ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
বৃহস্পতিবার ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ৭ কার্তিক ১৪৩২
‘খালি পেটে জল ভরা পেটে ফল’ আসলেই কি তাই!
নতুন সময় ডেস্ক
প্রকাশ: Monday, 20 October, 2025, 5:28 PM

‘খালি পেটে জল ভরা পেটে ফল’ আসলেই কি তাই!

‘খালি পেটে জল ভরা পেটে ফল’ আসলেই কি তাই!

‘খালি পেটে জল আর ভরা পেটে ফল’ - বাংলা ভাষায় বহুল প্রচলিত প্রবাদ। প্রবাদটির অর্থ দাঁড়ায়, ফল খেতে হবে ভরা পেটে।কিন্তু গবেষণা বলছে এ প্রবাদ সম্পূর্ণ সঠিক নয়।খালি পেটে পানি খাওয়ার অনেক উপকারিতা থাকলেও ফল খাওয়ার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। দিনের যেকোনো সময়ে ফল খাওয়া যেতে পারে, তবে এর কিছু সীমাবদ্ধতা আছে।

ফল খাওয়ার যদিও নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। তবে কিছু নিয়ম আছে। যেমন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফল খেতে নিষেধ করা হয়।বর্তমানে স্বাস্থ্যসচেতন অনেকে খাবার তালিকায় ফল রাখেন, ড্রাই ফ্রুটস রাখেন। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, ফল ভরা পেটে খাবেন নাকি খালি পেটে? সকালে ফল খাওয়ার অনেক উপকারিতা থাকলেও খালি পেটে সব ফল খাওয়া ততটা উপকারী নয়।

খালি পেটে ফল খেলে ভালো পুষ্টিগুণ পাওয়ার তথ্যটি প্রচলিত ধারণামাত্র। এর কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। মূলত বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও ই-মেইলের মাধ্যমে তথ্যটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের একাডেমিক মেডিকেল সায়েন্সবিষয়ক ওয়েবসাইট এমডিলিংক্সও খালি পেটে ফল খেলে বেশি পুষ্টিগুণ পাওয়া যাওয়ার ধারণাটিকে প্রচলিত ধারণা হিসেবে উল্লেখ করেছে। এমডিলিংক্স জানায়, ফল খালি পেটে খাওয়া হোক বা ভরা পেটে, সেটির পুষ্টিগুণ একই থাকে। অন্যান্য খাবারের সঙ্গে ফল খাওয়া অথবা খাবারের পর ফল খাওয়া স্বাস্থ্যের ওপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব ফেলে না। তবে এটি সত্য, খালি পেটে ফল খেলে সেটি দ্রুত হজম হয়ে যায়।

আন্তর্জাতিক ফ্যাক্টচেকিং নেটওয়ার্ক (আইএফসিএন) স্বীকৃত যুক্তরাষ্ট্রের ফ্যাক্টচেকিং প্রতিষ্ঠান স্নোপ্স জানায়, খালি পেটে ফল খাওয়ার ধারণার সূত্রপাত দেবাগি সানমুগাম নামের সিঙ্গাপুরের একজন নাগরিকের মাধ্যমে। তিনি পেশায় একজন রাঁধুনি এবং রন্ধনসম্পর্কীয় লেখক। ১৯৯৮ সালে তিনি দ্য কারেক্ট ওয়ে অব ইটিং ফ্রুটস নামে একটি লেখা প্রকাশ করেন। এই লেখার সূত্রেই ২০০১ সাল থেকে দাবিটি ইন্টারনেটে প্রচার হয়ে আসছে। তবে দেবাগি সানমুগাম ফল খাওয়ার সঠিক সময় খালি পেট উল্লেখ করলেও এ তথ্যের বিপরীতে কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা তিনি দেননি। 

আবার খালি পেটে ফল খেলে ক্যানসার প্রতিরোধ সম্ভব, এমন দাবিও প্রচার হতে দেখা যায়। তবে বার্তা সংস্থা এএফপির ফ্যাক্টচেক বিভাগ জানায়, খালি পেটে ফল খাওয়ার সঙ্গে ক্যানসার প্রতিরোধের কোনো সম্পর্ক নেই। ইন্দোনেশিয়ার বান্দুং শহরের এডেলউইস হাসপাতালের  চিকিৎসক পুষ্টিবিশেষজ্ঞ এল. আরিফ ফিরিয়ান্দ্রি ইউলিয়াস এএফপিকে বলেন, খালি পেটে ফল খাওয়া ক্যানসার প্রতিরোধক—এই ধারণার কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই।

এমডিলিংক্স আরও জানায়, অন্যান্য খাবারের পরে বা সঙ্গে ফল খেলে ফলের পুষ্টিগুণ যথাযথভাবে না পাওয়ার তথ্যটিও প্রচলিত ধারণামাত্র।  প্রকৃতপক্ষে ফল যখনই খাওয়া হোক না কেন, মানুষের পাচনতন্ত্র ওই ফল হজম করা এবং তার থেকে পুষ্টি গ্রহণ করার ক্ষেত্রে একইভাবে কাজ করে। হেলথ লাইনও ধারণাটি সত্য নয় উল্লেখ করে জানায়, খাবার বা ফল যখনই গ্রহণ করা হোক না কেন, সেটি থেকে পুষ্টি আহরণের ক্ষেত্রে মানবদেহ একইভাবে কাজ করে। অর্থাৎ খাবারের আগে বা পরে ফল খেলে এর থেকে যথাযথ পুষ্টি পাওয়া যাবে না, এই ধারণা ভুল। 

অনুরূপভাবে স্বাস্থ্যবিষয়ক ম্যাগাজিন মেডিকেল নিউজ টুডে রাতে শোয়ার আগে ফল খাওয়া থেকে বিরত থাকা প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের অলাভজনক প্রতিষ্ঠান ন্যাশনাল স্লিপ ফাউন্ডেশনের বরাত দিয়ে জানায়, ঘুমানোর আগে নির্দিষ্ট কিছু খাবার হজম প্রক্রিয়ার জন্য ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে। তবে প্রতিষ্ঠানটি তাজা ফলমূল খাওয়ার পরামর্শ দেয়। ঘুমাতে যাওয়ার আগে কলা খাওয়া দেহে পটাশিয়াম সরবরাহ করে, যা রাতে ঘুমানোর সময় পায়ে টান পড়া প্রতিরোধ করে। একই সঙ্গে উচ্চমাত্রার ম্যাগনেশিয়াম সমৃদ্ধ ফল যেমন খেজুর, অ্যাপ্রিকট ইত্যাদি ভালো ঘুম ও শরীরের আরামে ভূমিকা রাখে। 

সুতরাং,ফল খাওয়ার নির্দিষ্ট কোনো সময় নেই। তাই সময়ভেদে ফল খেলে এর পুষ্টিগুণেও কোনো তারতম্য হয় না; বরং যেকোনো সময়েই ফল খাওয়া যায়।তবে খাওয়ার আগে অবশ্যই ফল ধুয়ে নিতে হবে।

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status