‘আমার স্ত্রীর যোগ্যতা না জেনে কথা বলবেন না, আমরা অনেক সুখী’
|
কনটেন্ট ক্রিয়েটর ও অভিনেতা সালমান মুক্তাদির বিয়ে করেছেন। কনের নাম দিশা ইসলাম। গত ৩০ এপ্রিল বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হয়েছে। মঙ্গলবার (২ মে) ফেসবুকে বিয়ের ছবি পোস্ট করে এসব তথ্য জানান সালমান নিজেই। স্ত্রীর পরিচয় সালমান প্রকাশ না করলেও নেটদুনিয়ায় ভেসে বেড়াতে থাকে দিশার ব্যক্তিগত নানা তথ্য ও ছবি। নেটিজেনদের দাবি- সালমান মুক্তাদিরের এটি প্রথম বিয়ে হলেও, দিশার দ্বিতীয়; দুই সন্তানের জননী তিনি। তারপর দারুণ সমালোচনার মুখে পড়েন সালমান। নেটিজেনদের বড় একটি অংশ তাকে কটাক্ষ করছেন। এ পরিস্থিতিতে দিশার সঙ্গে প্রেম-বিয়ের বিস্তারিত গল্প বললেন সালমান মুক্তাদির। ফেসবুকে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন সালমান। সেখানে পুরো প্রেমের গল্প বয়ান করেছেন এই অভিনেতা। লেখার শুরুতে সালমান মুক্তাদির বলেন- আমি সবসময়ই বিয়ে করতে চেয়েছি। প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সম্পর্ক যদি বিয়ের দিকে নিয়ে যেতে না পারে, তাহলে কখনো কমিটেড সম্পর্কে জড়াতে পারি না। যদি সারা জীবনের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নাই থাকতে পারে তবে কেন কারো সঙ্গে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়া উচিত? সালমান তার প্রাক্তন প্রেমিকাদের প্রতারণার গল্প উল্লেখ করে বলেন, আমার এক প্রাক্তন আমাকে অপেক্ষায় রাখে। কিন্তু সে আমাকে বিয়ে করেনি। অন্যজন আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। কিন্তু সর্বশেষ বলে, আমার চেয়েও আরো ভালো কাউকে তুমি পাবে। এর মধ্য দিয়ে এই সম্পর্কের ইতি টেনেছিল। আরেকজন বলেছিল, বিয়ের জন্য সে প্রস্তুত নয়। অবশেষে আমি এটা শিখেছি যে, ততক্ষণ সবাই আপনাকে বিয়ে করতে চায়, যতক্ষণ আপনার সঙ্গে আলাপচারিতা চলে। সত্যি আপনাকে কেউ বিয়ে করে না। কেউ আপনাকে যথেষ্ট ভালোবাসে না। কয়েকজন নারীর সঙ্গে প্রেমের বিচ্ছেদের পর পরিচয় হয় দিশা ইসলামের সঙ্গে। তা উল্লেখ করে সালমান মুক্তাদির বলেন, এরপর আমার স্ত্রীর সঙ্গে পরিচয় হয়। শুরুতে আমরা বন্ধু ছিলাম। তারপর থেকে সে কখনো আমাকে কষ্ট দিয়ে কথা বলেনি, অসম্মান করেনি। সবসময় মানুষের সামনে আমাকে সম্মানিত করেছে, যেখানে অন্যরা আমাকে টেনে নিচে নামিয়েছে। অন্য মেয়েরা আমার সঙ্গে ছবি তুলেছে। কিন্তু আমার স্ত্রী কখনো আমার সঙ্গে ছবি তোলেনি। বরং আমার সঙ্গে কথা বলেছে, তার জীবনের গল্প বলেছে। সর্বশেষ আমরা পরস্পরের প্রতি ভালোবাসা অনুভব করি। কিন্তু সিনেমার মতো প্রত্যেকে আমাদের বিরুদ্ধে ছিল। ৭ মাস আমার স্ত্রী সংগ্রাম করেছে, নরকের মধ্য দিয়ে সময় পার করেছে। সপ্তাহ, মাস সে আমাকে একটি মেসেজ কিংবা কল করতে পারেনি। মাসের পর মাস আমি তাকে দেখতে পাইনি। আমি ভেবেছিলাম আমার জীবনে আরেকটি ব্যর্থ প্রেম যুক্ত হতে যাচ্ছে। বিশ্বাস করা কঠিন, এই মেয়ে অন্য মেয়েদের মতো নয়। ২৪ ঘণ্টার কম সময়ে দিশা ইসলামকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন সালমান মুক্তাদির। তা জানিয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘ ৭ মাস পর আমার স্ত্রীর বেস্ট ফ্রেন্ড ফোন করে আমাকে জিজ্ঞাসা করে- ‘সবকিছু ছেড়ে সে (দিশা) যদি বাচ্চাদের নিয়ে তোমার দরজায় হাজির হয়, তুমি কি তাকে গ্রহণ করবে? নাকি তোমার জন্য বোঝা হয়ে যাবে? এ কথা শুনে আমার শরীর ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল। আমি বিস্মিত হয়েছিলাম। এমন বিক্ষিপ্ত পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নিতে ২৪ ঘণ্টার কম সময় নিয়েছিলাম। এখনকার দিনে তার মতো শক্তিশালী ভালোবাসা নেই। আমি এমন কাউকে খোঁজে পাব না, যে সালমান মুক্তাদিরের মতো একটি ছেলের জন্য সবকিছু ছেড়ে আসবে। সে আমার হৃদয়-আত্মা দেখেছে। মানবিক মানুষ হিসেবে সে আমাকে শ্রদ্ধা করে। সে তার সবকিছু দিয়ে আমাকে ভালোবাসে। সে তার সবকিছু ত্যাগ করেছে শুধু আমার জন্য। এই নারী শিক্ষিত, স্মার্ট, জ্ঞানী। আর এমন একটি মেয়ে জীবনসঙ্গী হিসেবে আমাকে বেছে নিয়েছে।’ বলেন সালমান মুক্তাদির। সবার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে সালমান মুক্তাদির বলেন, ‘দয়া করে আমার স্ত্রীর প্রকৃত যোগ্যতা না জেনে তার সম্পর্কে খবর প্রকাশ বা পোস্ট শেয়ার করবেন না। সে দুর্বল, অসহায় নারী নয়। সে রানী। আমার জন্য সে তার রাজ্য ছেড়েছে। আপনি আমার স্ত্রীকে জানেন না। আপনি জানেন না সালমান মুক্তাদিরের স্ত্রী হতে কি লাগে! আল্লাহ আমাদের উপর রহমত বর্ষণ করুন এবং সবরকম নেতিবাচকতা আমাদের দূরে রাখুন। আলহামদুলিল্লাহ। আমরা অনেক সুখী।’
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |