহনের মালিক ও চালকদের অভিযোগ, লাইসেন্স পেতে ঘুষ না দিলে প্রক্রিয়া শেষ হয় না। অনেক ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ছাড়াই লাইসেন্স মেলে দালালচক্রের মাধ্যমে। যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. শামসুল হক এ বিষয়ে বলেন, সরকারের এ উদ্যোগ প্রশংসনীয়। ড্রাইভিং লাইসেন্সের মতো সেবামূলক কাজ বিকেন্দ্রীকরণ করা জরুরি। সরকার পলিসি নির্ধারণ করবে, কিন্তু সরাসরি সেবা দিলে আমলাতন্ত্র ও দুর্নীতি ঢুকে পড়ে। শ্রীলঙ্কা বা মালয়েশিয়ার মতো মডেল অনুসরণ করা যেতে পারে। দুর্ঘটনার পেছনে অদক্ষতা সরকারি এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, ২০১৪ থেকে ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬৭ হাজার ৮৯০টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১ লাখ ১৬ হাজার ৭২৬ জন। অধিকাংশ দুর্ঘটনার মূল কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে চালকদের অদক্ষতা, নিয়ম না মানা ও সচেতনতার অভাব। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী খোদা বখস চৌধুরী বলেন, আমরা চালকদের আন্তর্জাতিক মানে প্রশিক্ষণ দিতে পারিনি, এটাই বড় ব্যর্থতা। এখনই সময় আধুনিক ড্রাইভিং স্কুল তৈরির। নতুন ব্যবস্থায় কী থাকছে সরকার যে সংস্কার আনছে, তাতে লাইসেন্স পাওয়ার প্রক্রিয়াটি পুরোপুরি প্রশিক্ষণভিত্তিক হচ্ছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী লাইসেন্স পেতে ন্যূনতম ৬০ ঘণ্টার প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক। প্রশিক্ষণ শেষে পরীক্ষা ও মূল্যায়ন করে লাইসেন্স ইস্যু করবে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্র। প্রশিক্ষণকালীন ভাতা দেওয়ার ব্যবস্থাও থাকবে। চালকদের ডোপ টেস্ট ও শারীরিক সক্ষমতা যাচাই করা হবে। সড়কের চিহ্ন, ট্রাফিক নিয়ম ও গাড়ি নিয়ন্ত্রণের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হবে। উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান বলেন, আমরা এমন চালক চাই, যারা শুধু গাড়ি চালাতে নয়, সড়কের ভাষাও বুঝতে পারে। আগামী মাসেই প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করা হবে। নতুন ব্যবস্থার চ্যালেঞ্জ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, নতুন উদ্যোগ সফল করতে হলে কয়েকটি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে- প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানের মান নিশ্চিত করা, লাইসেন্স ইস্যুর পুরো প্রক্রিয়া ডিজিটাল ও ট্র্যাকযোগ্য করা। প্রশিক্ষকদের দক্ষতা ও নৈতিক মান বজায় রাখা। এ ছাড়া বিআরটিএর বর্তমান কাঠামো সংস্কার না করলে কাগজে-কলমে পরিবর্তন হলেও বাস্তবে দুর্নীতি থেকে মুক্তি পাওয়া কঠিন হবে বলে মত বিশেষজ্ঞ মহলের। |
| পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |
