গাজীপুরের শ্রীপুরে বনের জায়গায় নির্মাণ করা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও বনভূমি উদ্ধার করতে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলাকালে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে আহত হয়েছেন অভিযানে থাকা শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমী (এসি ল্যান্ড) আতাহার শাকিলসহ ছয়জন। হামলায় ভেঙেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সরকারি গাড়ির সামনের কাচ। ভাঙচুর করা হয় এক্সকাভেটর। আহত হয়েছেন এক্সকাভেটরের চালকও।

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে উপজেলার ইজ্জতপুর বাজারের কাছে এ হামলার ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন শ্রীপুরের ইউএনও সজীব আহমেদ ও স্থানীয়রা। ইতোমধ্যে এ ঘটনায় দুজনকে আটকও করা হয়েছে। এর আগে এদিন সকাল থেকে উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের কাফিলাতলী ও ইজ্জতপুর গ্রামে এ অভিযান শুরু হয়ে চলে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।

হামলার শিকার এসি ল্যান্ডের পাশাপাশি আহত অন্যান্য ব্যাক্তিরা হলেন ইউএনওর গাড়িচালক আবদুল হানিফ, স্টাফ আশিকুর রহমান, রাজেন্দ্রপুর রেঞ্জ কর্মকর্তার গাড়িচালক মো. লিটন, এক্সকেভেটরের চালক মো. রাসেল ও মো. হাকিমুল্লাহ।

অভিযানসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ওই এলাকার ইজ্জতপুর বাজারের পশ্চিম দিকে বনের জমিতে থাকা একটি ঘর উচ্ছেদ করতে শুরু করেন বন বিভাগ সংশ্লীষ্ট লোকজন। এ সময় উচ্ছেদে ব্যবহৃত এক্সকাভেটর লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন স্থানীয় কিছু অজ্ঞাত লোক। একপর্যায়ে তাঁরা সেখানে পার্কিংয়ে থাকা ইওএনও ও এসি ল্যান্ডের গাড়ি ঘিরে হামলা চালায়। 

ওইসময় ছুড়া ইটপাটকেল এসি ল্যান্ড আতাহার শাকিলের গায়ে লেগে আঘাত প্রাপ্ত হন তিনি। এ ছাড়া হামলায় ইউএনওর সরকারি গাড়ির সামনের কাচ ও উইন্ডশিল্ডও ভেঙে দেয় হামলাকারীরা। পরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের জোড়ালো প্রতিরোধের মুখে হামলাকারীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।

শ্রীপুরের ইউএনও সজীব আহমেদ মুঠোফোনে জানান, এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক দুজনকে আটক করা হয়েছে। হামলাকারীদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে। হামলায় আহত এসি ল্যান্ড আতাহার শাকিল-সহ অন্যরা চিকিৎসা নিয়ে এখন শারীরিকভাবে কিছুটা সুস্থ বোধ করছেন। তবে দু'জন ছুটি রয়েছেন বলেও জানান তিনি।

এর আগে সকাল থেকে সেখানে বন বিভাগের সমন্বয়ে যৌথ বাহিনীর সদস্যরা অভিযান চালায়। এ অভিযানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), পুলিশ, বন বিভাগ, ওয়াইল্ডলাইফ সেন্টারসহ বিভিন্ন বিভাগের তিন শতাধিক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। এ অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছেন শ্রীপুরের ইউএনও ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সজীব আহমেদ।

বন বিভাগ জানায় , গত ৫ আগস্টের পর বনের প্রচুর জমি জবরদখল করে ঘর তৈরি করা হয়। এ অভিযানে ওইসব জমি ও ঘর উদ্ধার করা হচ্ছে। মঙ্গলবার অভিযান শেষ হলেও বাকি থাকা অন্য জমিগুলো বন বিভাগ নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় উদ্ধার করবে বলে জানা গেছে। দিন শেষে ৬একরেরও অধিক বনভূমি উদ্ধার হয়। এই বনভূমি দখলদার থেকে ১২০টিরও অধিক স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেব উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজীব আহমেদ।