ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
বুধবার ৫ নভেম্বর ২০২৫ ২০ কার্তিক ১৪৩২
ধর্ম মন্ত্রনালয়ে একযুগ লালফিতায় বন্দী ওয়াকফ প্রশাসনের ম্যাজেস্টিসির প্রজ্ঞাপন!
এম এস দোহা
প্রকাশ: Wednesday, 5 November, 2025, 1:30 PM

ধর্ম মন্ত্রনালয়ে একযুগ লালফিতায় বন্দী ওয়াকফ প্রশাসনের ম্যাজেস্টিসির প্রজ্ঞাপন!

ধর্ম মন্ত্রনালয়ে একযুগ লালফিতায় বন্দী ওয়াকফ প্রশাসনের ম্যাজেস্টিসির প্রজ্ঞাপন!

ফ্যাসিস্ট সরকারের দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনায় আইসিইউতে ওয়াকফ প্রশাসন। ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রয়োগে জন্য ২০১৩ সালে প্রণীত হয় আইন। কিন্তুু এটি বাস্তবায়নের জন্য ধর্ম মন্ত্রনালয়ের এসম্পর্কিত  একটি প্রজ্ঞাপন ১২ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি। ফলে ওয়াকফ প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে থাকা অধিকাংশ সম্পদ জাল জালিয়াতের মাধ্যমে চলে গেছে ভূমিদস্যদের দকলে।

উল্লেখ্য,২০১৩ সালে ওয়াকফ প্রশাসনের ১৮ নম্বর আইন দ্বারা ১৯৬২ সালের মূল অধ্যাদেশের ৩১ ধারা অধিকতর কার্যকরের জন্য  ৩১ক ধারা যুক্ত করা হয়। উক্ত ৩১ক ধারার মাধ্যমে  ওয়াকফ প্রশাসক ও অধস্হন কর্মকর্তাদের ওয়াকফ সম্পত্তি যথাযথ ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ ও নিরাপত্তার জন্য নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের ক্ষমতা প্রদত্ত হয়েছে। 

৩১ক(২)উ-ধারায় বলা হয়েছে,এই আইনটি গেজেট প্রজ্ঞাপন জারি পর থেকে ম্যাজিস্ট্রেসির এই ক্ষমতা উপ প্রশাসক  এবং সহকারী প্রশাসকগন প্রয়োগ  করতে পারবেন। ওয়াকফ প্রশাসক জেলা ম্যাজিস্টেট, উপ প্রশাসক ও সহকারী প্রশাসকগন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে গন্য হবেন।

কিন্তু রহস্যজনক কারণে  ১১বছরেও (২০১৩-২০২৪)ফ্যাসিস্ট সরকারের ধর্ম মন্ত্রী মতিউর রহমান ও ফরিদুল হক খানের  রহস্যজনক উদাসীনতায় আলোর মুখ দেখেনি এই প্রজ্ঞাপন।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, পৃথিবীর একমাত্র মহিলা নবাব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী জনকল্যাণে ২৯৭ একর সম্পদ ওয়াকফ রাহেলিল্লাহ করেন। যার মধ্যে এখন মাত্র ৭একর জায়গার অস্তিত্ব দৃশ্যমান। বাকি ২৯০ এক বেদখল হয়ে গেছে। 

সর্বশেষ ২০২৪ সালের ৩১ অক্টোবর কুমিল্লার লাকসামে অবস্থিত নবাব ফয়জুন্নেছার স্মৃতি বিজড়িত বাড়িতে গাড়ি নিয়ে প্রবেশের একমাত্র পথটিও বেদখল হয়ে যায়। যাতে বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ৯ম শাখা হিসেবে কর্মকাণ্ড চলমান। 

প্রত্নতত্ত্বের গেজেট ভুক্ত উক্ত বাড়ির প্রবেশ পথটি খুলে দিতে ধর্ম উপদেষ্টা খালিদ হাসান তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বনের জন্য ওয়াকফ প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫  নবাব বাড়ির উক্ত প্রবেশপথ  খুলে দিতে যথাযথ ব্যবস্হা গ্রহণ  কুমিল্লা প্রশাসনকে  নির্দেশ দেন। কিন্তু রহস্যজনক কারণে কুমিল্লা জেলা প্রশাসক আমিরুল কায়সার বিষয়টি ৮ মাসেও বাস্তবায়ন করতে পারেননি। 

