মহাসড়কে কাজ চলমান থাকলেও ভোগান্তি না হওয়ার আশা রংপুরবাসীর
আব্দুর রহমান রাসেল, রংপুর
প্রকাশ: Wednesday, 3 April, 2024, 6:05 PM
ঢাকা রংপুর মহাসড়কের চিত্র এটি। আর মাত্র ঈদের কয়েকদিন বাকি থাকলেও এখনো চলছে মহাসড়কে উন্নয়নের কাজ। মহাসড়কে কাজ এখনো চলমান থাকলেও ভোগান্তি না হওয়ার আশা গাড়ি চালকদের। দমদমা এলাকায় চার লেনে উন্নীত চলমান কাজ থাকায় এবার ঈদ যাত্রা কেমন হবে তা নিয়ে কিছুটা আশঙ্কায় পড়েছে রংপুরবাসী।
একই অবস্থা রংপুরের পায়রা বন্দের ইসলামপুর এলাকার। মহাসড়কে স্বয়ংক্রিয় টোল প্লাজার নির্মাণ কাজ এখনো চলছে। কোথাও কোথাও এক লেনে গাড়ি চলাচল করছে ধীরগতিতে। তবে একপাশের রাস্তা বন্ধ করে চলছে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। এছাড়াও রংপুরের শঠিবাড়ী ও বড়দারগায় ও ভারপ্রাশি নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে ।
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ীসহ তিনটি স্থানে নির্মাণ কাজ এখনো শুরু হয়নি। সেখানে চলমান অন্যান্য অবকাঠামো নির্মাণ কাজ। প্রতিবারের মতো এবারও বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ঢাকা উত্তরের ঈদযাত্রায় ভোগান্তির সংখ্যা দেখছেন যানবাহন সংশ্লিষ্টরা। তাদের দূর ভাবনার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বগুড়া থেকে রংপুর পর্যন্ত অন্তত ২০ টি স্থান। এসব স্থানে মহাসড়ক সম্প্রসারণ এবং অভার পাঁচ ও আন্ডার পাঁচ নির্মাণের কারণে ধীরগতিতে এক লেনে চলাচল করছে যানবাহন।
সাইফুর রহমান, আলতাফ হোসেন,রমজান আলীসহ কয়েকজন বাসের যাত্রী বলেন, ঈদের ভেতর রাস্তায় অনেক সময় ধরে থাকতে হতো এবং সেখানে অনেক গাড়িতে থাকা যাত্রীদেরও রাস্তায় ঈদ করতে হয়। এবারে ঈদে তেমন কোন যানজট না হলেও মহাসড়কের কাজ চলমান থাকায় কিছুটা ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ঘর মুখী যাত্রীদের।
শুধু তাই নয় এলেঙ্গা থেকে স্টেশন পর্যন্ত এক লাইনে রাস্তা চালু থাকায় এবার এই যাত্রায় অনেকটা ভোগান্তিতে পড়তে হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
ঢাকা মহাসড়কে রংপুর পর্যন্ত সাধারণ সময়ের মতো প্রতিদিন ২০ হাজারের মতো যানবাহন চলাচল করে। ঈদ ঘিরে এবারে সংখ্যা ছাড়িয়ে যাবে পঞ্চাশ হাজার যানবাহন । ফলে বাড়তি গাড়ির চাপের পাশাপাশি সড়ক উন্নয়নের কাজ ধীরগতিতে চলার কারণে থাকছেই পুরনো ভোগান্তির আশঙ্কা।
মোখলেসুর রহমান, সোনা মিয়া, মমিনুল ইসলামসহ কয়েকজন গাড়ি চালক বলেন, অন্যান্য বারের মতো এবার ঈদে বগুড়া থেকে গোবিন্দগঞ্জ ও পলাশবাড়ি পর্যন্ত যানজট তেমন হবে না। পুলিশ প্রশাসন যেভাবে তৎপরতা রয়েছে। ঈদ পর্যন্ত যদি এভাবে পুলিশের নজরদারি থাকে তাহলে আমাদের গাড়ি চালাতে সুবিধা হবে। পাশাপাশি যাত্রীদের ভোগান্তি কমবে। গাড়ি চালক ওসমান গনি বলেন, এবারে ঈদে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যদি একটু তৎপরতা থাকে তাহলে হয়তো বা যানবাহন রোডে চলাচল করে একটু সুবিধা হতে হবে। মহাসড়কে ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তাগুলো চিহ্নিত করে ইতিমধ্যেই হাইওয়ে পুলিশ কাজ করছে। এবারে ঈদে শক্ত অবস্থানে থাকবে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী । যাতে করে কোন অপ্রীতিকার ঘটনা না ঘটে। গোবিন্দগঞ্জ বাজার ও পলাশবাড়ী বাজারসহ দুইটি ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে হাইওয়ে পুলিশ ও জেলার পুলিশের ফোর্স মোতায়েন করা হবে। পাশাপাশি এবারে ঈদে যানজটমুক্ত একটি ঈদ উপহার দেওয়ার কথা জানালেন হাইওয়ে পুলিশের রংপুর রিজিয়ন পুলিশ সুপার(অতিরিক্ত ডিআইজি) মোহাম্মদ জাকারিয়া।
সাসেক এর কর্মকর্তা জানান,টাঙ্গাইলের এলেঙ্গা থেকে রংপুরের মডার্ন মোড় পর্যন্ত। ১৯০ দশমিক ৪ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০২২ সালের জুন মাসে করোনা, বন্যা ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কাজ ধীরগতিতে চলতে থাকে। বহুল প্রত্যাশিত রংপুর ঢাকা মহাসড়কের কাজ নির্ধারিত সময়ে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। এর কয়েক মাস যেতে না যেতেই বন্যা,অতিরিক্ত বৃষ্টি,জলাবদ্ধতার ধকল গেছে এই ব্যয়বহুল প্রকল্পে। পরে রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ, বিভিন্ন প্রভাব এই প্রকল্প কাজের ধীর গতি বাড়ে।
এদিকে, রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলা থেকে রংপুর নগরীর মডান মোড় থেকে বড়দরগা পর্যন্ত ২৩. ৮ কিলোমিটার কাজের ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছ। কিন্তু মিঠাপুকুরে শঠিবাড়ি এলাকায় জমি জটিলতার কারণে দেড় কিলোমিটার অংশের কাজ শুরু করাই সম্ভব হয়নি। সেখানে ২২ একর জমি এখনো অধিকরণ করা হয়নি। আটটি প্যাকেজের মধ্যে বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিম প্রান্ত থেকে হাতি কুমরুল হে রংপুর মডার্ন মোড় পর্যন্ত সড়ক উন্নয়নের কাক চলছে।
সওজ সাসেক সড়ক সংযোগ প্রকল্প ২ এর উপ-প্রকল্প ব্যবস্থাপক নাশিদ হাসান সিরাজী জানান, রংপুর নগরীর মডান মোড় থেকে বড়দরগা পর্যন্ত ২৩. ৮ কিলোমিটার কাজের ৮৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছ। মিঠাপুকুরে শঠিবাড়িতে জমি জটিলতার কারণে ২২ একর জমি এখনো অধিকরণ না হওয়ায় দেড় কিলোমিটার অংশের কাজ শুরু করাই সম্ভব হয়নি। রংপুর মডার্ন মোড় থেকে বগুড়া পর্যন্ত মহাসড়কের উন্নয়নের কাজ চলমান রয়েছে। তবে আগামী তিন চার মাসের মধ্যে মহা সড়কের কাজ শেষ হবে ।