ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক: জীবন ও রাজনীতি
সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী
প্রকাশ: Monday, 4 November, 2024, 8:45 PM

শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক: জীবন ও রাজনীতি

শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক: জীবন ও রাজনীতি

পিস ফোরামের পক্ষ উপমহাদেশের অন্যতম প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ, বাঙালিদের নন্দিত নেতা, লাঙ্গল যার জমি তার, গরীব কৃষকদের জন্য ঋণ সালিশী বোর্ড গঠন, ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাবের প্রবক্তা মহান নেতা শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হকের ১৫১তম জন্মবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি, শোকাহত স্বজন-গুণগ্রাহীদের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।


বাংলার ধূলোমাটি ছিল যার গৌরব, বাংলার মানুষের জন্যে অসীম ভালবাসা ছিল যার প্রাণে, বাংলার মানুষের সেবার জন্যে আজীবন সংগ্রাম ছিল যার জীবনের লক্ষ্য, নীতির প্রশ্নে যিনি ছিলেন আপোষহীন, তিনি হচ্ছেন বাংলার বাঘ আমাদের শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক।

তিনি ১৮৭৩ সালে ২৬ অক্টোবর বরিশাল বিভাগের ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর উপজেলার সাতুরিয়া মিঞাবাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার আদি পৈতৃক নিবাস বরিশাল জেলার বানারীপাড়া উপজেলার চাখার গ্রামে। তিনি কাজী মুহম্মদ ওয়াজেদ এবং সাইদুন্নেসা খাতুনের একমাত্র পুত্র ছিলেন।

১৮৯৭ সালে কলকাতার রিপন কলেজ থেকে বি.এল. পাস করে স্যার আশুতোষ মুখার্জির শিক্ষানবিশ হিসেবে কলকাতা হাইকোর্টে নিজের নাম তালিকাভুক্ত করেন এ কে ফজলুল হক। দুবছর শিক্ষানবিশ হিসেবে কাজ করার পর ১৯০৬ পূর্ব-বাংলার গভর্নর ব্যামফিল্ড ফুলার তাকে ডেকে সম্মানের সঙ্গে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে নিয়োগ দেন। সরকারি চাকরিতে তিনি কিছুদিন ঢাকা ও ময়মনসিংহে কাজ করেন। এরপর তাকে জামালপুর মহকুমার এসডিও হিসেবে নিযুক্ত করা হয়।

বঙ্গভঙ্গকে কেন্দ্র করে জামালপুরে হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা হয়। ফজলুল হকের আন্তরিক প্রচেষ্টায় সেখানে দাঙ্গা বন্ধ হয়। জামালপুর মহকুমাতে চাকরি করার সময় তিনি জমিদার ও মহাজনের যে নির্মম অত্যাচার নিজের চোখে দেখেন এবং এর প্রতিকার করতে গিয়ে যে অভিজ্ঞতা হয়, পরবর্তী জীবনে তা তার জন্য খুবই সহায়ক হয়েছিল। ১৯০৮ সালে এসডিও–এর পদ ছেড়ে দিয়ে তিনি সমবায়ের সহকারী রেজিস্ট্রার পদ গ্রহণ করেন। এ সময় তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে কৃষক শ্রমিকদের বাস্তব অবস্থা নিজের চোখে পর্যবেক্ষণ করেন। সরকারের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় অল্পদিনের মধ্যেই তিনি সরকারি চাকরি ছেড়ে দিয়ে ১৯১১ সালে এ কে ফজলুল হক কলকাতা হাইকোর্টে যোগ দেন। কলকাতায় তাকে সেদিন নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সংবর্ধনা সভার সভাপতিত্ব করেন নবাব স্যার খাজা সলিমুল্লাহ।

