লালমনিরহাটে চাকরীচ্যুত বিডিআর সদস্যদের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত
মিজানুর রহমান মিলন , লালমনিরহাট
প্রকাশ: Wednesday, 27 November, 2024, 4:21 PM
লালমনিরহাটে "শান্তি, ঐক্য, অধিকার" স্লোগান নিয়ে ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ সালে পরিকল্পিত পিলখানা হত্যাকান্ডের ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪জনের হত্যার বিচারের দাবিতে সুষ্ঠ তদন্ত ও নিরপরাধ জেলবন্দি বিডিআর সদস্যদের মুক্তি এবং চাকুরীচ্যুত সকল বিডিআর সদস্যদের চাকুরীতে পুনর্বহালের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ১১টায় লালমনিরহাট জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র মিশন মোড় গোল চত্ত্বরে বিডিআর কল্যাণ পরিষদ লালমনিরহাট জেলার আয়োজনে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
বিডিআর কল্যাণ পরিষদ লালমনিরহাট জেলা শাখার সভাপতি মোঃ মনিরুল ইসলাম (রিপন)-এঁর সভাপতিত্বে এই মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন সিপাহী সাইফুল ইসলাম, মনির হোসেন, দিলপিয়ার রহমান, শফিকুল ইসলাম, লায়েক আতিকুল ইসলাম, হাবিলদার আফজাল হোসেন, সিপাহী নুরুজামান, হাবিলদার শচীন্দ্র নাথ রায়ের সহধর্মিণী বিউটি রানী রায় প্রমুখ। এসময় বিডিআর কল্যাণ পরিষদ লালমনিরহাট জেলা শাখার সদস্যবৃন্দ ও বিডিআর সদস্যবৃন্দ এবং পরিবারের সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
বিডিআর কল্যাণ পরিষদ লালমনিরহাটের জেসিও মোঃ আব্দুস ছামাদ স্বাক্ষরিত প্রেস রিলিজে উল্লেখ করেন যে, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সকল শহীদ, পিলখানা হত্যাকান্ডে শহীদ ও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।
২০০৯ সালে ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারী পরিকল্পিত হত্যাকান্ডের সুষ্ঠ তদন্ত ও চাকুরীচ্যুত সকল বিডিআর সদসদের চাকুরীতে পূর্নবহাল দাবিতে মানববন্ধন। ২০০৯ইং সালে পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনায় চাকুরীচ্যুত বিডিআর সদস্যগণ তৎকালীন ফ্যাসিস্ট সরকার প্রভু দেশকে সস্তুষ্ট করতে সেনাবাহিনী সমর্থ ক্ষুন্ন করতে বাংলাদেশ রাইফেলসকে ধ্বংস করার জন্য প্রতিশোধ স্পৃহা থেকে এবং ক্ষমতাকে সুদীর্ঘ করতে নীল নকসার অংশ হিসাবে সুপরিকল্পিতভাবে ষড়যন্ত্র পূর্বক পিলখানা হত্যাকান্ড সংঘটিত করে। উক্ত হত্যাকান্ডে ৫৭জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪জন শাহাদত বরণ করে। ঘটনার পরবর্তী ফ্যাসিষ্ট সরকার প্রহসনের বিচারের নামে আলামত ধ্বংস ও নিরীহ ৫৪জন বিডিআর সদস্যকে নিরাপত্তা হেফাজতে হত্যা করে। পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনাকে তথাকথিত বিদ্রোহ সঙ্গায়িত করে ১৮৫২০জন বিডিআরকে চাকুরীচ্যুতসহ বিভিন্ন মেয়াদে শাস্তি প্রদান করে। আজ হাজার হাজার বিডিআর সদস্য ও তাদের পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাই অন্তবর্তী সরকারের নিকট আকুল আবেদন জানাচ্ছি।
১। ২০০৯ সালে ২৫-২৬ ফ্রেব্রুয়ারী বিডিআর পিলখানা সংঘটিত সুপরিকল্পিত হত্যাকান্ডে তথাকথিত বিদ্রোহ সঙ্গায়িত না করে পরিকল্পিত হত্যাকান্ড হিসাবে আখ্যায়িত করতে হবে। ২। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে গঠিত সকল প্রহসনের বিশেষ আদালতকে নির্বাহী আদেশে বাতিল করতে হবে। ৩। চাকুরীচ্যুত সকল পদবির বিডিআর সদস্যকে সুযোগ সুবিধাসহ চাকুরীতে পুনঃবহাল করতে হবে। 8। স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করতে হবে। ৫। পিলখানা হত্যাকান্ডে শাহদত বরণকারী ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪জনকে শহীদ মর্যদা দিতে হবে। ৬। পিলখানা হত্যাকান্ডের ঘটনা পরবর্তী তদন্ত জিজ্ঞাসাবাদে নিরাপত্তা হেফাজতে যে সকল নীরিহ বিডিআর সদস্যদের নির্যাতন পূর্বক হত্যা করা হয়েছে তাদের তালিকা প্রকাশ পূর্বক মৃত সকল পদবীর পরিবারকে ক্ষতি পুরনসহ পুর্নবাসন করতে হবে। ৭। বিশেষ আদালত কর্তৃক বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ভোগ শেষকারি বিডিআর সদস্যগণ যারা প্রহসনের বিস্ফোরক মামলার দীর্ঘ ১৬ বছর যাবৎ কারা অন্তরীন আছে তাদের কে জামিন অথবা মামলা হতে অব্যাহতি পূর্বক মুক্ত করতে হবে।
উল্লেখ্য যে, দীর্ঘ ১৫ বছর যাবৎ সারাবাংলাদেশে চাকরীচ্যুত বিডিআর সদস্যগণ ও তাদের পরিবারবর্গ রাষ্ট্রবিরোধী বা সন্ত্রাসী কোন সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত বা এধরণের কোনো কর্মকাণ্ডের সাথে তার যুক্ত হয়নি বলেও মানববন্ধনে বক্তারা উল্লেখ করেন।