ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
শনিবার ১৭ মে ২০২৫ ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
‘শামীমকে জুতা দিয়ে পিটাইতে চাইছিলাম’
নতুন সময় প্রতিবেদক
প্রকাশ: Friday, 9 May, 2025, 1:24 AM

‘শামীমকে জুতা দিয়ে পিটাইতে চাইছিলাম’

‘শামীমকে জুতা দিয়ে পিটাইতে চাইছিলাম’

দেশের শোবিজ অঙ্গনে হঠাৎ করেই শুরু হয়েছে আলোচনার ঝড়। ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা শামীম হাসান সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন তার সহকর্মী অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা। তিনি অভিযোগ করেছেন, শুটিং সেটে শামীম তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতেন এবং শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করারও চেষ্টা করেন।

আরও ভয়ানক অভিযোগ করে প্রিয়াঙ্কা বলেন, শামীম মাদক সেবন করে তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করতেন এবং প্রকাশ্যেই ধর্ষণের হুমকি দিয়েছেন।

এই ঘটনার পর অভিনেতা শামীম হাসান সরকারের বিরুদ্ধে শুটিং সেটে অনভিপ্রেত আচরণের অভিযোগ তুলে ধরেছেন অভিনেত্রী, বাচিক শিল্পী ও উপস্থাপক সিফাত বন্যাও।  যেখানে তিনি শামীম হাসান সরকারকে ‘ভাঁড়’ বলে সম্বোধন করেছেন। একইসঙ্গে অভিনেত্রী দাবি করেছেন, শামীমের ব্যবহারের কারণে তাকে জুতাপেটা করতে চেয়েছিলেন তিনি। 

ফেসবুকের এক স্ট্যাটাসে সিফাত লিখেছেন, ‘শামীম হাসান সরকার নামে একজন ভাঁড় আছে। সে গতকাল একজন অভিনেত্রীকে প্রকাশ্যে ধর্ষণের হুমকি দিয়েছে। সেই সেটের ডিরেক্টর থেকে শুরু করে সবাই নাকি চুপ ছিল! চিন্তা করেন এদের অবস্থা! এদের মানসিকতা!’ 


অভিনেত্রীর সঙ্গে ঘটে যাওয়ার ঘটনার স্মৃতি টেনে তিনি লিখেছেন, ‘গত দুই বছর আগে রাজধানীর উত্তরায় একটি শুটিং হাউজে বুদ্ধিজীবী দিবসের দিন ওর (শামীম) সাথে আমার কাজের পড়ে। আমি এডিকে (এসেস্টেন্ট ডিরেক্টর) বলি আমাকে ২ টার মধ্যে ছেড়ে দিতে হবে। কারণ চারটার সময় গাজীপুর জেলা প্রশাসকের অনুষ্ঠানে আমাকে আবৃত্তি করতে হবে।’

পরের ঘটনা উল্লেখ করে সিফাত লেখেন, ‘সেদিন আমার খুব জ্বরও ছিল। মেকআপ রুমে যাওয়ার পর ওর সাথে (শামীম) এডি আমাকে পরিচয় করিয়ে দেয়। ভাঁড়ের সাথে ওই দিনই আমার প্রথম কাজ ছিল। পরিচয়ের পরে হাই হ্যালো হলো এবং এডি ওকে বলেওছিল আমার খুব জ্বর। তাই এসি টা কমিয়ে দিলাম। মেকআপ রুমে আমি,ভাঁড়, আর মেকআপ আর্টিস্ট। আমি বসে বসে স্ক্রিপ্ট পড়ছি। আর ভাঁড় জোরে জোরে ইংরেজি গান,হিন্দি গান বাজাচ্ছে। একটু পর এসিটাও বাড়িয়ে দেয়।’ 

‘এডি যে ওকে বলে গেল আমার জ্বর তাতে ওর কোনো মাথাব্যথা নেয়। আমার মেজাজ খারাপ  হচ্ছিল। তবুও সিনিয়র যেহেতু আস্তে করে উঠে গিয়ে বললাম ভাইয়া আমার তো খুব জ্বর এসি টা কমালে খুব ভালো হতো। তাছাড়া গানের সাউন্ড নিতে পারছি না আর আজ বুদ্ধিজীবী দিবস চলুন বাংলা গান শুনি। এ কথা বলতেই ও মেকআপ আর্টিস্টের সামনেই আমাকে বলে আপনার জ্বর আমি কি করবো! আপনি বাইরে যান। আর আপনি আমাকে ইন্টেলেকচুয়ালিটি শেখাচ্ছেন! মানে একদম চেঁচিয়ে। মনে হচ্ছিল সে পারলে গায়ে হাত তুলবে।’

সিফাত বলেন, ‘একজন নারী সহকর্মীর সাথে তার এমন আচরণ আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। স্বাভাবিক বিষয় শুরুতে আমি হতভম্ব হয়ে গেছি। কিন্তু পরে বলেছি মেকআপ রুম আপনার একার নয়। মেকআপ রুম আমাদের সবার। এক কথায় দুই কথায় দুজনেই কথা কাটাকাটি করি। ডিরেক্টর এবং এডি এসে দুইজনকে দুই রুমে নিয়ে যায়। পরে ওকে ঠান্ডা করে, আমাকেও। এরপর ও আমার সাথে কাজ করবে বলে কিন্তু আমি বলেছিলাম এক কোটি টাকা দিলেও আমি ওর সাথে কাজ করবো না। সেট ছেড়ে চলে এসেছিলাম।’ 

