ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
শনিবার ৫ অক্টোবর ২০২৪ ২০ আশ্বিন ১৪৩১
ইয়াবা দিয়ে এবার পুলিশকেই ফাঁসিয়ে দিলো যুবক
নতুন সময় প্রতিনিধি
প্রকাশ: Wednesday, 14 October, 2020, 11:14 PM

ইয়াবা দিয়ে এবার পুলিশকেই ফাঁসিয়ে দিলো যুবক

ইয়াবা দিয়ে এবার পুলিশকেই ফাঁসিয়ে দিলো যুবক

চট্টগ্রামের লালখানবাজার এলাকার মাছ ব্যবসায়ী যুবক বাবলা দাশ ঋণভারে জর্জরিত। মাছের আড়তদারের কাছেও ঋণ। ঋণের টাকা ঠিকমতো দিতে না পারলে নতুন করে মাছ পাওয়া যাবে না আড়তদারের কাছ থেকে। এই কারণেই পুলিশের টাকা ছিনতাই ও ইয়াবা ফাঁসানোর গল্প সাজায় বাবলা দাশ। তার সেই গল্পে ফেঁসে যেতে বসে কোতোয়ালি থানা পুলিশ। পরে তদন্ত শুরু হলে দেখা যায়, বাবলা দাশ অসত্য বলেছেন, ভুয়া গল্প সাজিয়ে পুলিশকে ফাঁসিয়ে নিজেই আড়তদারের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি পুলিশের ঘাড়ে চাপাতে চেয়েছিলেন।

তদন্ত পর্যায়ে বাবলা দাশের সাজানো গল্পটি নিজের ফেসবুকে লিখেছেন কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহসিন। গত ১১ অক্টোবর তাঁর গল্পটি এ রকম


পুলিশ যেভাবে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসায়! মাছ বেচে ফিসারিঘাট যাচ্ছিল বাবলা। পথেই তার গতিরোধ করে পুলিশ। তল্লাশি চালায় এবং একপর্যায়ে গাড়িতে তোলে। গাড়িতে তুলে কিছুক্ষণ ঘোরানোর পর নির্জন এক জায়গায় তাকে নামায়। এরপর তার পকেটে ইয়াবা গুঁজে দিয়ে বলে ইয়াবা ব্যবসায়ী! ইয়াবাসহ তার কিছু ছবিও তুলে রাখে সেই পুলিশ সদস্যরা! এরপর বাবলার কাছে থাকা এক লাখ ১৩ হাজার টাকা তারা নিয়ে নেন! এবং তাকে হুমকি দেন, যদি এই টাকার বিষয়ে কাউকে বলে, তাহলে তাকে এসব ছবি দিয়ে মামলা দিয়ে দেবে! টাকা হারিয়ে বাসায় চলে আসে বাবলা।

পুলিশ যেভাবে ফাঁসে! বাবলার ঘটনায় থানায় অভিযোগ জানায় তার আড়তদার। কারণ, আত্মসাতকৃত সেই টাকাগুলো আড়তদারের পাওনা পরিশোধের জন্যই যাচ্ছিল। অভিযোগ গুরুতর। পাশাপাশি পুলিশবিরোধী সেন্টিমেন্টের পিক আওয়ার চলছে। তাই সাথে সাথেই তদন্ত শুরু করি।

যদিও শতভাগ বিশ্বাস ছিল, টিম কোতোয়ালি এটা কখনোই করবে না। কিন্তু বাবলার আত্মবিশ্বাস ছিল আমার বিশ্বাসের চেয়েও বেশি। তাই কিছুটা কনফিউজড ছিলাম। সিনিয়র স্যারদের লাগাতার জিজ্ঞাসাবাদে বাবলা তার কথায় অনড় থাকে। তাকে সিসিটিভি ফুটেজের কথা বললে সে বলে, স্যার, সেটা দেখলেই প্রমাণ পাবেন আমার অভিযোগের!

উপায়ন্ত না দেখে তাৎক্ষণিকভাবেই তার সামনেই আনা হয় সিসিটিভি ফুটেজ। প্রতি মোড়ের প্রতিটাক্ষণ যাচাই করা হয়। কিন্তু অভিযোগ অনুযায়ী তাকে যেখান থেকে পুলিশ গাড়িতে তুলে সেখানে তাকে দেখা গেল না! যেখানে যেখানে তাকে ঘোরানোর অভিযোগ করেছিল সেখানে আমাদের গাড়ি যায়নি! আবার যেখানে তাকে নামিয়ে দেওয়ার কথা বলল, সেখানেও নেই তার অস্তিত্ব!

এসব দেখার পরই শুরু হয় তার অসংলগ্ন কথাবার্তা। এরপর আবারো তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। একপর্যায়ে সে স্বীকার করে তার সব অভিযোগই মিথ্যা! মূলত আইপিএল-এ বাজি ধরে সে সব টাকা খুঁইয়েছে। টাকা না দিলে মাছ পাবে না- তাই পুলিশ টাকা নিয়ে নিয়েছে বলে উদ্ধার পেতে চেয়েছিল বাবলা। তার দাবি, এই অভিযোগ সবাই বিশ্বাস করবে। তাই এমন অভিযোগই সে করেছে।

এই সত্য উদ্‌ঘাটনের পর যখন ঘুমাতে যাব, তখন ভাবছি, যদি এই সত্য বের না হতো তাহলে কি হতো? ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে ব্যবসায়ীর টাকা আত্মসাৎ সংবাদের শিরোনাম হতাম আমরা। আমার অফিসার ক্লোজড হতেন। আমিও


আল্লাহ, সহায় ছিলেন। তাই বেঁচে গেলাম। চোরের দশদিনের পর আজ আসলে আমাদের গেরস্থেরই দিন ছিল। ফাঁসাতে গিয়ে নিজেই ফেঁসে গেল বাবলা।

সম্পাদনায়: এম আলমগীর

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status