ভাণ্ডারিয়ায় ময়না তদন্ত ছাড়াই ব্যবসায়ীর লাশ দাফন , একমাস ১৮ দিন পর কবর থেকে লাশ উদ্ধার
নতুন সময় প্রতিবেদক
|
পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার দক্ষিণ ভিটাবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম মিঠু ফকির স্থানীয় দ্বন্ধের জেরে খুন হন গত এক মাস আগে । দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা হয় বলে পরিবারের অভিযোগ। গত ৫ আগষ্ট গভীর রাতে তাকে সহ আরও তিন জনকে কুপিয়ে আহত করা হয়। প্রথমে তাকে বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে নেয়া হলে ৬ আগষ্ট রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মিঠু ফকির মারা যান। ৭ আগষ্ট বিকেলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়। এ ঘটনার পর গত ১৬ আগস্ট নিহত রফিকুল ইসলাম মিঠুর স্ত্রী পলি আক্তার বাদী হয়ে অভিযুক্ত হামলাকারি ১১ জনের বিরুদ্ধে ভাণ্ডারিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে পিরোজপুর আমলি আদালত-২ এর বিচারিক হাকিম সাদিক আহম্মেদ গত ২ জুলাই এক আদেশে ঘটনার একমাস ১৮দিন পর আজ সোমবার পুলিশ নিহত রফিকুল ইসলাম মিঠুর লাশ পারিবারিক কবরস্থান থেকে উত্তোলন করেন। এসময় পিরোজপুরের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তৌফিক আনোয়ার, ভাণ্ডারিয়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক ম্যাডিকেল অফিসার ডা. কামাল হোসেন, স্থানীয় ভিটাবাড়িয়া ইউপি চেয়ারম্যান খান এনামুল করিম পান্নাসহ থানা পুলিশ উপস্থিত ছিলেন। থানা ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গেছে, ভাণ্ডারিয়া ভিটাবাড়ীয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ ভিটাবাড়িয়া গ্রামের মো. মোশাররফ ফকিরের ছেলে রফিকুল ইসলাম মিঠু ফকির ঢাকার নবাবপুর এলাকায় ব্যবসা করত। মাঝে মাঝে গ্রামের বাড়িতে আসতেন। ঘটনার কয়েকদিন পূর্বে সে গ্রামের বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। স্থানীয় জেলে পাড়ার একটি দ্বন্দ্বের জেরে গত ৫ আগষ্ট রাতে জেলা পাড়ার ৩০ থেকে ৪০ জনে একটি সংঘবদ্ধ দল তাকেসহ মোট ৪ জনকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। অন্য আহতরা বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আহতরা হলেন, মো. ছোমেদ তালুকদারের ছেলে বাশার তালুকদার, আলী হোসেন তালুকদার এর ছেলে মো. ছালাম তালুকদার, মো. সাঈদ তালুকদার এর ছেলে হাসিব তালুকদার। অপরদিকে গুরুতর আহত রফিকুল ইসলাম ঢাকায় চিৎিসাধিন অবস্থায় ঘটনার পরদিন মারা যান। নিহতর বোন নাজমা বেগম জানান, ওই সময় দেশের পরিস্থিস্তি সংকটময় থাকার কারনে থানা পুলিশের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় নিহতর ময়না তদন্ত করানো সম্ভব হয়নি। পরে লাশ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়। তিনি আরো বলেন,তার ভাই কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন। এলাকার দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বের জেরে দেশের বর্তমান পরিস্থিতি সুযোগে তাকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমি আমার ভাই হত্যার বিচার দাবি করছি। নিহত রফিকুল ইসলাম মিঠুর স্ত্রী পলি আক্তার বলেন, আমার স্বামীকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে। ওই সময় দেশের পরিস্থতির কারনে থানা পুলিশ না পেয়ে ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফন করা হয়েছে। পরে আমি গত ১৬ আগস্ট স্বামী হত্যার বিচার চেয়ে মামলা দায়ের করেছি। আমার তিন মেয়ে এখন পিতৃহারা । আমি স্বামী হারা । মেয়েদের পড়াশুনা বন্ধের পথে । আমি আমার স্বামী হত্যাকারিদের কঠোর বিচার দাবি করছি। এ ব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা ভাণ্ডারিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক মো. সোলায়মান ঘটনা নিশ্চিত করে বলেন, আদালতের নির্দেশে নিহত রফিকুল এর লাশের ময়নাতদন্তের জন্য একমাস ১৮ দিন পর কবর হতে উত্তোলন করা হয়েছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তরা পলাতক । তাদের গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। |
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |