সংসারে সুখ অটুট রাখতে স্বামী-স্ত্রীর একসঙ্গে সময় কাটানো উচিত। কিন্তু সাম্প্রতিককালে সময় বড়ই দুর্মূল্য। তাই এটা নিয়েই আজকাল সব দম্পতির মধ্যে প্রায়ই অশান্তি হয়। তাঁদের মনে প্রশ্ন থাকে যে, কী ভাবে সব ঠিক হবে? সম্প্রতি ৪ দম্পতিকে এই প্রশ্ন করেছিলাম আমরা, তাঁরা উত্তর দিলেন। প্রবন্ধে রইল বিস্তারিত।
সম্পর্ক ভালো রাখতে দুই সঙ্গীরই একে অপরকে যথেষ্ট সময় দেওয়া প্রয়োজন। নাহলে যে দাম্পত্যে নানা সমস্যা তৈরি হতেই পারে, তা অস্বীকার করা যায় না। তবে সাম্প্রতিককালে সময়টাই দুর্মূল্য। ব্যস্ত জীবন থেকে সামান্য কয়েক ঘণ্টা আলাদা করে সরিয়ে রাখতেও পারেন না অনেকে। আর তখনই দাম্পত্যে মাথাচাড়া দেয় অশান্তি। কখনও কখনও প্রতারণার শিকারও হন কেউ। কিন্তু অনেকেই প্রশ্ন করেন, সঙ্গীর জন্য কি সামান্য সময় বের করা এতটাই কঠিন!
এই প্রশ্নেরই উত্তর খুঁজলাম আমরা। দাম্পত্যে সুখ টিকিয়ে রাখতে একে অপরকে ঠিক কতটা সময় দেওয়া প্রয়োজন, সেই প্রশ্নের উত্তর দিলেন চার অভিজ্ঞ দম্পতি।
১৫ বছর একসঙ্গে রয়েছি। আমাদের মধ্য়ে মাঝেমাঝে ঝগড়া হয়েছে ঠিকই। কিন্তু আবার নিজেরাই মিটিয়ে নিয়েছি। আমরা দুজনেই চাকরি করি। অফিসে অনেক বড় দায়িত্বও সামলাচ্ছি। কিন্তু আমরা সব সময়ে এটাই মনে করি যে, অফিসের দায়িত্বও যতটা গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের পরিবারও। তাই একে অপরের জন্য সময় বের করতে খুব সমস্যা হয় না। আমরা ভালোই আছি। প্রভাত, ৪৫
আমি ব্যবসার কাজে ব্যস্ত থাকি। আমার স্বামী অফিসে সন্ধ্যা পর্যন্ত ব্যস্ত থাকেন। সময় বের করতে পারেন না বলেই চলে। তবু সন্ধ্যায় মুখোমুখি বসে আধ ঘণ্টা আড্ডা না দিলে আমাদের দিনটা সম্পূর্ণ হয় না। এই আধ ঘণ্টায় আমরা আমাদের মানসিক চাপ থেকে মুক্ত হই। তাই যাঁরা বলেন, চাকরি সামলে পরিবারকে সময় দেওয়া যায় না, তাঁরা হয়তো সত্যিই সময় দিতে চান না।
আমাদের ১২ বছরের দাম্পত্য। আমার স্ত্রী এবং আমি দুজনেই চাকরি করি। এদিকে বাড়ি ফিরে মেয়েকে পড়ানো, সংসারের কাজ করা এবং নিজের জন্য সামান্য সময় আলাদা করে সরিয়ে রাখা সত্যিই মুশকিল। তবু আমরা সেটা করতে পারি। কারণ আমাদের একে অপরের উপরে সেই বিশ্বাসটুকু রয়েছে। সময় দেওয়া নিয়ে আমাদের মধ্য়ে কখনও কখনও ঝগড়া হয়েছে ঠিকই, কিন্তু আমরা সেটাকে আর বাড়তে দিইনি। সেখানেই ইতি টেনেছি। তাই দিনে ৩০ মিনিট সময়ে আমরা দুজনে কাটাই। তখন মেয়েকেও দূরে রাখি। এখন আমরা খুবই ভালো আছি।
আমরা দুজনেই চাকরি করতাম। তারপর দুজন চাকরি ছেড়ে নিজেদের ব্যবসা শুরু করার পরিকল্পনা করি। সেই সময়ে অনেক ঝড়ঝাপটা সামলেছি। কাজের চাপে একে অপরকে সময় দিতে পারিনি। প্রথম প্রথম সেই নিয়ে সমস্যা হলেও পরে নিজেদের বুঝিয়েছি। তবে একে অপরকে ছেড়ে যাইনি। ধীরে ধীরে সমস্যা মিটে গিয়েছে। আমরা আজ খুব ভালো আছি।
আমরা যে একসঙ্গে দুজনে সারা দিন ব্যবসার জন্য পরিশ্রম করি, এটাই আমাদের একান্ত আপন সময়। আমাদের আর কিছু চাই না।