জনতার ইউএনও একজন কায়ছার হামিদের গল্প
এম এস দোহা
|
![]() জনতার ইউএনও একজন কায়ছার হামিদের গল্প বিসিএস ৩৬ ব্যচের কর্মকর্তা কায়সার হামিদের পিতা প্রবাসী ছিলেন। পরবর্তীতে ব্যবসা করতেন। ৪ভাই, ৩বোন। গ্রামের বাড়ী চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার কালিয়াপাড়া ইউনিয়নের দেবীপুরে। ৩১ অক্টোবর ২০১৪ আনুষ্ঠানিকভাবে লাকসামে তার যোগদান অনুষ্ঠান চলমান। এই মোক্ষম সময়টি বেছে নেয় ভুমিদস্যুরা। তারা সম্পন্ন করে উপমহাদেশের প্রথম মুসলিম নবাব ফয়জুন্নেসা চৌধুরানীর স্মৃতি বিজড়িত জাদুঘরের পুর্বদিকের ঐতিহাসিক প্রবেশ পথটি বন্ধের কর্মযজ্ঞ। অনুষ্ঠান চলাকালে বিদায়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল হাই সিদ্দিকীর কাছে এখবরটি আসে। তৎক্ষণাৎ তিনি এসিল্যান্ড সিফাতুন নাহারকে ঘটনাস্থলে পাঠান। কিন্তুু সরকারের এই প্রত্নতত্ত্ব সম্পদ রক্ষায় এসিল্যান্ড মহোদয় ব্যর্থ। যা লাকসামবাসী ও জাদুঘরের জন্য নেতিবাচক ইতিহাস হয়ে থাকবে। বিদায়ের প্রক্কালে ইউএনও আব্দুল সিদ্দিকী নবাব বাড়ির বিষয়টি বিশেষভাবে দেখার জন্য নবাগত উপজেলা নির্বাহী অফিসার কায়ছার হামিদেকে অনুরোধ করেন। ১ নভেম্বর সকাল ১০টায় অফিসে হাজিরা দিয়েই নির্বাহী অফিসার কায়ছার হামিদ নবাব ফয়জুন্নেছা জমিদার বাড়ি জাদুঘর পরিদর্শন করেন। এর মাধ্যমে লাকসামে তার কর্মকাণ্ডের শুভসূচনা হয়। ![]() জনতার ইউএনও একজন কায়ছার হামিদের গল্প খুব অল্প সময়ে তিনি ওয়াকফ এস্টেটের জায়গা ও জাদুঘরের সমস্যাগুলো তিনি চিহ্নিত করেন। তৎক্ষণাত দিকনির্দেশনামূলক প্রস্তাবনা যথাযথ কতৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করেন। যা ছিলো গঠনমূলক, আইনসম্মত, বাস্তবধর্মী, সুপারিশ ও প্রস্তাবনা। যার মাধ্যমে তিনিও ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবেন। কায়ছার হামিদ নবাব ফয়জুন্নেছা জাদুঘরকে নিয়ে অনেক ইতিবাচক স্বপ্ন দেখেন। যা বাস্তবায়িত হলে পর্যটন, বিনোদনের পাশাপাশি দেশের অন্যতম ঐতিহাসিক স্পট হিসেবে রুপান্তরিত হবে নবাব ফয়জুন্নেছা স্মৃতি বিজড়িত পশ্চিমগাঁও। তার সঠিক মনিটরিংয়ের ফলে নবাব বাড়ীতে চলমান কাজ গুলো দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলে। দর্শনার্থীদের জন্য ওয়াকওয়ে ও ওয়াস ব্লকের কাজ সমাপ্তি পথে।জাদুঘরে ঝুকিপুর্ন ২য় তলাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেন তিনি। ![]() মুদাফফর গন্জের পাশাপুরে ভমিদস্যূদের কবল থেকে শতবর্ষী রাস্তা উদ্ধারে তার বলিষ্ট অবস্থান সে এলাকায় হাজার হাজার মানুষের কাছে প্রশংসায় ভাসছে। যোগদানের ৩ মাসের মাথায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পান পৌর প্রশাসকের। প্রথম দিন থেকেই লাকসাম পৌরসভায় কর্মচঞ্চল আবহ সৃষ্টি হয়। একজন আমলা কিভাবে জনতার বন্ধু হতে পারেন পৌর প্রশাসকের চেয়ারে বসে কায়ছার হামিদ এর দৃষ্টান্ত স্হাপন করেছেন। উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও ভুমি অফিস এই ৩টি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের কর্মকান্ড একাই সাফল্যের সাথে সামাল দিয়ে চলছেন তিনি। লাকসামবাসী জনতার ইউএনও কায়ছার হামিদের কর্মের ইতিবাচক মুল্যায়ন করেছে ভালোবাসা ও স্বকৃীতি প্রদানের মাধ্যমে। কারন মাত্র ৩ মাসের মাথায় ষড়যন্ত্রমুলক বদলির আদেশের লাকসামে শোকাবহ পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সর্বস্তরের জনগণ তার পাশে দাঁড়ায়। একজন সরকারি কর্মকর্তার বদলী ঠেকাতে মিছিল, মিটিং, মানববন্ধনের ঘটনা লাকসামের ইতিহাসে এই প্রথম। তার বদলীর আদেশ প্রত্যাহারের পর উ্যসবমুখর লাকসমে মিষ্টি বিতরন হয়। যা একজন সরকারি কর্মকর্তার জন্য বিরল। দেখতে দেখতে লাকসামের কর্মক্ষেত্রে ৬ মাস। সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত এলাকাবাসীর সেবা ও উন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত রেখে চলছেন কায়ছার হামিদ। ক্লান্তি, অলসতা, বিশ্রাম যেন তার ডায়েরিতে লেখা নেই। ![]() কায়সার হামিদ বাজার মনিটরিং, আইনশৃঙ্খলার উন্নয়ন ও সামজিক অনেক জটিল সমস্যার সমাধানের মাধ্যমে তিনি ঠাঁই করে নিয়েছেন জনগণের হৃদয়ের মনিকোঠায়। জলাবদ্ধতা নিরসনে পুকুর ভরাট বন্ধ, খাল গুলো উদ্ধার ও ডাকাতিয়া নদীর পানি দুষুন রোধে তার ভুমিকা দেশব্যাপী আলোচিত। সম্প্রতি ডাকাতিয়া নদীতে পরিচ্ছতা অভিযান চালিয়ে সোস্যাল মিডিয়াল কল্যাণে ভাইরাল। সততা,দক্ষতা, আন্তরিকতা ও মানবিক দৃষ্টিভংগি নিয়ে কাজ করলে দুনিয়ায় যেমন সুনাম অর্জন করা যায়। তেমনি আখেরাতেও এর প্রতিদান অনিবার্য। নিজের কর্মকান্ডে ইতিবাচক স্বাক্ষরের মাধ্যমে কায়ছার হামিদ এখন জনতার ইউএনও। বিদায়ের আগ পর্যন্ত তিনি তার কর্মের মাধ্যমে লাকসামবাসীর অন্তরে কিংবদন্তি হিসেবে থাকবেন এটাই প্রত্যাশা করি।
|
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |