ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪ ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
রাজার কন্যার অন্ধত্ব ঘোচাতে দিঘি খনন, দেখে আসবেন যেভাবে
নতুন সময় প্রতিবেদক
প্রকাশ: Thursday, 25 July, 2024, 11:29 AM

রাজার কন্যার অন্ধত্ব ঘোচাতে দিঘি খনন, দেখে আসবেন যেভাবে

রাজার কন্যার অন্ধত্ব ঘোচাতে দিঘি খনন, দেখে আসবেন যেভাবে

প্রতিদিন হাজারো মানুষের সুখ-দুঃখ কিংবা অবসরের সঙ্গী হয় এই দিঘি। কেউ পাড়ে বসে জমিয়ে দিয়েছে আড্ডা, কেউ বড়শির শিকারে একের পর এক তুলে আনছেন বড় বড় মাছ, কেউ বা শরীর চর্চায় ব্যস্ত। দিঘির শীতল পানিতে নিজেকে চুবিয়ে রাখতেও এই দিঘি অনন্য। বলা হচ্ছে ফেনী শহরের ‘মধ্যমণি’ রাজাঝির দিঘির কথা। যেটির আছে সমৃদ্ধ ইতিহাস এবং লোকমুখে প্রচলিত নানা মিথ।

রাজাঝির দিঘি ফেনীর কয়েকশ’ বছরের ঐতিহ্য। জেলার জিরো পয়েন্টে ও ফেনী ট্রাংক রোডের সংযোগস্থলে এটি অবস্থিত। এ দিঘিটি ফেনীর শতবর্ষের ঐতিহাসিক ও দর্শনীয় স্থানের একটি। এত বছরেও দিঘির স্বচ্ছ জল রূপ-সৌন্দর্য্য আজও কিছুটা ধরে রেখেছে।


জনশ্রুতি আছে, ত্রিপুরা মহারাজের একজন রাজার কন্যার অন্ধত্ব দূর করার মানসে এ দিঘি খনন করেন। স্থানীয় ভাষায় কন্যাকে ঝি বলা হয় তাই দিঘিটির নামকরণ করা হয় ‘রাজাঝির দিঘি’। ফেনী অঞ্চলের মানুষ কন্যাকে আঞ্চলিক ভাষায় ঝি বলে থাকে। ফলে দিঘিটি খননের পর থেকেই রাজাঝির দিঘি বা রাজনন্দিনীর দিঘি নামে পরিচিত হয়ে উঠে।


ফেনীর প্রথম মহকুমা প্রকাশক কবি নবীন চন্দ্র সেন তার ফেনীর কথা বইতে (১৮৭৬) লিখেছেন, শোনা যায়, ফেনীর এই দিঘির জল এত চমৎকার ছিল যে, জনৈক ব্যক্তির পরিবার ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে  কঙ্কালসার হয়েছিলেন, এবং এই দিঘির জল পান করে আরোগ্য লাভ করেছিল। ফেনীর বিভিন্ন গ্রামের ও ট্রাংক রোডের শত শত মানুষ এই দিঘির জল পান করিত। উহা ফেনীর জীবন ও শোভা, এমন বলিলেও হয়।


১৮৭৫ সালে ফেনী মহকুমা প্রতিষ্ঠিত হলে তার সদর দফতর গড়ে তোলা হয় এই রাজাঝির দিঘির পাড়ে। তবে ১৯৮৪ সালে ফেনী জেলা হওয়ার পর অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হয়। তবে কিছু ভবন এখনও পরিত্যক্ত হিসেবে পড়ে রয়েছে। দিঘির পাড়ে বর্তমানে ফেনী সদর থানা, ফেনী কোর্ট মসজিদ, অফিসার্স ক্লাব, ফেনী রিপোর্টাস ক্লাব, জেলা পরিষদ পরিচালিত শিশু পার্কসহ ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন রয়েছে।


জনসাধারণের বিনোদন ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশে চলাফেরার সুবিধার জন্য রাজাঝির দিঘির দুই পাশে কার্পেটিং রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। দিঘির পাড়ের নিচে চলাফেরার সুবিধার জন্য রাস্তা, দিঘিতে নামার জন্য উন্নতমানের সিঁড়ি, মাঝে মাঝে খালি জায়গায় বৃক্ষ রোপণ, বসার জন্য বেঞ্চ স্থাপনসহ পর্যাপ্ত লাইটিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।


দিঘির জল যাতে সবাই স্পর্শ করতে পারে, সেইজন্য তিন পাশে পাঁচটি সিঁড়ি হয়েছে। দিঘিতে ময়লা আবর্জনা যাতে বৃষ্টির পানির সঙ্গে মিশে গড়িয়ে পড়তে না পারে তার জন্য চারপাশ উঁচু করা হয়েছে। বর্তমানে দিঘির পানি পানের ও ব্যবহারের উপযোগী।


কীভাবে যাবেন


ঢাকা থেকে চট্টগ্রামগামী যেকোনো পরিবহণের বাসে ফেনীর মহিপাল যাওয়া যায়। তবে স্টার লাইন পরিবহণ সবচেয়ে ভালো। মহিপাল বাস ষ্ট্যান্ড থেকে রিকশা বা সিএনজি ভাড়া করে রাজাঝির দিঘি পৌঁছাতে পারবেন। এছাড়া চট্টগ্রামগামী ট্রেনে ফেনী রেলওয়ে স্টেশনে এসে একইভাবে রাজাঝির দিঘি দেখতে যেতে পারবেন।


কোথায় থাকবেন


ফেনী শহরের অবস্থিত আবাসিক হোটেলের মধ্যে বেস্ট ইন হোটেল, হোটেল মিড নাইট এবং হোটেল গাজী ইন্টারন্যাশনাল অন্যতম। এছাড়া অনুমতি নিয়ে ফেনী সার্কিট হাউস, ফেনী জেলা পরিষদ ডাকবাংলো, এলজিইডি রেস্ট হাউস, পানি উন্নয়ন বোর্ডের রেস্ট হাউস এবং পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির রেস্ট হাউসে রাত্রিযাপন করতে পারবেন।

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status