হুমায়ুন কবির
|
![]() 'বকশিশ' কিন্তু 'ঘুষ' না শুরু হয় আইনি লড়াই। এখান থেকেই শুরু হয় বিচার পাওয়া-না পাওয়ার মূল চ্যালেঞ্জ। আর এই চ্যালেঞ্জের প্রতিটি ধাপে ধাপে "বকশিশের" নামে ঢালতে হয় টাকা। মামলা চলতে থাকে বছরের পর বছর। বকশিশও দিতে হয় মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত। এই বকশিশের চাপই অনেককে নিঃস্ব করে দেয়। মামলা লড়তে লড়তে প্রায় সর্বস্ব খোয়াতে হয় বাদী বিবাদী উভয়পক্ষকে। মূলত মামলার কপি নেওয়া, ওকালতনামায় সই করা, হাজিরা দেওয়া, রিমান্ড বাতিলের শুনানি করা, জামিন আবেদন করা, জামিন হলে জামিননামা দাখিল করা, রিলিজ অর্ডার বা মুক্তিনামা কারাগারে পাঠানোর আগে জামিননামা যাচাই করতে পুলিশের জিআর শাখায় দ্রুত ব্যবস্থা করা, কারাগার থেকে বের হতে দ্রুত রিলিজ অর্ডার কারাগারে পাঠাতে।জামিন না হলে কোর্ট হাজতখানায় খাবার খাওয়াতে, পরবর্তীতে জামিন ধরার আগে জামিন শুনানির জন্য পুটআপ দরখাস্ত মঞ্জুর করাতে, তারপরও জামিন না হলে দ্রুত নকল পাওয়ার জন্য, মিচকেস ফাইল এবং জামিল শুনানির জন্য দ্রুত তারিখ পাওয়াতে, অর্থাৎ মামলা সংক্রান্ত যে কোনো সেবায় বকশিশ বা খরচাপাতি ছাড়া এখন যেন চলেই না। বিচার চাইতে এসে পদে পদে অবিচারের শিকার হতে হয়। পড়তে হয় লাগামহীন খরচের পাল্লায়। আদালত অঙ্গনে নিয়মবহির্ভূতভাবে এ ধরনের লেনদেনকে বলা হয় খরচাপাতি। আবার যারা নিচ্ছেন, তারা এটাকে "ঘুষ" বলতে নারাজ। তাদের ভাষ্য— খুশি মনে মানুষ আমাদের বকশিশ দিয়ে যায়। আমরা বকশিশ-বাণিজ্যের অবসান চাই। আদালত হচ্ছে ন্যায়বিচারের জায়গা। আমরা সব সময় ন্যায়বিচার চাই। লেখক: হুমায়ুন কবির সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (রাজশাহী) |