বাগমারায় পুকুরের মাছ লুটের অভিযোগ
নতুন সময় প্রতিনিধি
|
রাজশাহীর বাগমারায় দেশীয় অস্ত্র নিয়ে দলবলে বাড়ি ঘেরাও করে পুকুর থেকে মাছ লুটের ঘটনায় শনিবার ১২ অক্টোবর, বাগমারা থানায় জড়িতদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী মৎস্যচাষি রুবেল হক। মাছ লুটের এমন ঘটনা ঘটেছে উপজেলার গনিপুর ইউনিয়নের পোড়াকয়া গ্রামে। পোড়াকয়া গ্রামের আব্দুল মজিদের ছেলে রুবেল হকের দুটি পুকুর থেকে মাছ লুটের ঘটনা ঘটেছে। এতে প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে মৎস্যচাষীর। শুক্রবার (১১ অক্টোবর) রাত ১ টার দিকে রুবেল হকের বাড়ি ঘেরাও করে পাশের দুটি পুকুর থেকে মাছ লুটের ঘটনা ঘটায় সন্ত্রাসী বাহিনী। বাড়ির পাশের পুকুর থেকে মাছলুট করলেও সন্ত্রাসীদের হাতে থাকা দেশীয় অস্ত্রের ভয়ে বের হতে পারেনি পুকুর মালিকরা। ওই সময় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে সরকারি জরুরী সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন করা হলেও তৎক্ষণাত আইনগত কোন সহযোগিতা পাননি। বিষয়টি নিয়ে পরবর্তীতে সেনাবাহিনীর সাথে যোগাযোগ করে পুকুর মালিক। লুট করা মাছ মাদারিগঞ্জ বাজারের শরিফুল ইসলামের প্রত্যয় মৎস্য আড়তে বিক্রয় করে তারা। বিষয়টি জানতে পেরে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় এক চালানের ৪২ হাজারের অধিক টাকা জব্দ করা হয়। সেই টাকা সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে যেতে পারেনি। বর্তমানে একটি চালানের টাকাগুলো ওই মৎস্য আড়তের মালিকের নিকটে আছে। বেশ কয়েকগাড়ি মাছ লুট করা হলেও অন্য গাড়ির কোন খবর পাওয়া যায়নি। মাছ লুটের ঘটনায় দায়েরকৃত অভিযোগে ১০ জনের নাম উল্লেখ সহ ৩০-৩৫ জনকে অজ্ঞাত দেখানো হয়েছে। মাছ লুট হওয়া ওই দুটি পুকুর মাছচাষিদের ক্রয় ও লীজকৃত বলে জানা গেছে। অভিযোগকারী বলেন, গনিপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মহব্বত হোসেন সহ তার সহযোগী মহাসীন আলী ও মাহাতাব হোসেনের নেতৃত্বে প্রায় ৪০-৪৫ জন মিলে মাছলুট করেছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। থানায় দায়েরকৃত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ২৫-২৬ বছর ধরে মাছচাষ করে আসছে অভিযোগকারী রুবেল হক এবং তার পিতা। মাছ লুটের সাথে জড়িতরা হলেন, আচিনঘাট গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে মহব্বত হোসেন, চকমহব্বতপুর গ্রামের সমশের আলীর ছেলে মহাসীন আলী ও মাহাতাব হোসেন, একই গ্রামের আমজাদ হোসেনের ছেলে নাজমুল হোসেন, নাহিদ ও নাইম, মৃত মেহেরের ছেলে আনিছুর রহমান, মসলেমের ছেলে আজিজ, গনিপুর গ্রামের আব্দুল এর ছেলে বাবলু ও জালাল। অভিযোগকারী মাছচাষি রুবেল হক বলেন, আমার পুকুর থেকে রাতের আঁধারে সন্ত্রাসী কায়দায় মাছ লুট করা হয়েছে। এতে আমার প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে। ২৫-২৬ বছর থেকে ওই দুটি পুকুরে মাছ চাষ করে আসছি আমরা। ওই দুটি পুকুরের মধ্যে একটি ক্রয়কৃত এবং অন্যটি লীজকৃত। রুবেল হকের পিতা আব্দুল মজিদ বলেন, অস্ত্র নিয়ে তারা আমাদের বাড়ির চারপাশ ঘিরে রাখে যাতে কেউ বের হতে না পারি। নিরুপায় হয়ে ট্রিপুল নাইনে ফোন করলেও কোন সহযোগিতা পাওয়া যায়নি। তারা অবৈধ ভাবে অস্ত্র নিয়ে আমার ছেলের চাষকৃত পুকুর থেকে সন্ত্রাসী কায়দায় মাছ লুট করেছে। এদিকে মাদারিগঞ্জ বাজারের প্রত্যয় আড়তের মালিক শরিফুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, কয়েকজন ব্যক্তি আমার আড়তে মাছ বিক্রয় করতে আসে। সেই মাছ ওজন করে নেয়া হয়। এক চালানে ৪২ হাজারের কিছু বেশি টাকার মাছ বিক্রয় করা হয়। পরে পুকুর মালিকরা এসে বাঁধা দিলে তাদেরকে টাকা দেয়া হয়নি। মাছ বিক্রয়ের ওই টাকা আমার কাছেই আছে। অভিযুক্ত মহব্বত হোসেনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ তিনি প্রথমে সাড়া না দিলেও। পরে কল রিসিভ করেন। সাংবাদিক পরিচয় পাওয়ার পর তিনি পরে কথা বলবেন বলে কল কেটে দেন। এ ঘটনায় বাগমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌহিদুল ইসলাম তৌহিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, মাছ লুটের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |