| 
			
							
			
			 'প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ' এর তালিকার শীর্ষে নেপাল, বাংলাদেশের অবস্থান কত? 
			
			নতুন সময় ডেস্ক 
			
			
			 | 
		
			
			![]() 'প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ' এর তালিকার শীর্ষে নেপাল, বাংলাদেশের অবস্থান কত? ৫৭হাজার মানুষের ওপর পরিচালিত ৬১টি দেশের এই গবেষণায় ব্রিটেনের স্থান ৫৫তম। গবেষণায় সামাজিক, অর্থনৈতিক, ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক নানা দিক থেকে মানুষ কীভাবে প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে তা পরীক্ষা করা হয়েছে। শীর্ষে নেপাল, বাংলাদেশ শীর্ষ পাঁচে জরিপ অনুযায়ী, বিশ্বের সবচেয়ে প্রকৃতির সাথে যুক্ত দেশ হলো নেপাল। এরপরই রয়েছে ইরান, দক্ষিণ আফ্রিকা, বাংলাদেশ ও নাইজেরিয়া।  ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে ক্রোয়েশিয়া ও বুলগেরিয়া শীর্ষ দশের মধ্যে থাকলেও, ফ্রান্সের অবস্থান ১৯তম। ব্রিটেনের চেয়েও কম প্রকৃতি-সংযুক্ত দেশগুলোর মধ্যে রয়েছে নেদারল্যান্ডস, ইংরেজিভাষী কানাডা, জার্মানি, ইস্রায়েল, জাপান এবং স্পেন, যেখানে স্পেন সর্বনিম্ন স্থানে অবস্থান করছে। 'নেচার কানেক্টেডনেস' বা প্রকৃতির সঙ্গে সংযোগ একটি মনস্তাত্ত্বিক ধারণা, যা একজন ব্যক্তির অন্যান্য প্রজাতির সঙ্গে সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা পরিমাপ করে।  গবেষণায় দেখা গেছে, যারা প্রকৃতির সঙ্গে বেশি যুক্ত, তারা সাধারণত মানসিক ও শারীরিকভাবে ভালো থাকেন এবং পরিবেশবান্ধব আচরণ করার সম্ভাবনা বেশি থাকে। অন্যদিকে, কম প্রাকৃতিক সংযোগকে জীববৈচিত্র্য হ্রাসের তিনটি মূল কারণের মধ্যে একটি হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০২৪ সালের 'জার্নাল অফ এনভায়রনমেন্টাল সাইকোলজি'তে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়েছে, সমাজে 'আধ্যাত্মিকতা' বা ধর্ম ও বিশ্বাসের গুরুত্ব প্রকৃতির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের একটি সূচক। অর্থাৎ, যেখানে ধর্মকে বিজ্ঞান বা আধুনিকতার চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়, সেখানে প্রকৃতির সাথে সংযোগের মাত্রা তুলনামূলকভাবে বেশি।  এর বিপরীতে, বিশ্বব্যাংকের 'ইজ অব ডুয়িং বিজনেস' সূচকের সঙ্গে প্রকৃতি সংযোগের নেতিবাচক সম্পর্ক দেখা গেছে; যেখানে ব্যবসায়িক সুবিধা বেশি, সেখানে প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের ঘনিষ্ঠতা কম। ডারবি বিশ্ববিদ্যালয়ের 'নেচার কানেক্টেডনেস' অধ্যাপক মাইলস রিচার্ডসন বলেন, 'প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্ক শুধুই আমাদের কাজকর্ম নয়; এটি আমাদের অনুভূতি, চিন্তা এবং জীবজগতে আমাদের অবস্থানের মূল্যায়নের সঙ্গে সম্পর্কিত।'  তিনি আরও বলেন, ব্রিটেনের এই তালিকায় এত নিচে অবস্থান তার কাছে অবাক হওয়ার মতো নয়। গবেষণায় দেখা গেছে, এর বাস্তব কারণগুলো হলো শহরায়ণ, গড় আয়ের মাত্রা এবং ইন্টারনেট ব্যবহারের উচ্চ মাত্রা। আধুনিক জীবনযাত্রা, উচ্চ আয় এবং প্রযুক্তির ওপর নির্ভরশীলতা মানুষকে প্রকৃতি থেকে দূরে সরিয়ে দিচ্ছে। অধ্যাপক রিচার্ডসন উল্লেখ করেন, 'আমরা একটি বৈজ্ঞানিক, অর্থনৈতিক ও যৌক্তিক সমাজে পরিণত হয়েছি। এতে অনেক সুবিধা এসেছে, কিন্তু এর সঙ্গে অপ্রত্যাশিত সমস্যাগুলোর ভারসাম্য কীভাবে রাখব তা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তির জগতে কীভাবে প্রাকৃতিক চিন্তাভাবনাকে পুনঃএকীভূত করা যায়?' প্রকৃতির সাথে সংযোগ বাড়াতে ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিসে মানসিক ও জনস্বাস্থ্য চিকিৎসায় প্রাকৃতিক পরিবেশের ব্যবহার বৃদ্ধি, আইনে প্রকৃতির অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং ব্যবসায়িক সিদ্ধান্তগ্রহণে প্রকৃতিকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছেন রিচার্ডসন।  চার্চ অব ইংল্যান্ডের পরিবেশ বিষয়ক প্রধান নরউইচের বিশপ গ্রাহাম উশার বলেন, 'আমরা দীর্ঘদিন ধরে জানি প্রকৃতিতে সময় কাটানো শরীর, মন ও আত্মার জন্য ভালো। আমরা যা লক্ষ্য করি তা আমরা ভালোবাসতে শুরু করি, যা ভালোবাসি তা আমরা সংরক্ষণ করতে চাই। এটি শিশুদের মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া উচিত, এবং এজন্য 'ফরেস্ট স্কুল' বা 'ওয়াইল্ড চার্চ' মতো কার্যক্রম মানুষ ও প্রকৃতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ।'  অধ্যাপক রিচার্ডসন জোর দিয়ে বলেন, শহরাঞ্চলে শুধু পার্ক স্থাপনই যথেষ্ট নয়, 'কীভাবে আমরা শহরের প্রকৃতিকে পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলব? এটি নিয়ে আরও গভীরভাবে কাজ করতে হবে।'   | 
		
| পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ | 
