আদালতে কী বলেছেন মাহমুদুর রহমান
নতুন সময় প্রতিবেদক
|
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়কে ‘অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্রের’ মামলায় বন্ধ হওয়া যাওয়া আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। রোববার (২৯ সেপ্টেম্বর) শুনানি শেষে এ আদেশ দেন ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মাহাবুবুল হক। এর আগে মাহমুদুর রহমান আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। শুনানিতে তার আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘পতিত স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকার আমেরিকার একটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে মাহমুদুর রহমানের নামে সাজানো মামলা করে। পরে তার অবর্তমানে সাত বছরের কারাদণ্ড দেন বিচারক।’ তিনি আরও বলেন, ‘মাহমুদুর রহমান স্বৈরাচার পতনের পর বাংলাদেশে আসছেন। আজকে তিনি স্বেচ্ছায় আদালতে আসছেন। তিনি জেলে যেতে চেয়েছেন, জামিন চাননি। আমরা আদালতের কাছে তার জামিনের প্রার্থনা করিনি। তাকে জেলে পাঠাবার কথা বলেছি।’ আইনজীবী মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, ‘উনি (মাহমুদুর রহমান) আইনের প্রতি খুবই শ্রদ্ধাশীল। কখনো বাড়তি সুবিধা চাননি। তিনি আসামির প্রথম শ্রেণির ডিভিশন দেওয়ার নির্দেশনা চাইলে বিচারক কারাবিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন।’ তিনি বলেন, ‘মাহমুদুর রহমান জেলে গেছেন, এরপর আপিল করবেন। এরপর তিনি জেল থেকে বেরিয়ে আসবেন দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটাই আমাদের প্রত্যাশা। যে মামলায় সাজা হয়েছে সেই মামলায়ই তিনি সারেন্ডার করেছেন। অতিদ্রুত এই মামলা থেকে তিনি বেরিয়ে আসবেন। ’ এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে এই আইনজীবী বলেন, ‘আদালতে মাহমুদুর রহমান বলেছেন, “আমি রাজনীতির দলীয় প্ল্যাটফর্ম থেকে স্বৈরাচারের বিরোধিতা করিনি। আমি আমার অবস্থান থেকে করেছি। আমার হলো বুদ্ধিবৃত্তিক লড়াই”, তিনি বলেছেন। সে কারণে রাজনৈতিক সংগ্রামের থেকে তার সংগ্রাম একটু আলাদা। এইটাই তিনি কোর্টে বলেছেন।’ সজীব ওয়াজেদ জয়কে ‘অপহরণ করে হত্যার ষড়যন্ত্রের’ মামলায় গত বছরের ১৭ অগাস্ট মাহমুদুর রহমান, যায়যায়দিনের সাবেক সম্পাদক শফিক রেহমান, জাতীয়তাবাদী সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংস্থার (জাসাস) সহসভাপতি মোহাম্মদ উল্লাহ মামুন, তার ছেলে রিজভী আহাম্মেদ ওরফে সিজার এবং যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী ব্যবসায়ী মিজানুর রহমান ভূঁইয়াকে ৭ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয় আদালত। খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা মাহমুদুর রহমান রাষ্ট্রদ্রোহের এক মামলায় ২০১৩ সালের ১১ এপ্রিল ঢাকার কারওয়ান বাজারে আমার দেশ কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার হন। পরে কারাবান্দি অবস্থায় ২০১৬ সালের এপ্রিলে তাকে জয়কে অপহরণ ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সাড়ে তিন বছর জেলে থাকার পর ২০১৬ সালের নভেম্বরে মাহমুদুর রহমান জামিনে মুক্তি পান। পরে তিনি লন্ডনে চলে যান। সাড়ে ৫ বছর নির্বাসিত জীবন কাটিয়ে গত শুক্রবার তিনি দেশে ফেরেন। আরেক সাংবাদিক শফিক রেহমানকে ২০১৬ সালের এপ্রিলে ইস্কাটনের বাসা থেকে গ্রেপ্তারের পর জয়কে অপহরণ ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। সে সময় দুই দফায় রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় বিএনপিঘনিষ্ঠ এই সম্পাদককে। পাঁচ মাস কারাগারে থাকার পর সর্বোচ্চ আদালতের আদেশে জামিনে মুক্তি পান যায়যায়দিনের সাবেক সম্পাদক। পরে তিনি যুক্তরাজ্যে চলে যান। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর গত ১৮ অগাস্ট তিনি দেশে ফেরেন।
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |