ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
সোমবার ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ১১ কার্তিক ১৪৩২
মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে দুর্ঘটনার পর নিরাপত্তা নিয়ে যেসব উদ্বেগ তৈরি হয়েছে
নতুন সময় প্রতিবেদক
প্রকাশ: Sunday, 26 October, 2025, 3:58 PM

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে দুর্ঘটনার পর নিরাপত্তা নিয়ে যেসব উদ্বেগ তৈরি হয়েছে

মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে দুর্ঘটনার পর নিরাপত্তা নিয়ে যেসব উদ্বেগ তৈরি হয়েছে

রাজধানীতে মেট্রোরেলের বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়ে একজন পথচারীর মৃত্যু হয়েছে। আজ (২৬ অক্টোবর) এই দুর্ঘটনার পর মেট্রো চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ট্রেন চলার সময় কম্পন কমাতে এই বিয়ারিং প্যাড ব্যবহার করা হয়।

এই ঘটনাটি প্রায় ১৩ মাস আগের একটি দুর্ঘটনার কথা মনে করিয়ে দেয়। ২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর একই ধরনের ঘটনায় আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রো চলাচল ১১ ঘণ্টা বন্ধ ছিল।তখন থেকেই মেট্রোরেল ব্যবস্থার নকশা এবং রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে গুরুতর নিরাপত্তা উদ্বেগ দেখা দিয়েছিল।

বিশেষজ্ঞদের মতামত

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সম্ভাব্য নকশাগত ত্রুটির কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটছে। তারা জানান, মেট্রোরেল লাইনের বাঁকে সবচেয়ে বেশি চাপ পড়ে এবং সেখানেই প্যাডটি খসে পড়েছে।

বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান বলেন, "যেখানে ট্রেন বাঁক নেয়, সেখানে চাপ বেশি থাকে। কিন্তু নকশাতেই হয়তো এই অতিরিক্ত চাপের বিষয়টি বিবেচনা করা হয়নি।" তিনি আরও বলেন, "বিয়ারিং ধরে রাখার জন্য রাবারের প্যাডটি ভালোভাবে আটকানো ছিল না। ফলে এটি অতিরিক্ত চাপ সহ্য করতে পারেনি।" ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে তিনি আরও চাপ সহনশীল ও উন্নত প্রযুক্তির 'পড বিয়ারিং' ব্যবহারের পরামর্শ দেন।

অধ্যাপক হাদিউজ্জামান বিয়ারিং প্যাডের কাজ ব্যাখ্যা করে বলেন, "যখন ট্রেন চলে যায়, তখন এটি কিছুটা সংকুচিত হয় এবং ট্রেন চলে গেলে আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে। যদি প্যাডটি তার কার্যকারিতা হারায় বা পড়ে যায়, তাহলে কাঠামোর মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হয়।" তিনি আরও জানান, এই প্যাডগুলো ভূমিকম্পের সময়ও কাঠামোকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে।

বিয়ারিং প্যাডের কাজ কী?

বিয়ারিং প্যাডগুলো পথের বাঁকানো অংশে বসানো থাকে, যেখানে ট্রেন যাওয়ার সময় কাঠামোর ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হয়। এই প্যাডগুলো কেবল ট্রেনের ওজনই বহন করে না, বরং ট্রেন চলার সময় সৃষ্ট কম্পনও শোষণ করে।

যখন একটি বাঁকে বিয়ারিং প্যাড অকেজো হয়ে পড়ে, তখন পিলারের ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয়। এতে কাঠামোগত ক্ষতি বা এমনকি ধসের ঝুঁকিও বেড়ে যায়। এই প্যাডগুলো ভাইব্রেশন, শক এবং ভূমিকম্পের মতো পরিস্থিতি থেকেও সুরক্ষা দেয়। তাই এগুলো ঠিকমতো কাজ না করলে ট্রেন এবং নিচের রাস্তায় থাকা মানুষজন মারাত্মক বিপদের মধ্যে পড়েন।

ব্যবস্থাগত যেসব সমস্যা আগে চিহ্নিত হয়েছিল

উড়ালপথের যেসব জায়গায় বেশি চাপ পড়ে, সেখানকার জন্য নকশাটি যথেষ্ট মজবুত ছিল না। বিশেষজ্ঞরা রাবারের বদলে আরও টেকসই ধাতব পদার্থ ব্যবহারের সুপারিশ করেছিলেন।২০২৪ সাল পর্যন্ত প্রায় দুই বছর ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) বাধ্যতামূলক নিরাপত্তা সনদ ছাড়াই মেট্রো চলছিল, যা ছিল বেআইনি।মেট্রো চালু হওয়ার পর থেকে ডিটিসিএ-এর কাছে কোনো নিরাপত্তা প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়নি।মেট্রোরেল বা যাত্রীদের জন্য কোনো বিমা ছিল না। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনা ঘটলে ক্ষতিপূরণেরও কোনো ব্যবস্থা ছিল না।তদন্তের জন্য গঠিত সাত সদস্যের একটি কমিটি চাপ ও নড়াচড়া পর্যবেক্ষণের জন্য ক্যামেরা বসানোর সুপারিশ করলেও নকশাগত ত্রুটির বিষয়ে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছায়নি।তবে কর্তৃপক্ষ নকশাগত ত্রুটির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছিল, বিভিন্ন কারণে এই ঘটনা ঘটতে পারে।ডিএমটিসিএল একটি তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে নিরাপত্তা সনদ পাওয়ার চেষ্টা করছিল এবং জীবন বীমা কর্পোরেশনের সাথে বিমা চালুর বিষয়ে আলোচনা চালাচ্ছিল।

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status