এই ঘটনায় অপমানিত বোধ করছিলেন সিফাত। তার কথায়, ‘আমি তো ডিরেক্টর আর এডির জন্য ওখানে আর কথা বলতে পারলাম না। সেও পারেনি। সবকিছু মিলে সেটে অনেক কিছু ঘটলেও আমাদের আগে কাজের কথা চিন্তা করতে হয় কারণ টাকার কাজ। অনেক ইনভেস্টমেন্টের কাজ। সবকিছু মিলিয়ে অনেক কিছু সহ্য করে চুপ থাকতে হয়। আমি চলে আসি। তারপর জেলা প্রশাসকের অনুষ্ঠানে আবৃত্তি করি। আমি একজন শিল্পী। আমাকে মেকআপ আর্টিস্টের সামনে রুম থেকে বের হয়ে যান বলাটা মাথা থেকে সরাতেই পারছিলাম না। চূড়ান্ত অপমানই করেছিল একজন নারী সহকর্মী হিসেবে।’

শুটিংসেট থেকে বের হয়ে শামীমকে ফোনকল দিয়ে জুতাপেটা করতে চেয়েছিলেন, এমনটা উল্লেখ করে অভিনেত্রী বলেন- ‘শুটিংয়ের পরের দিন ওর (শামীম) জন্মদিন ছিল। মোবাইল খোলার পরেই দুপুরে প্রথম কলটা আমার যায়। আমি ওকে বলি গতকাল তো তোকে আর কিছু বলতে পারিনি। তোকে আমি জুতা দিয়ে পিটাইতে চাই, ইত্যাদি ইত্যাদি। ২ মিনিট কথা বলার পরে ও কেটে দেয়। এটা নিয়ে ডিরেক্টরকে আবার বিচারও দেয়, হা হা হা।’

তিনি যোগ করেন, ‘অনেকেই বলতে পারে আমি পরে এটা ঠিক করিনি। তবে একজন নারী সহকর্মী হিসেবে আমার সাথে সে যে ধরনের রক্তচক্ষু নিয়ে কথা বলেছে সেটা মেনে নেওয়া যায় না। কোথাও এদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে লাভও নেই। আর আমি আমার অপমান মানতে পারছিলাম না। তাই আমি এটা করেছিলাম। আমার মনে হয়েছিল ডিরেক্টর এডি না থাকলে ও আমার গায়ে হাত তুলতে পারে। আমি ট্রমায় পড়ে গিয়েছিলাম।’

সিফাত মনে করেন, সেদিন তিনি সঠিক কাজটাই করেছিলেন। তার ভাষায়, ‘ডিরেক্টর ভাইয়া এবং এসেস্টেন্ট ডিরেক্টর দুইজনেই খুব ভালো। তারা আমাকে সরি বলেছিল। ঘটনার সময় আমাকে এবং ওকে দুজনকেই থামিয়েছে। তাই সংগত কারণেই আমি তাদের নাম বলছি না। তবে ওর জন্মদিনে জুতা দিয়ে পিটাইতে চেয়ে সেরা উপহারটা দিয়েছিলাম। শুটিং সেটেই আমি বলেছিলাম আপনি তো একজন ইউটিউবার। মোবাইলে ওকে ভাঁড় বলেছিলাম। তারপর আমার শান্তি হয়েছিল।’

সর্বশেষ অভিনেত্রী বলেন, ‘এখন এই গাঁজাখোর,অভদ্র, ধর্ষক মন মানসিকতার লোককে যেন সকল ডিরেক্টর এবং অভিনয় শিল্পী সংঘ বয়কট করে। কোনো নারী কো-আর্টিষ্ট যেন ওর সাথে কাজ না করে। এটাই আমার প্রত্যাশা থাকবে। শামীম হাসান সরকার কে বয়কট করুন।’

এদিকে সিফাতের এই পোস্টে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কেউ কেউ অভিনেত্রীর পক্ষ নিয়েছেন। আবার কেউ তার সমালোচনাও করেছেন। 

অভিনেত্রী প্রসুণ আজাদই যেমন তার পোস্ট শেয়ার করে লিখেছেন, ‘সুযোগ পেলে কেউ আঁতলামো কম করে না। আগে শামীমের অবস্থানে পৌঁছাতে চেষ্টা করেন পরে এসির বাতাস খায়েন। আমরা সিনিয়ররা মেকআপ রুমে থাকলে ১০ বার চিন্তা করতাম যাবো কি যাবো না। চিপায় চাপায় ধোয়া ফুকা এবং তাদের দেখলে চেষ্টা করতাম যতটুকু সভ্য থাকা যায়। জ্বর ঠান্ডা থাকলে বাসায় থাকা ভালো। মিডিয়াতে নায়িকা সেজে নায়িকা হওয়া যায় না। এ লেখা আমি পড়িও নাই। পড়ার ইচ্ছাও নাই। শামীম একজন সৎ মানুষ। আমি অবশ্যই তার পক্ষে। শামীমকে নিয়ে এমন পেঁচ খেলা আরও আগে থেকেই শুরু হয়েছিল। দু-দিন পরপরই হবে। বসে আলোচনা করে মিটমাট করেন। এদেশে ভালো অভিনয় জানা শিল্পী কম। বেশির ভাগ ওয়ানাবি।’

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status