বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের বিরোধিতা করা আলোচিত-সমালোচিত কথাসাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল কোথায় আছেন? তিনিও কি দেশ ছেড়েছেন নাকি দেশেই আত্মগোপনে আছেন, জানতে চাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর গ্রেপ্তার-আতঙ্কে আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী অনেক হোমড়া চোমরা ব্যক্তি, প্রভাবশালী নেতা, সদ্য পতন হওয়া সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী, মেয়র, কাউন্সিলর, সাংবাদিক, শিক্ষক গা ঢাকা দিয়েছেন। খোঁজ মিলছে না আওয়ামীপন্থী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের। অবশ্য আরও আগে থেকেই লাপাত্তা শিক্ষাবিদ জাফর ইকবাল।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মাঝখানে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় সমালোচিত হন জাফর ইকবাল। ৫ আগস্টের পর অনেক শিক্ষার্থীকেই জাফর ইকবাল কোথায় আছেন জানতে চেয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিতে দেখা যায়। ‘গর্তে আছেন' বলেও অনেককে মন্তব্য করতে দেখা যায়।
এছাড়াও ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ ও পেজে জাফর ইকবালকে নিয়ে ট্রল ও মিমে মেতে ওঠে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। অনেকে গর্তের ছবি পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন ‘জাফর ইকবালের বর্তমান অবস্থান'।
ফেসবুকে জাফর ইকবাল সম্পর্কিত পোস্টের কমেন্টবক্সে জাফর ইকবালকে ‘দালাল', ‘চাটুকার' ও ‘প্রতারক' বলে সম্বোধন করতে দেখা যায়।
এক ফেসবুক ব্যবহারকারী লিখেছেন, “গর্তজীবী জাফর ইকবাল কি আবারো গর্তে বিলীন হয়ে গেল?"
অন্য একজন পোস্ট দিয়েছেন- “আচ্ছা , জাফর ইকবাল কই?“ এক ব্যক্তি জানতে চেয়েছেন নতুন স্বাধীন দেশে জাফর ইকবাল স্যারের অনুভূতি কেমন? এছাড়াও অনেককে জাফর ইকবালের যৌক্তিক সমালোচনা করতে দেখা যায়।
উল্লেখ্য,সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজাকার আখ্যা দেওয়া বক্তব্যের প্রতিবাদে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী ‘আমি কে, তুমি কে; রাজাকার, রাজাকার’স্লোগান দেয়। শিক্ষার্থীদের এমন প্রতিবাদের প্রতিক্রিয়া জানানো জাফর ইকবালের একটি চিরকুট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ওই চিরকুটে জাফর ইকবাল লিখেছিলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় আমার বিশ্ববিদ্যালয়, আমার প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে আমি মনে হয় আর কোনোদিন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে চাইবো না। ছাত্র-ছাত্রীদের দেখলেই মনে হবে, এরাই হয়তো সেই রাজাকার। আর যে কয়দিন বেঁচে আছি, আমি কোনো রাজাকারের মুখ দেখতে চাই না। একটাই তো জীবন। সেই জীবনে আবার কেন নতুন করে রাজাকারদের দেখতে হবে?’
জাফর ইকবালের এমন মন্তব্যের পর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যেও ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দেয়। অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের দাবির বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ায় তাকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে এবং আজীবন নিষিদ্ধ করেছে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি)আন্দোলনকারীদের শিক্ষার্থীরা।
ঘটনার পর দেশের সবচেয়ে বড় অনলাইনভিত্তিক বইয়ের দোকান রকমারি ডটকমে মিলছে না জাফর ইকবালের বই। বেঙ্গল বুকসসহ অনেক প্রকাশনী ঘোষণা দিয়েছে তার বই বিক্রি না করার।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেককে জাফর ইকবালের বই ছিঁড়ে ও বই পুড়িয়ে তার বক্তব্যের প্রতিবাদ করতে দেখা যায়।