জমকালো ভাবে শেষ হলো রক ফেস্ট ৩.০
নতুন সময় প্রতিবেদক
|
গান, সুর আর সারপ্রাইজের এক অভিনব আয়োজনে পর্দা নামলো দেশের সেরা মিউজিকাল কনসার্ট রক ফেস্ট এর তৃতীয় আসরের। এ ছিল এক জমকালো আয়োজন। সূর ও গানের মূর্ছনায় ছেয়ে ছিল শ্রোতা, ফ্যান ও পুরো আইসিসিবি এক্সপো জোন। বাংলালিংক এর পৃষ্ঠোপোশকতায় ও স্কাই ট্র্যাকারের আয়োজনে টানা তৃতীয় বারের মত রাজধানীর বসুন্ধরা কনভেনশন সিটির এক্সপো জোনে দুই দিন ব্যাপী চলে এই রক কনসার্ট। এইবার কনসার্টে প্রতিদিন ১৬টি করে সর্বমোট ৩২টি ব্যান্ড দল পারফর্ম করে। বরাবরের মতই দর্শকে কানায় কানায় পূর্ণ ছিলো পুরো আইসিসিবি এক্সপো জোন। ২দিন ব্যাপী চলা বাংলালিংক ঢাকা রক ফেস্ট ৩.০-তে যে ৩২টি ব্যান্ড পারফর্ম করে তাদের লাইনআপ হলো- আপেক্ষিক, আরেকটা রক ব্যান্ড, আর্টসেল, বাংলা ফাইভ, বাংগু বিবি, বহ্মপুত্র, ক্রিপটিক ফেইট, ফ্যান্টাসি রেল্ম, কার্নিভাল, নেমেসিস, ওউন্ড, পাওয়ার সার্জ, সোনার বাংলা সারকাস, টর্চার গোরগ্রাইন্ডার, ট্রেইনরেক, উন্মাদ, ওয়ারফেজ, বে অব বেঙ্গল, সিন, কনক্লুসন, সিভিয়ার ডিমেনশিয়া, মেকানিক্স, মেঘদল, ড্যাডস ইন দ্য পার্ক, অর্থহীন, শেফার্ডস, আফটার ম্যাথ, আরবোভাইরাস, শুভযাত্রা, ক্যাল্পিসো, সাবকনশাস ও এভোয়েড রাফা। ২৭ তারিখ আর্টসেলের আগুনঝরা পারফরম্যান্স ও সারপ্রাইজ ঝড় তুলে ফ্যানদের মাঝে। দর্শক ও শ্রোতাদের জন্য বিশেষ আয়োজনে একটি মেলোডি মিক্স গান ট্রিবিউট পরিবেশন করে। আর্টসেল সাথে ছিল মাইলসের গিটারিস্ট ইকবাল আসিফ জুয়েল। আর্টসেল তাদের ‘অনিকেত প্রান্তর’ গান দিয়ে এক মাধুর্য্যময় কনসার্টের আয়োজন শেষ করে। ২৮ তারিখ প্রথমেই মঞ্চ মাতাতে স্টেজে ওঠে ‘শেফার্ডস’। এরপরে পারফর্ম করে ‘ডাডস ইন দ্য পার্ক’। তৃতীয় পারফর্মার ছিল ‘সিন’। পরবর্তীতে ‘কনক্লুশন’ তাদের জনপ্রিয় গান ‘অডেসি’ পরিবেশন করে। এরপর একে একে মঞ্চে আসে ‘সিভিয়ার ডিমেনশিয়া’, ‘আফটার ম্যাথ’। আরবোভাইরাসের ‘হারিয়ে যাও’ গান শ্রোতাদের মাঝে ছেয়ে যায়। সারাদিন ব্যাপী এরপর একে একে শুভ যাত্রা, ক্যালিপ্সো, সাবকনশাস, বে অব বেঙ্গল, তাদের গানগুলো পরিবেশন করে। বিকেলে জনস্রোতে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে এক্সপো জোন। রক ফ্যানদের প্রিয় ব্যান্ড ‘মেকানিক্স’ তাদের ‘ধ্রুবস্বর’ গান দিয়ে শেষ করে। দিনের শেষভাগে একই তালে ফ্যান ও জনস্রোত বাড়তে থাকে তারই সাথে তাল মিলিয়ে মঞ্চে ওঠে ‘মেঘদল’। এক আবেগঘন পরিবেশে ‘হাওয়া’ গানে মুখরিত হয় চারিদিক। শিবু কুমার শীলের কন্ঠে তাল মিলিয়ে গেয়ে ওঠে হাজারো শ্রোতা। এ ছিল সুনিবেশ পরিবেশনা। বাংলালিংক ঢাকা রক ফেস্ট ৩.০ এর শেষ দিনের আয়োজনে এরপর উন্মাদনা জাগে ওয়ারফেজের আগমনে। শেষ দিনে ওয়ারফেজ ‘পূর্ণতা’, ‘অবাক ভালবাসা’, ‘হতাশা’ গান দিয়ে শ্রোতাদের মাঝে ঝড় তোলে। রক মিউজিক ফ্যানদের অন্যতম প্রিয়, যার জন্য ক্রেজ কখনো কমে না সে হলো রাফার ব্যান্ড ‘এভোয়েড রাফা’। রাফার ‘আকাশা পাঠাবো’ ও ‘কষ্ট’ এই দুই গান ফ্যানদের মাঝে উন্মাদনার জোয়ার তোলে। রক ফেস্ট ৩.