সিরিয়ার বিদ্রোহীদের দখলে আলেপ্পো শহরের বেশিরভাগ এলাকা
নতুন সময় ডেস্ক
|
সিরিয়ার সরকারবিরোধী যোদ্ধারা আলেপ্পো শহরের উপকণ্ঠে বেশকিছু এলাকা তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙে ইরান ও রাশিয়া সমর্থিত সিরিয়ার সরকারি বাহিনীর বিরুদ্ধে চালানো আক্রমণে দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর আলেপ্পোর অর্ধেকেরও বেশি এলাকা দখল করে নিয়েছে জিহাদি ও তুরস্ক সমর্থিত বিদ্রোহীরা। সিরিয়ার মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ সংস্থার তথ্য অনুসারে, সরকারি বাহিনী প্রত্যাহারের কারণেই আলেপ্পোর বেশিরভাগ এলাকা হাতছাড়া হয়ে গেছে। খবর এএফপির। গত বুধবার (২৭ নভেম্বর) সিরিয়ার বিদ্রোহী জোট এই আক্রমণ শুরু করে। ওই দিনটিতেই প্রতিবেশী দেশ লেবাননে কার্যকর হয় ইসরায়েল ও ইরান সমর্থিত মিলিশিয়া সংগঠন হিজবুল্লাহর মধ্যে যুদ্ধবিরতি। ব্রিটিশ পর্যবেক্ষণ সংস্থার তথ্য অনুসারে, সিরিয়ায় বিদ্রোহী জোটের আক্রমণের প্রথম দিকে সংঘাত ছিল বেশ রক্তক্ষয়ী। এই লড়াইয়ে ২৭৭ জন প্রাণ হারায়, যাদের মধ্যে ছিল ২৮ জন বেসামরিক নাগরিক, যারা রাশিয়ার বিমান হামলায় নিহত হয়। গতকাল শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) নাগাদ জিহাদি ও তাদের মিত্ররা সিরিয়ার উত্তরে ৫০টিরও বেশি ছোট শহর ও গ্রাম দখল করে নেয়। এ ছাড়া পশ্চিমে আলেপ্পোর বিভিন্ন জেলাতেও প্রবেশ করে। যুদ্ধপূর্ব সিরিয়ায় আলেপ্পো শহরটি নির্মাণ শিল্পের জন্য বেশ প্রসিদ্ধ ছিল। ব্রিটেন ভিত্তিক পর্যবেক্ষণ সংস্থার পরিচালক রামি আবদেল রহমান আজ শনিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, বিদ্রোহীরা কোনোরকম প্রতিরোধ ছাড়াই আলেপ্পোর অর্ধেকেও বেশি এলাকা দখল করে নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘সেখানে কোনো লড়াই হয়নি, একটি গুলিও ছোড়া হয়নি, সরকারি বাহিনী সরিয়ে নেওয়ার কারণে।’ সিরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, আলেপ্পোর একটি ছাত্রাবাসে সাবেক আল কায়েদার সিরীয় শাখার মিত্র জোট হায়াত তাহরির আল-শামের গোলাবর্ষণে চার বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। এদিকে, আলেপ্পোতে ইতোমধ্যে আরও সেনা পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে। পর্যবেক্ষণ সংস্থার দেওয়া তথ্যে জানা গেছে, কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর সারাকিবেও মোতায়েন কার হয়েছে সেনা সদস্যদের। এদিকে, গতকাল শুক্রবার সিরিয়া ও রাশিয়ার যুদ্ধবিমানগুলো বিদ্রোহীদের নিয়ন্ত্রিত ইদলিব শহরে ব্যাপক বোমাবর্ষণ করেছে। জিহাদিদের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় মোট ২৩ বার আক্রমণ করা হয় বলে জানা গেছে। রুশ সামরিক বাহিনীও ‘চরমপন্থিদের’ ওপর বোমা হামলার কথা স্বীকার করেছে। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ গতকাল শুক্রবার বলেছেন, আলেপ্পোর ওপর চালানো হামলা সিরিয়ার সার্বভৌমত্বের প্রতি একটি আঘাত। তিনি সেখানে আইশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সিরীয় সরকারের দ্রুত তৎপরতার প্রতি সমর্থন প্রদান করেন। পাশাপাশি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি সিরিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাসাম আল-সাবাঘকে ফোন করে সিরীয় সরকার, দেশবাসী ও সেনাবাহিনীর প্রতি তার দেশের অব্যাহত সমর্থনের কথা তুলে ধরেন। নিউ লাইন্স ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসির বিশ্লেষক নিক হেরাসের মতে, সিরিয়ার সরকার এবং তার মিত্র দেশ রাশিয়া খুব শিগগিরই আলেপ্পোয় পাল্টা হামলার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। |
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |