কোটাবিরোধী আন্দোলন নিয়ে মাঠে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এই আন্দোলনের সমর্থনে সম্প্রতি ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে সংস্কার চেয়েছিলেন জনপ্রিয় এডটেক প্ল্যাটফর্ম টেন মিনিট স্কুলের আয়মান সাদিক। একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের হামলার পর প্রতিবাদ জানান তিনি।
এদিকে রহস্যজনকভাবে টেন মিনিট স্কুলের ৫ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতাধীন ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান স্টার্টআপ বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) ফেসবুকে এক পোস্টে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, টেন মিনিট স্কুল-এর জন্য ৫ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব স্টার্টআপ বাংলাদেশ লিমিটেডের পক্ষ থেকে বাতিল করা হলো।
কী কারণে এমন হঠাৎ এমন সিদ্ধান্ত তা পরিষ্কার করেনি প্রতিমন্ত্রী বা আইসিটি ডিভিশন।
এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে প্রতিমন্ত্রী পলক, স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামি আহমেদ এবং আয়মান সাদিকের সঙ্গে কয়েক দফা যোগাযোগের চেষ্টা করেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
তবে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক সভায়প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন, বরাদ্দ বাতিলের কারণ প্রকাশ্যে জানানো চুক্তির বরখেলাপ।
তিনি বলেন, যেসব কারণ দেখিয়ে বন্ধ করা হয়েছে বলে খবর ছড়াচ্ছে, সেই ভিত্তিতে বলবো, কেউ যদি বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু নিয়ে বিতর্ক তোলে, এসব আদর্শের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়, সেখানে সরকার ব্যবস্থা নেবেই।
তবে বরাদ্দ বাতিল হওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বইছে সমালোচনার ঝড়। যেখানে নেটিজেনরা বলছেন, আয়মান সাদিক কোটা সংস্কার আন্দোলনে সমর্থন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার নিন্দা জানানোয় এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্টার্টআপ বাংলাদেশ।
ডিজিটাল মাধ্যমে শিক্ষাদানের উদ্দেশ্য নিয়ে ২০১৫ সালে ‘টেন মিনিট স্কুল’ গড়ে তোলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব আয়মান সাদিক। প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশে-বিদেশে ব্যাপক সুনাম অর্জন করে প্রতিষ্ঠানটি। সরকারের বিভিন্ন অনুষ্ঠান বিশেষ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের বিভিন্ন আয়োজনে নিয়মিত দেখা যায় আয়মান সাদিককে। আয়মান সাদিক এবং টেন মিনিট স্কুলের প্রশংসা করে বিভিন্ন সময় বক্তব্যও দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।
ফেসবুকে যা লিখেছিলেন আয়মান সাদিক:
গতকাল ঢাবিতে ছাত্রলীগের হামলার পর আয়মান সাদিক লেখেন, ‘রক্তাক্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়! আমার ক্যাম্পাসে রক্ত কেন? প্রতিবাদ জানাই।’
একই দিন টেন মিনিট স্কুলের প্রোফাইলের ছবিও পরিবর্তন করা হয়েছে যেখানে একটি কালো রঙের ছবি লাগানো হয়েছে।
কিছু না লিখলেও একই ছবি নিজের কভার ফটো হিসেবে পোস্ট করেন আয়মান সাদিকের সহধর্মিণী এবং টেন মিনিট স্কুলের প্রশিক্ষক মুনজেরিন শহিদ। সোমবার (১৫ জুলাই) মধ্যরাতে এ পোস্ট করেন তিনি।
এর আগে গত ১৪ জুলাই আয়মান সাদিক কোটা সংস্কার চেয়ে লিখেন- ‘কোটা সংস্কার চাই। মেধা হোক সবচেয়ে বড় কোটা’
এসব কারণে অনেকে মনে করছেন, আয়মান সাদিক কোটা সংস্কারের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় টেন মিনিট স্কুলের বরাদ্দ বাতিল করা হয়েছে।