অবশেষে বঙ্গভঙ্গ নিয়ে নবাব স্যার সলিমুল্লাহ প্রতিষ্ঠিত মুসলিম লীগের সঙ্গে সাংগঠনিক নানা বিষয়ে তার বিরোধ বাধে। ১৯১৪ সালের ঢাকার আহসান-উল্লাহ-ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল বর্তমানে বুয়েট প্রাঙ্গণে মুসলিম লীগের প্রাদেশিক বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এ সম্মেলনে এ কে ফজলুল হক প্রাদেশিক মুসলিম লীগের সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় মুসলিম লীগের যুগ্ম সম্পাদক নির্বাচিত হন। ১৯১৪ সালে তিনি নিখিল ভারত কংগ্রেস দলে যোগ দেন এবং তিনি মুসলীম লীগ ও কংগ্রস দলের নেতা হয়ে ওঠেন। ১৯১৮ সালে তিনি ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সেক্রেটারি জেনারেল নির্বাচিত হন। ১৯১৮ সালে দিল্লিতে নিখিল ভারত মুসলিম লীগের বার্ষিক সম্মেলনে তিনি সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। বাঙালিদের মধ্যে তিনিই একমাত্র নিখিল ভারত মুসলিম লীগের অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন। ১৯১৯ সালে তিনি নিখিল ভারত মুসলিম লীগের প্রেসিডেন্ট পদ লাভ করেন।

এ কে ফজলুল হক খেলাফত আন্দোলনেও অংশগ্রহণ করেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর খেলাফত আন্দোলনের সূত্রপাত ঘটে। তিনি নিখিল ভারত খেলাফত কমিটির সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯২২ সালে মহাত্মা গান্ধী অসহযোগ আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিলে এ কে ফজলুল হক খুলনা উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং নির্বাচিত হন। ১৯২৪ সালে খুলনা অঞ্চল থকে তিনি পুনরায় আইন পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং এ সময় বাংলার গভর্নর ফজলুল হককে বাংলার শিক্ষা ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী নিয়োগ করেন। ১৯২৩ সালে চিত্তরঞ্জন দাশ ও মতিলাল নেহেরুর নেতৃত্বে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছিল স্বরাজ্য দল। এই দলের অন্যতম কর্মসূচি ছিল আইনসভায় নির্বাচিত হয়ে সরকারি নীতির বিরোধিতাসহ সরকারি বাজেট বা আয়-ব্যয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করা। স্বরাজ্য দল ১৯২৪ সালের বাজেটের প্রতি অনাস্থা জ্ঞাপন করে। এ সময় ১৯২৪ সালের ১ আগস্ট এ কে ফজলুল হক মন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন।

ইস্তফা দেওয়ার পর থেকে তিনি সম্পূর্ণরূপে জড়িয়ে পড়েছিলেন কৃষকদের রাজনীতি নিয়ে। ১৯২৯ সালের ৪ জুলাই বঙ্গীয় আইন পরিষদের ২৫ জন মুসলিম সদস্য কলকাতায় একটি সম্মেলনে মিলিত হয়েছিলেন। এই সম্মেলনে নিখিল বঙ্গ প্রজা সমিতি নামে একটি দল গঠনের সিদ্ধান্ত হয়। বাংলার কৃষকদের উন্নতি সাধনই ছিল এই সমিতির অন্যতম লক্ষ্য। ১৯২৯ সালেই নিখিল বঙ্গ প্রজা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় কলকাতায়। ঢাকায় প্রজা সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৩৪ সালে। এই সম্মেলনে এ কে ফজলুল হক সর্বসম্মতিক্রমে নিখিল বঙ্গ প্রজা সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হন।

ময়মনসিংহে বঙ্গীয় প্রজা সমিতির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় ১৯৩৫ সালে। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম রচিত সঙ্গীত এবং মরমী শিল্পী আব্বাসউদ্দিনের গানের মধ্যে দিয়ে এ সম্মেলন শুরু হয়েছিলো। এই প্রজা সমিতির মধ্য দিয়েই পরবর্তীকালে কৃষক-প্রজা পার্টির সূত্রপাত ঘটে।

১৯৩৫ সালে শেরে বাংলা এ. কে. ফজলুল হক কলকাতা মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের প্রথম মুসলিম মেয়র নির্বাচিত হন।