০ এর শেষ দিনে সবার শেষে স্টেজে ওঠে শো-স্টপার ব্যান্ড ‘অর্থহীন’। ‘চাইতেই পারো শুনতে নতুন এক গান, করবো না যেখানে তোমায় আর অপমান’ অর্থহীনের সেই চিরচেনা গান ও বেইজ বাবা সুমনের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে পর্দা নামে বাংলালিংক ঢাকা রক ফেস্ট ৩.০ এর আসরের। বাংলালিংক ঢাকা রক ফেস্ট ৩.০ এর সর্বশেষ চমক ছিলো অর্থহীনের নতুন অ্যালবাম ‘ফিনিক্স ডায়েরি ১’ এর লিসেনিং সেশন। অর্থহীন তাদের এই নতুন অ্যালবামের ৩ টি গান এই প্রথম পরিবেশন করে রকফেস্টের দর্শকদের জন্য। এই লিসেনিং সেশন শেষে অ্যালবামটি অর্থহীন তাদের ইউটিউব চ্যানেলে মুক্তি দেয়। অনুষ্ঠানটির স্ট্রিমিং পার্টনার থাকছে জনপ্রিয় অ্যাপ টফি, পেমেন্ট পার্টনার বিকাশ, এক্সপেরিয়েন্স পার্টনার সুজুকি মটরবাইক, টিকেটিং পার্টনার গেট সেট রক, কমিউনিটি পার্টনার বাংলাদেশ ব্যান্ড মিউজিক ফোরাম কমিউনিটি, পিআর পার্টনার মিডিয়াকোয়েস্ট বাংলাদেশ, আইটি পার্টনার কোডিক্সেল। পুরো অনুষ্ঠানটি লাইভ-স্ট্রিম চলে স্ট্রিমিং পার্টনার দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় বিনোদন অ্যাপ টফিতে। বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন লিমিটেড এর ব্র্যান্ড এন্ড কমিউনিকেশন ডিরেক্টর কাজী উরফী আহমদ বলেন, 'এই নিয়ে ৩য় বারের মত রক ফেস্টের আয়োজনে জড়িত ছিল বাংলালিংক। এটা আমাদের জন্য বড় একটা প্রাপ্তি যে আমরা বরাবরের মতই এমন কনসার্ট ফ্যান ও শ্রোতাদের উপহার দিতে পেরেছি। আমাদের আয়োজন সফল হয়েছে শুধু মাত্র আমাদের ব্যান্ড তারকা দল ও ফ্যানদের জন্যই। বাংলালিংক পুরো ডিসেম্বর মাস জুড়েই মিউজিক নিয়ে অনেক কাজ করেছে। বছর শেষে আমরা এভাবে নিদারুণ কিছু কাজ করে সফল হয়েছি কনসার্টপ্রেমীদের জন্যই। আজ রক ফেস্ট ৩.০ এর শেষ দিন। টানা দুই দিন এই আয়োজন চলেছে আইসিসিবি'র এক্সপো জোনে। আগামী বছর ২০২৩-এ আমরা মিউজিক নিয়ে অনেক কাজ করা হবে। আমরা সেগুলো সময়ে সময়ে ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করবো।’ স্কাই ট্র্যাকার লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা দোজা এলান বলেন, ‘রক ব্যান্ড আর রক ফেস্ট ওতপ্রোত ভাবে জড়িত। দেশের তরুণদের মাঝে রক সংগীত অনেক বেশি জনপ্রিয়। না হবার কারণও আমি দেখি না। আমাদের এক একটি ব্যান্ড যতটা পরিশ্রম দিয়ে তাদের কাজ করে, কনসার্টে গান পরিবেশন করে সেটাই এমন ক্রেজের মূল কারণ। গত দুই কনসার্টে আমরা সাড়াজাগানো সফলতা পেয়েছি যেটার উৎসাহ দেয় শ্রোতা ও ফ্যানদের। সে কারণেই আমরা এবার বাংলালিংক ঢাকা রক ফেস্ট দুই দিন ব্যাপী কনসার্টে সাজিয়েছিলাম এবং দিনের শেষে এটাই বলতে পারি আমরা সফল। বাংলাদেশ রক মিউজিকের জন্য একটি প্লাটফর্ম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করে চলেছি। জানি এটা কঠিন কাজ এবং ঢাকা রক ফেস্টে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। এটি আমার জন্য এবং বিশ্বজুড়ে সংগীতশিল্পীদের প্রতি যথাযথ সম্মান ও সংগীতের প্রতি আমার ভালবাসার জন্য। আমার পাগলামিকে সবসময় সমর্থন করার জন্য এবং রক ফেস্ট সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। আমাদের টিম, ব্যান্ডদল ও শ্রোতাদের ছাড়া এটি সম্ভব হতো না।’
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |