গোসলের পর কি আবার ওজু করতে হবে?
নতুন সময় প্রতিনিধি
|
প্রশ্ন: আমি যখন গোসল করতে যাই, প্রথমে ওজু করে ৩ বার পানি ঢেলে শুরু করি। কিন্তু গোসলের মাঝে এবং শেষে শরীর ভেজা অবস্থায়ই আবারো প্রস্রাব আসে। কয়েকবার আসে। তখন আমি শুধু কুলি করি এবং নাকে পানি দিয়ে আবার পুরো শরীরে পানি ঢালি। আমার গোসল কি ঠিক হয়? গোসলের পরই যদি নামাজ পড়তে হয়, তাহলে কি এই গোসলেই হবে নাকি আবার ওজু করতে হবে? উত্তর: আপনার গোসল ঠিক আছে। তবে ফরজ ও সুন্নত তরিকায় গোসল করার পরে নতুন করে ওজু করার প্রয়োজন পড়ে না । অথবা গোসল শেষে পেশাব পায়খানা করলে নতুন করে গোসলের প্রয়োজন নেই শুধু ওজু করে নেওয়াই যথেষ্ট। হাদিস শরিফ থেকে জানা যায়, রাসুল (সা.) গোসলের পর ওজু করতেন না। হজরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) গোসলের পর নতুন করে ওজু করতেন না। (সুনানে নাসায়ি)। তিরমিজি ও নাসায়ি শরিফের আরেকটি হাদিস থেকে জানা যায়, রাসুল (সা.) গোসলের আগে ওজু করে নিতেন। এটাও হজরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবীজি (সা.) গোসলের আগে অজু করে নিতেন। গোসলের পর নতুন করে ওজু করতে তাকে আমি দেখিনি। কেন গোসলের পর অজু জরুরি নয় গোসলের ফরজ ৩টি। ১. কুলি করা। ২. নাকে পানি দেওয়া এবং ৩. পুরো শরীর ভালোভাবে ধৌত করা। আর ওজুর ফরজ হলো ৪টি। ১. পুরো মুখ ধোয়া। ২. দুই হাতের কুনুইসহ ধোয়া। ৩. মাথা মাসেহ করা। ৪. দুই পায়ের টাখনুসহ ধোয়া। দেখা যাচ্ছে, কেউ যদি গোসলের ফরজগুলো আদায় করে নেয় তাহলে ওজুর ফরজগুলোও আদায় হয়ে যায়। এ জন্য গোসলের পর আর নতুন করে ওজু করার প্রয়োজন নেই। গোসলের সময় মাথা মাসেহ করার ফরজ আদায় হয় না- এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানের প্রখ্যাত আলেম মুফতি ইউসুফ লুধিয়ানাভি (রহ.) বলেন, মাসেহ বলতে বোঝায়, ভেজা হাত মাথায় স্পর্শ করানো। এই অর্থে মাথা ধোয়ার কারণে মাসেহর চেয়েও অতিরক্ত হয়ে যায়, আদায় হয়ে যায় মাসেহর ফরজও। গোসলের আগে ওজু করা ভালো ফকিহরা বলেন, গোসলের আগে ওজু করা সুন্নাত। না করলে গোনাহ নেই, শুধু গোসলই যথেষ্ট। হানাফি মাজহাবের বিখ্যাত ফতোয়ার কিতাব ফতোয়ায়ে আলমগিরিতে বলা হয়েছে, ‘গোসলই ওজুর জন্য যথেষ্ট। তবে গোসলের আগে অজু করা সুন্নাত।’ গোসলের পর ওজু না করাটাই ভালো গোসলের পর ওজু করাকে কোনো কোনো ফকিহ ‘পানির অপচয়’ বলে উল্লেখ করেছেন। কেউ কেউ সুন্নাতের খেলাফও বলেছেন। তবে কেউ চাইলে নামাজের আগে নতুন করে ওজু বানিয়ে নিতে পারে। এক্ষেত্রে সে মুস্তাহাব আমলের সাওয়াব পাবে। (ফতোয়ায়ে আলমগিরি, ১ম খন্ড, ১৪ পৃষ্ঠা)।
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |