ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
আজও ব্যবহার হচ্ছে ব্রিটিশ আমলের ঐতিহ্যবাহী ইদারা
জাহিদ খান, নাগেশ্বরী
প্রকাশ: Thursday, 28 November, 2024, 1:40 PM

আজও ব্যবহার হচ্ছে ব্রিটিশ আমলের ঐতিহ্যবাহী ইদারা

আজও ব্যবহার হচ্ছে ব্রিটিশ আমলের ঐতিহ্যবাহী ইদারা

বিলুপ্ত হওয়া প্রাচীন গ্রামবাংলার ঐতিহ্যগুলোর মধ্যে অন্যতম হ‌চ্ছে ইদারা, যা এক সময় সুপেয় পানির একমাত্র উৎস হিসেবে প্রচলিত ছিলো বর্তমান আধু‌নিক প্রযুক্তির যুগে গ্রামবাংলায় বিকেল বেলা  মা-বোনের কলসি কো‌লে ইদারা থেকে পা‌নি আনার চিত্র তেমন একটা দেখা না গেলেও কু‌ড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপ‌জেলায় আজও দেখা মিল‌ছে সেই বাস্তব চিত্র।

কু‌ড়িগ্রা‌ম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার সা‌বেক দা‌সিয়ারছড়া ছিটমহল সড়‌কে আজোয়াটারী গ্রামে ব্রিটিশ কা‌লের সাক্ষী এই অঞ্চ‌লের ঐতিহ্যবাহী সচল  ইদারাটি-ই ছিল এই গ্রামের মানুষের সুপেয় খাবার পানির একমাত্র উৎস।এই গ্রা‌মের প্রবীন ব‌্যক্তি মোগবুল হো‌সেন জানান,এই এলাকায় ভোলা মামুদ না‌মে একজন গোয়ালা ছি‌লেন।‌তি‌নি সর্বদা দু‌ধে পা‌নি মি‌শি‌য়ে বি‌ক্রি কর‌তেন। দু‌ধে পা‌নি মিশা‌নো মহাপাপ বিষয়‌টি জান‌তে পে‌রে তি‌নি ১৩১৩ সা‌লে পাপ মোছ‌নের আশায় এই ইঁদারাটি নির্মান ক‌রেন। ১৩৫৭ সা‌লে  ইদারা‌টি প্রথম সংস্কার করা হয়। পরবর্তী‌তে বাংলা‌দেশ ভারত ছিটমহল বি‌নিম‌য়ের সময় প্রশাসনের উ‌দ্যেগে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যকে ধ‌রে রাখ‌তে সরকা‌রি ভা‌বে ২০১৭-১৮ অর্থ বছ‌রে এল‌ জি এস‌ পি ৩ এর অর্থায়‌নে ইঁদারারটি সংস্কার করা হয়।২০-২৫ ফুট গোলাকার ও অনন্ত ৫০-৬০ ফুট নিচ পর্যন্ত মাটি খুড়ে এই ইদারা তৈরি করা হয়ে‌ছে। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য ধ‌রে রাখ‌তে এই  কুয়া‌টির উপর টি‌নের ছাউ‌নি নির্মান সহ গোড়া বাধাঁই করে লোকজ‌নের বসার ব‌্যবস্থা করা  হ‌য়ে‌ছে। এই ইদারাটি এখন এই এলাকার কা‌লের সাক্ষী হ‌য়ে দা‌ড়ি‌য়ে র‌য়ে‌ছে।

এই এলাকার ওয়ার্ড সদস‌্য সাইফুর রহমান জানান, আমার বাপ দাদার সময় থে‌কে এই ইদারার পা‌নি সংগ্রহ ক‌রে খাওয়াসহ গৃহস্থালির সকল কা‌জে ব‌্যবহার করে এই এলাকার মানুষ।এমন কি ইদারারটি থে‌কে ছোট ছোট বালক বা‌লিকারাও সহ‌জে পা‌নি তুল‌তে পা‌রে।বর্তমানে প্রায় সকলের বাড়ী‌তে টিউব‌য়েল থাকার পরে ও আয়রন মুক্ত সু‌পেয় পা‌নির একমাত্র উৎস হিসা‌বে আমরা এই ইদারাটি‌কে ব‌্যবহার করি‌। ইদারাটির চা‌রি‌দি‌কে বসার ব‌্যবস্থা করায় লোকজন অবসর সময় কাটান।

ইদারা থে‌কে পা‌নি তু‌লে কল‌সি ক‌রে নি‌য়ে যে‌তে যে‌তে সোমা নামের এক গৃহবধু ব‌লেন ,এই ইদারার পা‌নি আয়রন মুক্ত হওয়ায় ভাত তরকা‌রির রং ভাল হয় তাই একটু কষ্ট হ‌লেও আমরা এই পা‌নি ব‌্যবহার ক‌রি।এই ইদারার পানি স্বচ্ছ ও ঠান্ডা।

সা‌বেক ছিটমহল বি‌নিময় সমন্বয়ক আলতাব হোসেন বলেন, ১৩১৩ সা‌লে ছিটমহল এবং বাংলার সীমা‌ন্তে অব‌স্থিত এই ইদারাটি কা‌লের সাক্ষী হ‌য়ে দা‌ড়ি‌য়ে আছে। ইদারাটি দেখ‌তে দুরদুরান্ত থে‌কে লোকজন আসে।এটা আমা‌দের গ্রা‌মের ঐতিহ্য।এই ইদারার পানি সবসময় ঠাণ্ডা থাকে। ইদারার উপর ছাউ‌নিসহ রক্ষণাবেক্ষণ করায় পানি নষ্ট হয় না।

উপ‌জেলার প্রকৌশলী মামুনুর রহমান জানান,গ্রামবাংলার প্রাচীন ঐতিহ্যবাহী ইদারাগুলো কালের আবর্তে হারিয়ে গেছে। যা এখন শুধুই স্মৃতি।সরকা‌রি অর্থ দি‌য়ে সংস্কার ‌করায় ব্রিটিশ কালের সাক্ষী হ‌য়ে দা‌ড়ি‌য়ে থাকা ঐতিহ্যবাহী ইদারাটি আজও ব‌্যবহার হ‌চ্ছে।এই এলাকার মানুষের সুপেয় পানির চাহিদা পূরণ ক‌রছে এই ইদারা‌টি। 

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status