ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
সোমবার ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ১১ কার্তিক ১৪৩২
কুবির প্রত্নতত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা বার্ষিক ভাইবা দিবেন দুইবার !
অমি দেব, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
প্রকাশ: Thursday, 23 October, 2025, 11:47 AM

কুবির প্রত্নতত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা বার্ষিক ভাইবা দিবেন দুইবার !

কুবির প্রত্নতত্ব বিভাগের শিক্ষার্থীরা বার্ষিক ভাইবা দিবেন দুইবার !

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের দ্বিতীয় বর্ষের ভাইভার রেজাল্ট শীট হারিয়ে ফেলার অভিযোগ উঠেছে পরীক্ষা কমিটির বিরুদ্ধে। ফলাফল প্রকাশিত না হওয়ায় প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীরা পঞ্চম সেমিস্টারে বসতে যাচ্ছেন বিলম্বে।

এই পরীক্ষা কমিটির প্রধান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মাহমুদুল হাসান খান। এছাড়া কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন সহকারী অধ্যাপক মো: মোরশেদ রায়হান এবং সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মশিউর রহমান।

বিভাগের শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের চতুর্থ সেমিস্টার ভাইভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল গত ২১ আগস্ট। ভাইভার ফলাফলের তালিকাটি হারিয়ে যাওয়ায়, এখনও ফলাফল প্রকাশিত হয়নি। এতে শিক্ষার্থীদের ৫ম সেমিস্টারের পরীক্ষা ২৬ অক্টোবর হওয়ার কথা থাকলেও তা পিছিয়ে ২৯ অক্টোবর নেওয়া হবে বলে বিভাগ থেকে জানানো হয়েছে।

ভুক্তভোগী ব্যাচের এক শিক্ষার্থী নাম না প্রকাশের শর্তে বলেন, 'এই বিষয়গুলো আমাদের জন্য খুবই বিব্রতকর। এখন আমরা কিছু বলতেও পারি না। কারণ এখন যিনি দায়িত্বে আছেন, তিনি হয়তো সামনেও আমাদের পরীক্ষা কমিটিতে থাকবেন।  এটা নিয়ে কিছু বললে যদি আবার ভবিষ্যতে ফলাফলে কোন প্রভাব পড়ে, সে জন্য কেউ কিছু বলে না।'

পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান ড. মাহমুদুল হাসান খান বলেন, 'ভাইভার নিয়ম অনুযায়ী চারজন শিক্ষক আলাদা আলাদা শিটে নম্বর প্রদান করেন। এরপর গড় নম্বর নির্ধারণ করে একটি কপি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে পাঠানোরও নিয়ম রয়েছে। তবে আমাদের বিভাগে এ নিয়মটি তেমনভাবে অনুসরণ করা হয় না এবং এ বিষয়ে আমারও জানা ছিল না। আমি নম্বর শিটগুলো নিজের কাছে একটি ফাইলে সংরক্ষণ করেছিলাম। কিন্তু বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে—বিশেষ করে হল-সংক্রান্ত কাজের জন্য এরপর প্রায় দুই মাস পর যখন ফলাফল প্রস্তুত করতে যাই, তখন দেখি ফাইলটি খুঁজে পাচ্ছি না। পরে শিক্ষার্থীদের লিখিত অঙ্গীকারনামা নেওয়ার পর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সম্মতিতে দ্বিতীয়বার ভাইভা নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

অন্য দুই সদস্য মো: মোরশেদ রায়হান এবং মোহাম্মদ মশিউর রহমানকে ফোন করা হলেও তাদের কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। দুপুর আড়াইটার দিকে বিভাগের অফিস কক্ষে গিয়েও তাদের দেখা পাওয়া যায়নি।

প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক মো: সাদেকুজ্জামান বলেন, 'পরীক্ষার ফলাফল তৈরি তো আমার কাজ না, এগুলোর জন্য পরীক্ষা কমিটি আছে। পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন, আমি তাকে ভালোভাবে খোঁজার জন্য বলেছি। তিনি পুনরায় আমাকে জানান রেজাল্ট শীটটি খুঁজে পাননি। এরপর আমি পরীক্ষা কমিটিকে আলোচনার জন্য বলি। পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক থেকে টেলিফোনের মাধ্যমে আমাকে জানানো হয়েছে ২৩ অক্টোবর পুনরায় ভাইভা হবে। অফিশিয়াল কপিটি আমাকে পাঠানোর কথা রয়েছে।'

ভাইভার রেজাল্ট শীট জমা দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, 'নিয়ম অনুযায়ী ভাইভা পরীক্ষা শেষ হওয়ার পরেই মূল নম্বর পত্রটি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বরাবর জমা দেওয়া হয় এবং মূল কপির একটি কপি পরীক্ষা কমিটির সভাপতির কাছে থাকে। আমাদের বিভাগ এধরনের প্রাক্টিস করে আসছে।'

পুনরায় ভাইভা হলে শিক্ষার্থীরা মানসিক চাপ বোধ করবে কি-না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, 'শিক্ষার্থীরা যদি ভাইভা দিতে রাজি থাকেন, তাহলে এটা নিয়ে তেমন সমস্যা হওয়ার কথা না।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক থেকে প্রাপ্ত তথ্য মতে, সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৮ সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করতে হবে। কোনো সেমিস্টারে ভাইভা, ফিল্ডওয়ার্ক, মনোগ্রাফ কিংবা প্রজেক্ট থাকলে শেষ পরীক্ষার তারিখ হতে সর্বোচ্চ ১০ সপ্তাহের মধ্যে ফলাফল প্রকাশ করতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নুরুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘ভিসি স্যারের নির্দেশনায় আমি গতকাল সন্ধ্যায় নতুন করে ভাইবা নেয়ার জন্য উক্ত কমিটিকে একটি চিঠি পাঠিয়েছি। আমরা নির্দেশনা মোতাবেক শুধু সাইন করি, আমাদের কাজ এটাই।’

এই বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো হায়দার আলী বলেন, 'রেজাল্ট শিট হারিয়ে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা পুনরায় ভাইভা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি এড়াতেই আমি নির্বাহী আদেশে পুনরায় ভাইভা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। নিয়ম মেনে এগোতে গেলে এতে বেশ সময় লাগত।’

কমিটির বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি-না এমন প্রশ্নে উপাচার্য বলেন, ‘কমিটির সদস্যদের বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় নেওয়া হবে। সেখানে আলোচনা করেই তাদের ব্যাপারে পরবর্তী পদক্ষেপ নির্ধারণ করা হবে।’

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status