১৯৩৭ সালের মার্চে বঙ্গীয় আইন পরিষদের নির্বাচনে কৃষক প্রজা পার্টির পক্ষ থেকে পটুয়াখালী নির্বাচনী এলাকা থেকে এ কে ফজলুল হক ও মুসলিম লীগের মনোনীত পটুয়াখালীর জমিদার ও ঢাকার নবাব পরিবারের সদস্য খাজা নাজিমুদ্দিনকে পরাজিত করে নির্বাচিত হন। কৃষক প্রজা পার্টির স্লোগান ছিলো, ‘লাঙল যার জমি তার’, ‘ঘাম যার দাম তার’।এই নির্বাচনে কৃষক প্রজা পার্টি ৩৯টি আসন ও মুসলিম লীগ ৩৮টি আসন লাভ করে। নির্বাচনে মুসলিম লীগের সঙ্গে সমঝোতায় গিয়ে এ কে ফজলুল হক ১১ সদস্যবিশিষ্ট যুক্ত মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন। মন্ত্রীদের মধ্যে তিনজন কৃষক প্রজা পার্টির, তিন জন মুসলিম লীগের, তিন জন বর্ণ হিন্দুর এবং দুই জন তফসিলি সম্প্রদায়ের সদস্য ছিলেন।

১৯৩৭ সালের ১ এপ্রিল এ কে ফজলুল হকের নেতৃত্বে গঠিত মন্ত্রী পরিষদ গভর্নর এন্ডারসনের কাছে শপথ গ্রহণ করেন। আইন পরিষদের স্পিকার ছিলেন স্যার আজিজুল হক ও ডেপুটি স্পিকার হলেন জালালউদ্দিন হাশমী। বাংলার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক।

শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক বহু কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন। শিক্ষা ক্ষেত্রেই জোর দিয়েছিলেন বেশি। তার আমলে দরিদ্র কৃষকের ওপরে কর ধার্য না করে সারা বাংলায় প্রাথমিক শিক্ষা প্রবর্তন করা হয়। ‘বিনা ক্ষতিপূরণে জমিদারি প্রথা উচ্ছেদ’-এর পদক্ষেপ তিনি গ্রহণ করেন। এর কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য ব্রিটিশ সরকার ১৯৩৮ সালে ‘ফ্লাউড কমিশন’ গঠন করে। ১৯৩৮ সালের ১৮ আগস্ট বঙ্গীয় প্রজাস্বত্ব আইন সংশোধনী পাস হয় এবং জমিদারদের লাগামহীন অত্যাচার চিরদিনের জন্য বন্ধ হয়।

১৯৩৯ সালের ‘বঙ্গীয় চাকুরি নিয়োগবিধি’ প্রবর্তন করে মন্ত্রী পরিষদ মুসলমানদের জন্য শতকরা ৫০ ভাগ চাকরি নির্দিষ্ট রাখার ব্যবস্থা করে। এ বছরেই চাষি খাতক আইনের সংশোধনী এনে ঋণ সালিশি বোর্ডকে শক্তিশালী করা হয়। ক্লাউড কমিশনের সুপারিশ অনুসারে ১৯৪০ সালে হক সাহেব আইন পরিষদে ‘মহাজনী আইন’ পাস করান। এ বছরই ‘দোকান কর্মচারী আইন’ প্রণয়ন করে তিনি দোকান শ্রমিকদের সপ্তাহে একদিন বন্ধ ও অন্যান্য সুবিধা প্রদানের নির্দেশ জারি করেন।

কৃষি আধুনিকায়নের জন্য ঢাকা, রাজশাহী এবং খুলনার দৌলতপুরে কৃষি ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হয়। পাটচাষিদের নায্য মূল্য পাওয়ার লক্ষ্যে ১৯৩৮ সালে ‘পাট অধ্যাদেশ’ জারি করা হয়। ১৯৪১ সালের ১২ ডিসেম্বর আবুল কাশেম ফজলুল হক দ্বিতীয়বারের মতো মন্ত্রিপরিষদ গঠন করেন। শরৎচন্দ্র বসু ও হিন্দু মহাসভার সহসভাপতি শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির সঙ্গে প্রগতিশীল যুক্ত পার্টি গঠন করে তিনি সেই দলের নেতা হয়েছিলেন। ১৭ ডিসেম্বর এই মন্ত্রী পরিষদ বাংলার গভর্নর জেনারেল হার্বাটের কাছে শপথ গ্রহণ করেন।

১৯৪০ সালের ২৩ মার্চ লাহোরে অনুষ্ঠিত মুসলিম লীগের অধিবেশনে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর সভাপতিত্বে মুসলিম লীগের পক্ষ হতে ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাবের প্রারম্ভিক খসড়া তৈরি করেন পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী সিকান্দার হায়াত খান এবং প্রস্তাবটি উপস্থাপন করেন। এ কে ফজলুল হকের ঐতিহাসিক লাহোর প্রস্তাব হচ্ছে ভারতীয় উপমহাদেশে বসবাসকারী মুসলিমদের জন্য একটি পৃথক রাষ্ট্রের দাবি জানিয়ে উত্থাপিত প্রস্তাবনা।

