বরগুনার আমতলী উপজেলার যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই শুধু আমনের খেত, এ যেন সবুজের সমারোহ, আর এই সবুজ ধানের শীষে দুলছে কৃষকদের স্বপ্ন, অল্প কিছুদিনের মধ্যেই সোনালী ধানের শীষ ঝলমল করবে মাঠের পর মাঠ, রাশি রাশি সোনালি ধানে ভরে উঠবে কৃষক-কৃষাণীর শূন্য গোলা, পাশাপাশি তাদের মুখে ফুটে উঠবে হাসির ঝিলিক।
আমতলী উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২৩ হাজার ৩৮১ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্র নির্ধারণ করা হয়। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে আমন ধানের চাষ করা হয়েছে, সূত্রটি আরও জানায়, আমতলী উপজেলার ৪ হাজার ৯০০ জন কৃষকের মধ্যে প্রণোদনাস্বরূপ সার ও বীজ বিতরণ করা হয়েছে, এ ছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় সার, বীজ, বালাইনাশক কীটনাশক ও ওষুধ বিতরণ করা হয়েছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ এলাকায় আমন ধানের মাঠে সবুজের সমারোহ, প্রতিটি ধান খেতে ধানের শীষ রূপালি রং ধারণ করতে শুরু করেছে।
উপজেলার আঠারগাছিয়া ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের পূর্ব সোনাখালী গ্রামের প্রান্তিক কৃষক বশির খাঁন বলেন, এ বছর তিনি তার ১ একর জমিতে আমন ধানের চাষ করেছেন, অন্য বছরের তুলনায় এ মৌসুমে অনেক ভালো ধন হয়েছে, এমন সুন্দর ধান খেত দেখে তার মনটা খুশিতে ভরে গেছে।
উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের চিলা গ্রামের কৃষক মিলন মিয়া বলেন, মাঠ পর্যায়ে কৃষি বিভাগের লোকদের পরামর্শ নিয়ে আমরা উপকৃত। উপজেলার নীলগঞ্জ গ্রামের প্রান্তিক কৃষক খবির সিকদারসহ অনেক কৃষকের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং সময়মতো বৃষ্টি হওয়ার কারণে আমন ধান গাছের গাছগুলো দেখতে অনেক সুন্দর দেখা যাচ্ছে। ভালোভাবে ফসল ঘরে তুলতে পারলে তাদের সারা বছরের খাদ্যের চাহিদা পূরণ হবে।
আমতলী উপজেলা কৃষি অফিসার মো. ঈসা বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং কোনো প্রকার প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে, এ বছর জেলায় লক্ষ্যমাত্রার অধিক ধান উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ ছাড়া কৃষকের নিবিড় পরিচর্যা, যথাসময়ে জমিতে সার ও কীটনাশক প্রয়োগের ফলে আমন ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।
ধানের সবচেয়ে ক্ষতিকর রোগবালাই সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাধারণত মাজরা পোকা, বাদামি ফড়িং ও গোড়া পচা রোগসহ বিভিন্ন পোকা-মাকড়ের আক্রমণ বেশি হয়, এ কারণে কৃষকদের আরও বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।