রংপুরে বেড়েই চলছে বিষবৃক্ষ তামাক চাষ
আব্দুর রহমান রাসেল, রংপুর
|
রংপুরে দিন দিন বেড়েই চলেছে বিষবৃক্ষ তামাক চাষ। কমে যাচ্ছে কৃষি জম। রংপুরের পুরো জেলা জোড়ে ছড়িয়ে আছে বিষবৃক্ষ তামাক চাষ। বিভিন্ন তামাক কোম্পানির প্রলোভনে এই বিষ পালাচ্ছেন স্থানীয় চাষীরা। তাই জীবন ঘাঁটি এই তামাক চাষ বন্ধে দাবী সচেতন মহলের। পরিবেশ বাদীরা বলছেন তামাক চাষ বন্ধ হলে নীড় উৎসাহিত শিক্ষার্থীরা আবারো ফিরবে স্কুল-কলেজে। জানা গেছে, রংপুরের সদর উপজেলাসহ,জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে হচ্ছে বিষবৃক্ষ তামাক চাষ। গত বছরেও যেসব আবাদি জমিতে ধান, গম, ভুট্টা, সরিষা, আলুসহ বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করা হয়েছিল, এখন সেসব জমিতে বিষবৃক্ষ তামাক চাষ করছেন কৃষকরা। তামাক চাষী আলতাব হোসেনসহ কয়েকজন বলেন, অন্যান্য ফসলের চেয়ে তামাক চাষাবাদ করে দাম বেশি পাই। এজন্য তামাক চাষাবাদ করি। তামাক ক্ষতি কর এটা ঠিক আছে। কিন্তু ধান, গম, ভুট্টার চেয়ে অনেক লাভ হয় এজন্য আমরা তার তামাক চাষাবাদ করি। লাভবান হোক বা না হোক এগুলো আমাদের করতে হবে আমরা এখন যাব কোথায়। অন্যদিকে তামাক কোম্পানিগুলো বীজ সারসহবিভিন্ন সুবিধা দেওয়ায় লোভে পড়েছেন কৃষকরা। এ কারণেই মাটির উর্বরতা হারাচ্ছে দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। তামাক চাষের ক্ষতিকর দিক জানা থাকলেও অধিক মুনাফার আশা আর কোম্পানিগুলোর প্রলোভনে তামাক তথা এ বিষ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন তারা। পার্শ্ববর্তী কামাল বলেন, তামাক চাষাবাদ করে কৃষি জমির অনেক ক্ষতি হচ্ছে। ধূমপান যেতু স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। ঠিক তেমনি তামাক স্বাশ্ব ক্ষতিকর। কৃষক মোতালেব বলেন, তামাক চাষ বন্ধ করে যদি আলু গম ভুট্টা চাষাবাদ করা যায়। তাহলে স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে রক্ষা পাবে কোমলমতি শিশুরা। তামাক চাষ যদি কম হয় আর যদি সবজি চাষ বৃদ্ধি হয় তাহলে এখানকার মানুষ সবজিসহ বিভিন্ন ফল ফলাদি সহজলভ্য হবে সাধারণ মানুষের জন্য। এই তামাকের বিষ কেবল দীর্ঘ মেয়াদে উর্বরতা হারাচ্ছে ফসলি ক্ষেত। শুধু ফসলের ক্ষেত নয় তামাক প্রক্রিয়াজাত করার জন্য যে সকল পদক্ষেপ নেয়া হয় তাতেও রয়েছে ঝুঁকি হচ্ছে পরিবেশ দূষণ । ফলে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে স্থানীয়রা। এদিকে তামাক পুরান লাখো মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছে লাখো মানুষ বলে জানালেন জেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। আর কিছুই কর্মকর্তারা জানালেন অবাক কোম্পানি গুলোর কারণে নীর উৎসাহী করা যাচ্ছে না কৃষকদের। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে রংপুরে ১৮শ ৪০হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) কৃষিবিদ মোঃ আনোয়ার হোসেন বলেন, রংপুর জেলা একটি কৃষি সমৃদ্ধ জেলা। এখানে এ বছর ১৮শ ৪০হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছে। তামাক উৎপাদন করার সময় ব্যবহার করার সময় প্রক্রিয়া জাত করণের সময় সর্বক্ষেত্রেই ক্ষতিকর প্রভাব বিদ্যমান। পরিবেশের জন্য অনেক ক্ষতিকর। কৃষকদের নানাভাবে উদ্বুদ্ধ করার চেষ্টা করছি। তিনি আরও বলেন, তামাক চাষের বিকল্প ফসল হিসেবে ভুট্টা, আলু,গম, সরিষা এগুলো আবাদ করার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। তারপরও কিছু কিছু কৃষক তামাক কোম্পানিগুলো পাশে থাকায় সঠিক দামে তামাক বিক্রয়ের নিশ্চয়তা পান। সেজন্য তারা তামাকের দিকে ঝুঁকে যাচ্ছেন। আবার অনেক কৃষক দুই এক বছর পরে বুঝতে পারে যে তাদেরও ক্ষতি হচ্ছে। পরিবেশেরও ক্ষতি হচ্ছে পাশাপাশি জমিরও উর্বরতা শক্তি নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণেই কৃষকরা আবারও ফিরে আসে। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে প্রতিনিয়তই কৃষকদের তামাক চাষ পরিহার করে অন্যান্য ফসল উৎপাদনে উৎসাহিত করার চেষ্টা করছি । ফসলি জমিতে তামাক চাষে বিশতার ঠেকাতে শিগগিরই কৃষি সহ সব বিভাগকে বাস্তবমুখী উদ্যোগ নেয়া দরকার বলে মনে করছেন রংপুরবাসি।
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |