ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
শুক্রবার ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ১৪ কার্তিক ১৪৩২
সোনিয়া বশিরের প্রতারণায় স্টার্টআপ খাতে বিপর্যয়, বিপু-তারানা হালিমের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে
নতুন সময় প্রতিবেদক
প্রকাশ: Thursday, 30 October, 2025, 9:17 PM

সোনিয়া বশিরের প্রতারণায় স্টার্টআপ খাতে বিপর্যয়, বিপু-তারানা হালিমের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে

সোনিয়া বশিরের প্রতারণায় স্টার্টআপ খাতে বিপর্যয়, বিপু-তারানা হালিমের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে

বাংলাদেশের স্টার্টআপ খাতে এক সময়ের আলোচিত নাম সোনিয়া বশির কবির এখন প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত। তার নেতৃত্বাধীন প্রতিষ্ঠান এসবিকে টেক ভেঞ্চারস লিমিটেড-এর মাধ্যমে কোটি টাকার অনিয়মের অভিযোগে তদন্ত চলছে।

পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ইতোমধ্যে আদালতে প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছে, যেখানে সোনিয়া বশির ও তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিরুদ্ধে প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গ ও বিদেশে অর্থ পাচারের প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ রয়েছে।

বিনিয়োগ না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত স্টার্টআপগুলো
অভিযোগে বলা হয়, সরকারের স্টার্টআপ উন্নয়ন তহবিল থেকে অর্থ পেলেও এসবিকে টেক ভেঞ্চারস তা উদ্যোক্তাদের মধ্যে বিতরণ করেনি। এতে মার্কোপোলো, ফসল, যাত্রী, টেন মিনিট স্কুল, অরোগ্য ও সলশেয়ারসহ বেশ কয়েকটি সম্ভাবনাময় স্টার্টআপ আর্থিক সংকটে পড়ে।

একাধিক উদ্যোক্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটি বারবার “বিনিয়োগ অনুমোদনের অপেক্ষায়” এমন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ করেছে। একজন উদ্যোক্তা বলেন, তিনি বিদেশি বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, কিন্তু পরে দেখা যায়, কাগজপত্রই মিথ্যা।

রাজনৈতিক যোগাযোগের সূত্রে
তদন্তে জানা গেছে, এসবিকে টেক ভেঞ্চারসের গুলশানের অফিস ছিল সাবেক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের মালিকানাধীন ভবনে। এতে তাঁর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ সংশ্লিষ্টতা ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এছাড়া, সাবেক বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপুর সঙ্গেও এসবিকের আর্থিক যোগাযোগের প্রমাণ অনুসন্ধান করছে তদন্ত সংস্থা। কিছু আর্থিক লেনদেন হুন্ডির মাধ্যমে হয়েছে কি না— তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মামলা ও আর্থিক প্রমাণ
বিনিয়োগকারী জেরিন চৌধুরী দণ্ডবিধির ৪০৬ ও ৪২০ ধারায় মামলা করেছেন, যেখানে তিনি দাবি করেন, ২০২১–২২ সালে তিন দফায় ১ কোটি ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করার পরও কোনো অর্থ ফেরত পাননি। পিবিআই জানায়, ব্যাংক স্টেটমেন্ট, ই-মেইল ও চুক্তিপত্র থেকে প্রতারণার প্রমাণ পাওয়া গেছে।

অর্থ পাচারের অভিযোগ
তদন্তে উঠে এসেছে, এসবিকে টেক ভেঞ্চারস দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে প্রায় ২৭ কোটি টাকা গ্রহণ করে, যা ফেরত দেয়নি। কিছু অর্থ বিদেশে স্থানান্তর ও সম্পদ ক্রয়ে ব্যবহৃত হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। অর্থ পাচার প্রতিরোধ ইউনিট (বিএফআইইউ) ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডও বিষয়টি তদন্ত করছে।

স্টার্টআপ খাতে আস্থার সংকট
মার্কোপোলো’র প্রতিষ্ঠাতা তাসফিয়া তাসবিন বলেন, সোনিয়া ইচ্ছাকৃতভাবে স্টার্টআপগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছেন। এতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এখন বাংলাদেশকে অবিশ্বস্ত মনে করছে।অন্য উদ্যোক্তারা মনে করেন, এই ঘটনা দেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের প্রতি আন্তর্জাতিক আস্থা নষ্ট করছে।

আইনি বিশ্লেষণ
আইন বিশেষজ্ঞদের মতে, অভিযোগ প্রমাণিত হলে সোনিয়া বশিরের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ছাড়াও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের আওতায় ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব। এতে বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দের পথও খুলবে।

উল্লেখ্য: একসময় আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি ছিলেন সোনিয়া বশির কবির। এখন তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ সেই সুনামকে গভীর সংকটে ফেলেছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ঘটনা শুধু একটি ব্যক্তিগত অপরাধ নয়— এটি বাংলাদেশের উদ্ভাবনী অর্থনীতি ও তরুণ উদ্যোক্তা সংস্কৃতির প্রতি আস্থার বড় আঘাত।

সোনিয়া বশির কবির এর সাথে হোয়াটসঅ্যাপে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।   

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক : নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি: এমদাদ আহমেদ | প্রকাশক : প্রবাসী মাল্টিমিডিয়া কমিউনিকেশন লি.-এর পক্ষে কাজী তোফায়েল আহম্মদ | কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status