জানাগেছে  এধরণের শত শত জরুরি নির্দেশনা বছরের পর বছর বিভিন্ন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে লাল ফিতায় বন্দী। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা, ভুমি অফিসের  সার্ভেয়ার ও ভুমিদস্যুূদের যোগসাজশে ওয়াকফের অধিকাংশ জায়গা বেদখল হয়ে গেছে। 

প্রশ্নজাগে, বর্তমানে ১৬৭৮২টি ওয়াকফ এস্টেটের ৮ লক্ষ একর সম্পদের মধ্যে কতটুকু দখলে আছে?  কি পরিমাণ বেহাত হয়েছে? কোন সম্পদগুলো নিয়ে মামলা চলমান? অপ্রিয় হলেও সত্য, এ সম্পর্কিত কোন ডাটা বা পরিসংখ্যান  ওয়াকফ  প্রশাসনে নেই। তাছাড়া প্রতিটি ওয়াকফ এস্টেট থেকে প্রতি বছর ২৫ হাজার টাকা চাঁদা হিসেবে প্রায় ৪২ কোটি টাকা আদায় করা হয়। এটাকার ব্যবহার নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ। 

জেলা পর্যায়ে আঞ্চলিক অফিসগুলোর কর্মকাণ্ড নেতিবাচক। তাদের কোন দায় দায়িত্ব ও ক্ষমতা  নাই ওয়াকফ সম্পদ সংরক্ষণ বা তদারকিতে। প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনা ছাড়া তারা নড়াচড়া করতেও অপারগ।শাখা অফিসগুলোর জন্য নেই যথাযথ পরিবহন ও টিএ ডিএ সুবিধা। হেড অফিস থেকে নির্দেশ প্রাপ্ত হয়ে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরণের মধ্যেই তাদের দায়িত্বের ইতি। 

হেড অফিসে এসব তদন্ত প্রতিবেদন পৌঁছার পর তা পর্যালোচনা ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার নেওয়ার মতো জনবল ও কর্মকতার অভাব। নীতি নির্ধারনী পর্যায়ের কর্মকর্তারা এখানে আসেন শাস্তিমুলক পোস্টিং হিসেবে। অধিকাংশ সময় তাদের মন, মেজাজ, মুড খারাপ থাকে। ফলে তৃণমূলের বহু তদন্ত প্রতিবেদন ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত ঝুলে আছে বছরের পর বছর। 

প্রধান কার্যালয়ে দায়িত্বরত প্রশাসক,পরিচালক,সহকারী পরিচালক কখন যোগদান করেন, আবার কখন অন্যত্র বদলী হন তা বুঝা মশকিল। ভালো জায়গায় পোস্টিংয়ের জন্য  তারা উদগ্রীব ও উৎকন্ঠায় সময় অতিবাহিত করেন।

উল্লেখ্য,ওয়াকফ প্রশাসনের ম্যাজেস্টেসি ক্ষমতা প্রয়োগে ধর্ম মন্ত্রনালয়ের প্রজ্ঞাপন জারি ও ওয়াকফ দলিলের উল্লেখিত নথি,  খতিয়ান যথাযথভাবে সংরক্ষণ ডিজিটালাইজেশনে জন্য ভুমি মন্ত্রনালয়ের সহায়তায় সমন্বয় সাধন  এখন সময়ের দাবী। 

দৈনিক নতুন সময় পত্রিকায় এ সম্পর্কিত প্রতিবেদন প্রকাশের প্রেক্ষিতে ধর্ম উপদেষ্টা খালিদ হোসেন গত ২৮ জুলাই ২০২৫ স্বশরীরে মগবাজারস্হ ওয়াকফ প্রশাসন কার্যালয় পরিদর্শন করেন। তিনি এসম্পর্কিত নথিপত্র  ডিজিটালাইজেশনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যাবস্হা গ্রহণের নির্দেশ দেন। কিন্তু আমলাতান্ত্রিক জটিলতাতার কারনে বিষয়টি এখনও থমকে আছে।

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status