চলতি ডিসেম্বরে বেরোবির সমাবর্তন, ছাত্র সংসদ নির্বাচনও হবে সময়মাফিক
রুশাইদ আহমেদ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়
|
![]() চলতি ডিসেম্বরে বেরোবির সমাবর্তন, ছাত্র সংসদ নির্বাচনও হবে সময়মাফিক মঙ্গলবার (৭ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি। গেজেট হাতে না থাকলেও, ছাত্র সংসদ নির্বাচন হবে সময়মাফিক বেরোবি উপাচার্য বলেন, “আমরা খুব শিগগিরই গেজেট পাবো। ছাত্র সংসদ নির্বাচন একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া, কারণ এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে সংযুক্ত নেই। তবে আমি আমার প্রিয় বেরোবিকে আশ্বস্ত করছি— স্বায়ত্তশাসিত চারটি বিশ্ববিদ্যালয় বাদে প্রথম যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রসংসদ নির্বাচন হবে, সেটি হবে বেরোবি।” তিনি আরও জানান, “পূর্বঘোষিত ৩০ অক্টোবরের মধ্যে ছাত্রসংসদ নির্বাচন আয়োজনের লক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে ছাত্রসংসদ অন্তর্ভুক্তির প্রক্রিয়া চলছে। গত ৫ ও ৬ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সভায় বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। কিছু অসঙ্গতি সংশোধন করে আজই প্রস্তাবটি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। পরে রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের মাধ্যমে তা বিশ্ববিদ্যালয় আইনে সংযুক্ত করা হবে।” সমাবর্তন পিছিয়ে ডিসেম্বরে এ সময়, সমাবর্তন প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, “অসংখ্য জটিলতা থাকা সত্ত্বেও সমাবর্তন আয়োজনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আয়োজন হতে যাচ্ছে।” তিনি আরও জানান, “আগে নভেম্বরে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা ছিল। তবে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত আইন উপদেষ্টা প্রফেসর ড. আসিফ নজরুল ব্যস্ততার কারণে অপারগতা প্রকাশ করায় কিছুটা অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। পরবর্তীতে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনকে আমন্ত্রণ জানালে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার সম্মতি দেন। এ কারণেই সময় কিছুটা পিছিয়ে ২০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে।” উপাচার্য বলেন, “আমি আর মুখের কথা বলব না; এবার কাজের মাধ্যমে প্রমাণ করব—কাজ কত প্রকার ও কীভাবে হয়।” ইউজিসির খণ্ডকালীন সদস্য হলো বেরোবি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আরও জানান, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) খণ্ডকালীন সদস্য হিসেবে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় মনোনীত হয়েছে। এর মধ্যে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। “এর মাধ্যমে আমাদের মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়নে আরেক ধাপ অগ্রগতি হবে। আশা করছি, খুব দ্রুতই বেরোবিকে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর করতে পারব,” দাবি করেন শওকাত আলী। ক্যাফেটেরিয়ার দ্বিতীয় তলায় হবে সাময়িক অডিটোরিয়াম প্রতিষ্ঠা লগ্ন থেকেই বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই কোনো স্থায়ী অডিটোরিয়াম। ফলে কোনো অনুষ্ঠান আয়োজনের দরকার পড়লে, তা স্বাধীনতা স্মারক মাঠ, মিডিয়া চত্বর, কিংবা একাডেমিক ভবনগুলো গুটিকয়েক গ্যালারি রুমে করা হয়। তাই বিষয়টি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটি স্থায়ী অডিটোরিয়াম স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছেন শিক্ষার্থীরা। এ প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, “রিসার্চ ইনস্টিটিউট ভবনেই অডিটোরিয়াম থাকবে। সেটি নির্মাণ না হওয়া পর্যন্ত ক্যাফেটেরিয়ার দ্বিতীয় তলায় সাময়িকভাবে অডিটোরিয়াম স্থাপন করা হবে।” বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী নিয়ে যা জানালেন উপাচার্য আগামী ১২ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বেরোবি উপাচার্য প্রফেসর ডঃ মোঃ শওকাত আলী বলেন, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও ব্র্যাকের সিইও ড. হোসেন জিল্লুর রহমান, উদ্বোধক হিসেবে শিক্ষাবিদ ড. রেজাউল হক এবং প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বেরোবির প্রতিষ্ঠাকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. এম. লুৎফর রহমান। এ ছাড়াও হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যবৃন্দ ও রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার উপস্থিত থাকার সম্মতি জানিয়েছেন। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন সাংস্কৃতিক আয়োজন প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, “প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের পরিকল্পনা থাকলেও বাজেট ঘাটতি ও অন্যান্য প্রতিবন্ধকতার কারণে আপাতত তা সম্ভব হচ্ছে না। তবে স্পনসর পাওয়া গেলে এবং শিল্পীদের সময়সূচি মিলে গেলে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করা হবে।” সামাজিক মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুণ্ন রাখার আহ্বান সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম অক্ষুণ্ণ রাখার আহ্বান জানিয়ে বেরোবি উপাচার্য বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এখন সবার হাতের মুঠোয়। সবাই এটাকপ দেখেন এবং অনুসরণ করেন। তাই এতে এমন কোনো ধরনের প্রচারণা থেকে সকলের বিরত থাকা উচিত, যাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ন হয়। সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে বেরোবির ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তুলতে কাজ করারও আহ্বান জানান তিনি। উক্ত সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. হারুন অর রশিদ, প্রক্টর ড. ফেরদৌস রহমান, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মো. ইলিয়াছ প্রামানিক এবং সমাবর্তন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. তাজুল ইসলাম। |
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |