কর্ণফুলী নদীতে ১৫০ বছরের পুরনো ব্রিটিশ জাহাজ উদ্ধার; পাওয়া যায় রূপার মুদ্রা তামা পিতল
এস এম আকাশ,চট্টগ্রাম;
প্রকাশ: Sunday, 18 August, 2024, 6:43 PM
দেশের একমাত্র ও অন্যতম বাণিজ্যিক প্রবাহের নদী কর্ণফুলী তলদেশ থেকে ব্রিটিশ আমলের এক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করা হয়েছে। সেখানে পাওযা গেছে,তামা, পিতল ও রূপার তৈরি থালা-বাটি,হাড়ি-পাতিল,গ্লাস,পানির পাত্র,চামচ,মোমবাতি দানি,ফুলের টব,হ্যারিকেন ও কুপিবাতি, হাতির দাঁত,দূরবীন,বিভিন্ন নকশা করা শৌখিন জিনিসপত্র। মিলেছে কয়লা ও ১৫০ বছরের পুরোনো রূপা-তামার মুদ্রা।
জানা যায়,চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ ৬ ও ৭ নম্বর জেটির মধ্যবর্তী স্থানে খনন করার সময় ডুবন্ত জাহাজের সন্ধান পায়। জাহাজটি উদ্ধারে দুটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা ব্যর্থ হলে হিরামনি স্যালভেজ লিমিটেড নামের একটি কোম্পানি জাহাজটি উদ্ধারের দায়িত্ব নেয়।হিরামনি স্যালভেজ লিমিটেডের মালিক মো.আবুল কালাম বলেন,বন্দরের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী জাহাজটির ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার করেছি। নদীতে আরও দুটি ডুবন্ত জাহাজ রয়েছে। সেগুলো উদ্ধারের কাজ চলছে। উদ্ধার কাজে নিয়োজিত ডুবুরি মো.জহির জানান,জাহাজটি নদীর তলদেশে ৬০ ফুট গভীরে ছিল। এই জাহাজের কারণে নদীতে পলি জমে চর জেগে ওঠে। পরে ড্রেজিং করে জাহাজটি উন্মুক্ত করা হয়। ৪টি স্যালভেজ বার্জের মাধ্যমে উদ্ধার করা অংশটি নদীর তীরে আনার পর বিভিন্ন জিনিসপত্র দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে,এটি ব্রিটিশ আমলের জাহাজ। ধারণা করা হচ্ছে,ভারত উপমহাদেশে জাহাজটি বাণিজ্য করতে এসে কর্ণফুলী নদীর এই স্থানে ডুবে যায়।
হিরামনি স্যালভেজ কোম্পনির পরিচালক জিহাদ হোসেন বলেন,নিজস্ব অর্থায়নে আমরা ডুবন্ত এই জাহাজটি উদ্ধার ও অপসারণ করেছি। বন্দরের এত গুরুত্বপূর্ণ স্থানে এত বছর ধরে এই জাহাজটি ডুবন্ত অবস্থায় ছিল। ফলে পলি মাটি জমে বন্দরে চলাচলরত জাহাজগুলোর জন্য হুমকির কারণ হয়ে উঠেছিল এটি। তিনি আরও বলেন,'জাহাজে পাওয়া রৌপ্যমুদ্রাগুলো ১৮৬২ থেকে ১৮৮২ সালের তৈরি। এ থেকে আমরা ধারণা করছি জাহাজটি ১৫০ বছরের পুরোনো। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের ডেপুটি কনজারভেটর ক্যাপ্টেন ফরিদুল আলম বলেন,কর্ণফুলী চ্যানেলে ডুবন্ত জাহাজ উদ্ধারের জন্য হিরামনি স্যালভেজ নামের প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। তারা সম্প্রতি পুরোনো একটি জাহাজের ধ্বংসাবশেষ নদীর তলদেশ থেকে উদ্ধার করেছে। চট্টগ্রাম জাতিতাত্ত্বিক জাদুঘরের উপপরিচালক ড.আতাউর রহমান বলেন,'ভারতবর্ষে যখন ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় তখন রানী ভিক্টোরিয়া এই উপমহাদেশের দায়িত্ব নিজ হাতে নেন ১৮৫৮ সালে। তখন রানি ভিক্টোরিয়া ভারতবর্ষের মানুষের কল্যাণে কাজ শুরু করেন। ভিক্টোরিয়ার শাসনামলের প্রথম দিকের মুদ্রা এগুলো। হয়তো জাহাজটি আরও পুরোনো।