যা আলোচনা ও সংশোধনের জন্য নিখিল ভারত মুসলিম লীগের সাবজেক্ট কমিটি সমীপে পেশ করা হয়। সাবজেক্ট কমিটি এ প্রস্তাবটিতে আমূল সংশোধন আনয়নের পর ২৩ মার্চ সাধারণ অধিবেশনে মুসলিম লীগের পক্ষ হতে ফজলুল হক সেটি উপস্থাপন করেন এবং চৌধুরী খালিকুজ্জামান ও অন্যান্য মুসলিম নেতারা তা সমর্থন করেন। এই লাহোর প্রস্তাবই ‘পাকিস্তান প্রস্তাব’ হিসেবে পরবর্তীকালে আখ্যায়িত হয়।


১৯৫৩ সালের ৪ ডিসেম্বর এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে নিয়ে গঠিত হলো যুক্তফ্রন্ট। যুক্তফ্রন্টের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করার জন্য এ সময়ে সাপ্তাহিক ‘ইত্তেফাক’কে দৈনিক পত্রিকায় রূপান্তর করা হয়। তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া ছিলেন ইত্তেফাকের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক। ১৯৫৪ সালের ১০ মার্চ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এই নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে মুসলিম লীগ ৯ টি আসন লাভ করে। ১৯৫৪ সালের ৩ এপ্রিল এ. কে. ফজলুল হক চার সদস্য বিশিষ্ট মন্ত্রিসভা গঠন করেন। পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রিপরিষদ গঠন করা হয় ১৫ মে। মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন শেরে বাংলা আবুল কাশেম ফজলুল হক।

১৯৫৫-এর ৫ জুন সংখ্যা সাম্যের ভিত্তিতে পুনরায় গণপরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় এবং কোয়ালিশন সরকার গঠিত হয়। মুসলিম লীগের চৌধুরী মোহাম্মদ আলী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পরিষদ গঠন করেন। এ কে ফজলুল হক ছিলেন এই সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ছিলেন বিরোধীদলের নেতা।

১৯৫৬ এর ২৯ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানের শাসনতন্ত্র গৃহীত ও ২৩ মার্চ তা কার্যকরী হয়। এ সময় এ কে ফজলুল হক পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী থেকে পদত্যাগ করে ৮৩ বছর বয়সে করাচি থেকে ঢাকা এসে ২৪ মার্চ পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন।

১৯৫৮ সালের ১ এপ্রিল পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকার তাকে গভর্নরের পদ থেকে অপসারণ করে। এরপরই তিনি তার ৮৬ বছরের বৈচিত্র্যময় রাজনৈতিক জীবন থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করেন।

১৯৬২ সালের ২৭ এপ্রিল শুক্রবার সকাল ১০ টা ২০ মিনিটে এ কে ফজলুল হক ৮৮ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। ২৮ এপ্রিল সকাল সাড়ে দশটা পর্যন্ত তার মরদেহ ঢাকার টিকাটুলি এলাকায় তার ২৭ কে এম দাস লেনের বাসায় রাখা হয়। সেদিন সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে ঢাকার পল্টন ময়দানে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। অবশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় তাকে সমাহিত করা হয়। একই স্থানে হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও খাজা নাজিমুদ্দিনের কবর রয়েছে। তাদের তিনজনের সমাধিস্থলই ঐতিহাসিক তিন নেতার মাজার নামে পরিচিত। রেডিও পাকিস্তান সেদিন সব অনুষ্ঠান বন্ধ করে সারাদিন কোরআন পাঠ করে। জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রেখে তার প্রতি সম্মান দেখানো হয়। ৩০ এপ্রিল সোমবার পাকিস্তানের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও স্কুল-কলেজে ছুটি ঘোষণা করা হয়।

হে মহান স্রষ্টা হে দয়াময় মহান নেতা শেরে বাংলা মরহুম আবুল কাশেম ফজলুল হক কে জান্নাতের উঁচু মাকাম দান করুন, আমিন।

সারোয়ার ওয়াদুদ চৌধুরী: পিস ফোরামের চেয়ারম্যান এবং লেখক ও গবেষক

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status