যে কারণে গ্রেফতার হলেন চিন্ময় কৃষ্ণ দাস
নতুন সময় ডেস্ক
|
ইসকনের বহিষ্কৃত নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারী গ্রেফতার হয়েছেন। চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে গত সোমবার বিকেল রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন-৬ এর কাজী শরিফুল ইসলামের আদালতে তোলা হলে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন বিচারক। গ্রেফতারের পর ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক গণমাধ্যমকে বলেন, একটি অভিযোগের রিক্যুইজিশনের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বিমানবন্দর সূত্র জানায়, গ্রেফতারের সময় চিন্ময় দাস শান্ত ছিলেন এবং ডিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কোনো ধরনের বিরোধ করেননি। গত ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশ করে বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস এই মঞ্চের মুখপাত্র। সমাবেশের পর গত ৩১ অক্টোবর চিন্ময়ের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগ এনে চট্টগ্রামে একটি রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করেন বিএনপি নেতা ফিরোজ খান। মামলাকারীকে বিএনপি পরে বহিষ্কার করে। কোতোয়ালি থানায় করা মামলায় চিম্ময় দাসসহ ১৯ জনকে আসামি করা হয়। মামলার আসামিরা হলেন- ইসকনের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও পুণ্ডরীক ধাম মন্দিরের অধ্যক্ষ চন্দন কুমার ধর প্রকাশ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী (৩৮), চট্টগ্রামের হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক অজয় দত্ত (৩৪), নগরীর প্রবর্তক ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলা রাজ দাশ ব্রহ্মচারী (৪৮), গোপাল দাশ টিপু (৩৮), ডা. কথক দাশ (৪০), প্রকৌশলী অমিত ধর (৩৮), রনি দাশ (৩৮), রাজীব দাশ (৩২), কৃষ্ণ কুমার দত্ত (৫২), জিকু চৌধুরী (৪০), নিউটন দে ববি (৩৮), তুষার চক্রবর্তী রাজীব (২৮), মিথুন দে (৩৫), রুপন ধর (৩৫), রিমন দত্ত (২৮), সুকান্ত দাশ (২৮), বিশ্বজিৎ গুপ্ত (৪২), রাজেশ চৌধুরী (২৮) এবং হৃদয় দাস (২৫)। মামলা অভিযোগে বলা হয়, গত ৫ আগস্ট বাংলাদেশে গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত হওয়ার পর নগরের নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্টে স্তম্ভের ওপর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা একটি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে; যা এখনো সেখানে রয়েছে। ২৫ অক্টোবর বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের উদ্যোগে লালদীঘির মাঠে একটি মহাসমাবেশ হয়। চট্টগ্রাম বিভাগের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজারো মানুষ ওই সমাবেশে যোগ দেন। ওই দিন চন্দন কুমার ধরসহ ৯ জন আসামির ইন্ধনে বাকি আসামিরা নিউমার্কেট মোড়ের জিরো পয়েন্ট স্তম্ভ ও আশপাশে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ওপর ধর্মীয় গোষ্ঠী ইসকনের গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা উত্তোলন করে সেখানে স্থাপন করে দেয়। এ নিয়ে সাধারণ নাগরিকদের ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। এই মামলার পর ইসকন প্রবর্তক ধাম অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও বার্তায় রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা প্রসঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। এতে তিনি মামলাটিকে সনাতনীদের আট দফা দাবি আদায়ের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন কর্মসূচিকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা হিসেবে আখ্যা দেন। ওই বিবৃতিতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, ‘৫ আগস্টের পর সনাতনীদের ওপর চালানো হামলা-নির্যাতনের প্রতিবাদে আমাদের আন্দোলন। এই আন্দোলন বর্তমান সরকার কিংবা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নয়।’ সম্প্রতি বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ ও বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট নামে দুটি সংগঠন ‘বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের’ ব্যানারে কর্মসূচি পালন শুরু করে। নতুন এই জোটের মুখপাত্র করা হয় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে। কয়েক দিন এই জোট আট দফা দাবিতে রংপুরে সমাবেশ করেছে। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ইসকনের (আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ) বাংলাদেশ শাখাতেও ছিলেন। তবে সম্প্রতি ইসকন তাকে বহিষ্কার করে।
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |