ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর ২০২৫ ১৯ কার্তিক ১৪৩২
হার্ট ব্লকের ঝুঁকিতে যারা, লক্ষণ ও প্রতিরোধ
নতুন সময় ডেস্ক
প্রকাশ: Saturday, 1 November, 2025, 6:12 PM

হার্ট ব্লকের ঝুঁকিতে যারা, লক্ষণ ও প্রতিরোধ

হার্ট ব্লকের ঝুঁকিতে যারা, লক্ষণ ও প্রতিরোধ

আজকাল অনেকেই হার্টের নানা সমস্যায় ভুগছেন। এর মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা হলো হার্ট ব্লক। কেউ কেউ সময়মতো বুঝতে পারেন না, ফলে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। অথচ একটু সচেতন থাকলে আগেভাগেই বোঝা সম্ভব এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ থাকা যায়।

চলুন সহজভাবে জেনে নিই হার্ট ব্লক কী, কী লক্ষণ দেখা যায় এবং কারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন।

হার্ট ব্লক আসলে কী?

হার্ট ব্লক হলো হৃৎপিণ্ডের ভেতরে থাকা ইলেকট্রিক্যাল সংকেতের সমস্যা। আমাদের হৃৎপিণ্ড নিয়মিতভাবে সংকোচন ও প্রসারণ করে, আর এই কাজটা করে ইলেকট্রিক্যাল সিগন্যাল। এই সংকেত যদি ঠিকভাবে না পৌঁছায় বা বন্ধ হয়ে যায়, তখনই হয় হার্ট ব্লক। এতে হার্টের ধুকপুকানি অনিয়মিত বা খুব ধীর হয়ে যেতে পারে। এর ফলে শরীরে ঠিকভাবে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়, যা নানা জটিলতা তৈরি করতে পারে।

হার্ট ব্লকের ধরন

হার্ট ব্লকের তিনটি স্তর বা ধরণ রয়েছে:

প্রথম ডিগ্রি (১ম ধাপ)

- সবচেয়ে হালকা ধরনের ব্লক।

- সংকেত পৌঁছায় ঠিকই; কিন্তু একটু দেরি করে।

- সাধারণত কোনো উপসর্গ দেখা যায় না।

দ্বিতীয় ডিগ্রি (২য় ধাপ)

দুটি ভাগে ভাগ হয়:

- টাইপ ১: সংকেত মাঝে মাঝে পৌঁছায়, মাঝে মাঝে হারিয়ে যায়।

- টাইপ ২: অনেক সংকেতই পৌঁছায় না, ফলে হৃৎস্পন্দন খুব অনিয়মিত হয়ে পড়ে। এটি বেশ গুরুতর এবং পেসমেকার লাগতে পারে।

তৃতীয় ডিগ্রি (৩য় ধাপ)

- সবচেয়ে গুরুতর ধরনের ব্লক।

- সংকেত একদমই নিচের অংশে পৌঁছায় না।

- হার্টের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয় এবং পেসমেকার ছাড়া চলে না।

কোন কোন লক্ষণ দেখলে সতর্ক হবেন?

হার্ট ব্লকের উপসর্গ নির্ভর করে এটি কতটা গুরুতর তার ওপর। কিছু সাধারণ লক্ষণ:

- বুক ধড়ফড় করা বা ব্যথা

- সবসময় ক্লান্ত বোধ করা

- শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া

- মাথা ঘোরা বা হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যাওয়া

- বমি বমি ভাব

- শ্বাস দ্রুত হয়ে যাওয়া

- হৃৎস্পন্দন অনিয়মিত হওয়া

প্রথম ডিগ্রির ক্ষেত্রে লক্ষণ নাও থাকতে পারে, তাই অনেক সময় এটি রুটিন চেকআপে ধরা পড়ে। তবে তৃতীয় ডিগ্রির ব্লকে উপসর্গগুলো তীব্র হয় এবং তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা দরকার পড়ে।

কারা বেশি ঝুঁকিতে?

নিচের যে কোনো অবস্থায় থাকলে আপনি হার্ট ব্লকের ঝুঁকিতে থাকতে পারেন:

- হার্ট অ্যাটাক বা করোনারি আর্টারি ডিজিজ (CAD) আছে

- জন্ম থেকেই হার্টে সমস্যা

- হৃৎপিণ্ডের ভাল্ভ বা পেশির রোগ

- রিউম্যাটিক হার্ট ডিজিজ বা সারকয়েডোসিস

- অতিরিক্ত ভেগাস নার্ভ অ্যাকটিভিটি

- কিছু ওষুধ, যেমন বিটা ব্লকার, ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার

- ঘুমের সময় শ্বাস বন্ধ হয়ে যাওয়া (স্লিপ অ্যাপনিয়া)

- থাইরয়েড সমস্যা বা কিছু সংক্রমণ যেমন লাইম রোগ

প্রতিরোধের উপায় কী?

সবক্ষেত্রে হয়তো প্রতিরোধ সম্ভব নয়, তবে কিছু অভ্যাস বদলালে ঝুঁকি কমানো যায়:

- হার্ট সুস্থ রাখতে স্বাস্থ্যকর খাবার ও লাইফস্টাইল মেনে চলা

- ধূমপান ও অ্যালকোহল থেকে দূরে থাকা

- নিয়মিত ঘুম ও মানসিক চাপ কমানো

- উচ্চ রক্তচাপ ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা

- যেসব ওষুধ হার্টের সংকেতে প্রভাব ফেলে, সেগুলো চিকিৎসকের পরামর্শে পরিবর্তন করা

বুকে ব্যথা, শ্বাসকষ্ট বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার পেছনে অনেক সময় হার্ট ব্লক দায়ী হতে পারে। তাই এমন লক্ষণ দেখলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ইসিজি কিংবা অন্যান্য টেস্টে এটি ধরা যায়।

ভয়ের কিছু নেই—আজকাল চিকিৎসা অনেক উন্নত হয়েছে। ওষুধ বা পেসমেকারের মাধ্যমে হৃদয়ের স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনা সম্ভব।

সুস্থ থাকতে হলে আগে জানতে হবে, তারপরই প্রতিরোধ সম্ভব। নিজের যত্ন নিন, সময়মতো চেকআপ করুন।



পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status