ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
সোমবার ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ১১ কার্তিক ১৪৩২
চট্টগ্রামে ১ বছরে বেকার হয়ে পড়েছেন অর্ধ লক্ষ শ্রমিক, বন্ধ হয়ে গেছে ৫০টি কারখানা
বিধান বিশ্বাস, চট্টগ্রাম
প্রকাশ: Sunday, 26 October, 2025, 2:03 PM

চট্টগ্রামে ১ বছরে বেকার হয়ে পড়েছেন অর্ধ লক্ষ শ্রমিক, বন্ধ হয়ে গেছে ৫০টি কারখানা

চট্টগ্রামে ১ বছরে বেকার হয়ে পড়েছেন অর্ধ লক্ষ শ্রমিক, বন্ধ হয়ে গেছে ৫০টি কারখানা

চট্টগ্রামে ৫ আগস্ট পরবর্তী এক বছরে পোশাক-ইস্পাতসহ বিভিন্ন ধরনের ৫০টি কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।

অস্থায়ীভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে আরও ৬৭টি কারখানা। বন্ধ হয়ে যাওয়া কারখানার মধ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান এবং আলোচিত শিল্পগ্রুপ- নাসা গ্রুপের প্রতিষ্ঠানও রয়েছে। শিল্প পুলিশের করা একটি তালিকায় এসব তথ্য উঠে এসেছে। 

ওই তালিকায় বলা হয়েছে, স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া ৫০টি কারখানার মোট শ্রমিক সংখ্যা ৮ হাজার ৭৪৩ জন। আর অস্থায়ীভাবে বন্ধ রাখা কারখানাগুলোর শ্রমিক সংখ্যা প্রায় ৪৩ হাজার। সবমিলিয়ে গত এক বছরে স্থায়ী ও অস্থায়ীভাবে বন্ধ থাকা ১১৭ কারখানার ৫১ হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে কর্মহীন হয়ে পড়েছেন।

শুধু কারখানা বন্ধ নয়, গত এক বছরে ৭০টি কারখানায় ৩১৫ বার শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটেছে বলেও শিল্প পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে। এর মধ্যে সর্বশেষ গত ১৪ ও ১৫ অক্টোবর প্যাসিফিক গ্রুপের কয়েকটি কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটে। এ কারণে এসব কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে গত বৃহস্পতিবার থেকে সেগুলো আবার পুনরায় সচল হয়।

আর্থিক সংকট, ঋণের পরিমাণ বেশি থাকায় ব্যাংক থেকে নতুন ঋণ না পাওয়া, এলসি জটিলতা ও কাজের অর্ডার না থাকাসহ নানা কারণে এসব কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে বলে শিল্প পুলিশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। 

চট্টগ্রাম শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন বলেন, নানা কারণে এসব কারখানা বন্ধ হয়ে গেলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মালিকপক্ষ শ্রমিকদের পাওনা দিয়ে দিয়েছেন।

বন্ধ কারখানার ২২টিই পোশাক সংশ্লিষ্ট- গতবছরের আগস্ট থেকে চলতি বছরের অক্টোবর পর্যন্ত চট্টগ্রামে ২২টি পোশাক কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে এ বছরের শুরু থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ১০ মাসে বন্ধ হয়ে গেছে ১১টি পোশাক কারখানা। কাজের অর্ডার না থাকা এবং মালিকপক্ষের আর্থিক ‘অসচ্ছলতার’ কারণে কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে গেছে বলে শিল্প পুলিশের করা তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে।

ইপিজেডে বন্ধ চার কারখানা- বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল ইপিজেডেও ৪টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এসব কারখানাগুলো হলো- নাসা গ্রুপের মালিকানাধীন টয় উড (বিডি) কোম্পানি লিমিটেড ও এমএনসি অ্যাপারেলস লিমিটেড। অপর দুটি প্রতিষ্ঠান হলো- থিয়ানিস অ্যাপারেলস লিমিটেড এবং জেএমএস গার্মেন্টস লিমিটেড। ইপিজেডের এসব কারখানায় মোট ৪ হাজার ৮১৮ জন শ্রমিক কাজ করতেন।

শিল্প পুলিশ বন্ধ কারখানার যে তালিকা করেছে, তার মধ্যে থিয়ানিস অ্যাপারেলস বন্ধের কারণ উল্লেখ করা হয়েছে মালিকের আর্থিক সংকট ও এলসি জটিলতা। আর জেএমএস গার্মেন্টস বন্ধের কারণ উল্লেখ আছে মালিকের আর্থিক সংকট। এছাড়া নাসা গ্রুপের দুই কারখানা বন্ধের কারণ উল্লেখ করা হয়েছে ব্যাংক জটিলতা, আর্থিক সংকট এবং কাজের অর্ডার না থাকা।

বন্ধ আরামিট গ্রুপের তিন প্রতিষ্ঠান- স্থায়ীভাবে বন্ধ হওয়া কারখানার তালিকায় রয়েছে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের পারিবারিক প্রতিষ্ঠান আরামিট গ্রুপের তিনটি কারখানা। 

এগুলো হলো- আরামিট থাই অ্যালুমিনিয়াম লিমিটেড, আরামিট ফুটওয়্যার ও আরামিট পাওয়ার লিমিটেড। তিনটি প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বে ছিলেন সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের স্ত্রী রুখমিলা জামান। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি ও সেপ্টেম্বর মাসে কারখানাগুলো বন্ধ করে দেয়া হয়। আর্থিক অসচ্ছলতা ও কাঁচামাল সংকটের কারণে কারখানাগুলো বন্ধ করা হয়েছে বলে শিল্প পুলিশের তালিকায় দেখানো হয়েছে।

এছাড়া গত এক বছরে ১৩টি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড ও স্টীলমিল, প্যাকেজিং কারখানা স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার তথ্য উঠে এসেছে শিল্প পুলিশের তালিকায়।

জানতে চাইলে বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স এন্ড রিসাইক্লার্স এসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) সহ-সভাপতি ও পিএইচপি ফ্যামিলির ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল ইসলাম রিংকু বলেন- হংকং কনভেনশন অনুযায়ী, গত ২৬ জুনের মধ্যে বাংলাদেশের সব শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ডকে গ্রিন শিপইয়ার্ডে রূপান্তরের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। তবে মাত্র ১৭টি শিপ ব্রেকিং ইয়ার্ড সেটি করতে পেরেছে। এ কারণে অনেকের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, বর্তমানে জাহাজ আমদানি তীব্রভাবে কমে গেছে। গত আগস্টে সীতাকুণ্ডে জাহাজ আমদানির জন্য নতুন কোন এনওসি দেওয়া হয়নি। জুনে ৯০ হাজার টন ওজনের সাতটি ও জুলাইয়ে ৮০ হাজার টন ওজনের আটটি জাহাজ আনা হয়েছিল। ব্যাংকগুলো এলসি দিতে পারছে না। ঋণ দিতে পারছে না। তাই সংকটে পড়ে অনেক শিপইয়ার্ড তাদের কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে।


পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status