ঢাবির বটতলায় কুরআন তিলাওয়াত বিতর্কে যা বললেন আসিফ নজরুল
নতুন সময় প্রতিনিধি
|
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় কুরআন তিলাওয়াতের আসর নিয়ে যে বিতর্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে, সেটিকে উসকানি হিসেবে দেখছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। ওই অনুষ্ঠানের আয়োজকদের পরিচয় জানতে চাওয়ার বিষয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। দুদিন আগে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ড. আসিফ নজরুল এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় কুরআন তিলাওয়াতের যে আয়োজন করা হয়েছিল, এর আগের কয়েকটি ঘটনা বিবেচনায় নিতে হবে। যেমন সরকারের পক্ষ থেকে একটি বার্তা এলো যে, এবার কোনো ইফতার পার্টি করা হবে না। আমি এটাকে খুব সাধারণ ঘটনা মনে করি না। ইফতার পার্টি করা হবে না এ ঘোষণা আপনি কেন দিলেন? কৃচ্ছ্রতাসাধনের জন্য? এই দেশ থেকে লক্ষ-কোটি টাকা পাচার হয়ে যায় সেটার বিচার করেন না। একটা ব্যবসায়িক গোষ্ঠী ৬টা ব্যাংক খালি করে দিচ্ছে তার কোনো বিচার করছেন না। ১০০ কোটি টাকার প্রকল্প ৩০০ কোটি বানিয়ে ২০০ কোটি লুটপাট করছে, সেগুলোর কোনো খবর নেই। সামান্য একটা ইফতার পার্টির আয়োজন করতে কয়েক হাজার টাকা লাগে সেটা যখন আপনি বন্ধ করে দিচ্ছেন কৃচ্ছ্রতার কথা বলে, তখন মনে হয় এটি একটি উসকানি। আসিফ নজরুল বলেন, এটির কোনো প্রয়োজন ছিল না, আমার মনে হয়েছে এটি উসকানি। বরং আপনি বলতে পারতেন আমরা ইফতার পার্টিতে গরিবদের খাওয়াব। কোনো আতিশয্য করব না। আর শিক্ষাঙ্গনে ইফতার মাহফিলে কেউ আতিশয্য করেও না। অনেক গরিব ছাত্র এখানে ইফতার করে। এমন প্রেক্ষাপটে বটতলায় এ ঘটনাটি ঘটেছে, এর সঙ্গে কীসের সংযোগ আছে আমি জানি না। আসিফ নজরুল বলেন, আপনি নিরপেক্ষভাবে চাইতে পারেন বটতলায় এ অনুষ্ঠান হবে না। কিন্তু এর তো একটি প্রকার নির্ধারণ করতে হবে। কেউ যদি প্রশ্ন তুলে বটতলায় নাচ-গান হচ্ছে, সেখানে যদি কেউ পূজা করত আপনি কি বাধা দিতেন? বটতলায় পূজা করলে কী এমন প্রতিক্রিয়া দেখাতেন? তাই এগুলো (উসকানি) আপনি উড়িয়ে দিতে পারেন না। ব্যক্তি অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে আইনের এ অধ্যাপক বলেন, আমি যখন লন্ডনে পড়াশোনা করতাম, সেখানে দেখতাম ইসকনের লোকেরা তাদের প্রচার চালাত। বিনামূল্যে খেতে দিত। এ জন্য ইউনিভার্সিটির কোনো অনুমতি নিতে হয়েছে বলে আমি দেখিনি। যারা লন্ডনে পড়েছেন তারা সবাই বলতে পারবেন ফিলিস্তিনিদের জন্য সমাবেশ হতো কোনো অনুমতি ছাড়াই। আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের যে প্রকাশ্য জায়গাগুলো রয়েছে সেখানে ধর্মীয় সভা না করাই ভালো। বটতলা বা মাঠে নামাজ-পূজা না হলেই ভালো। কারণ এগুলোর জন্য তো নির্দিষ্ট জায়গা রয়েছে। কিন্তু কেউ যদি করে তাদের শোকজের পক্ষপাতি না। আপনার অপছন্দ হলে সোশ্যাল মিডিয়ায় মতামত জানাতে পারেন। কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন পরিচয়ে জানতে চাচ্ছেন- অনুমতি নিল না কেন। এটার পক্ষপাতি আমি না। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে প্রশ্ন রেখে আসিফ নজরুল বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় প্রোগ্রাম করতে হলে অনুমতি নিতে হবে কেন? পরিচয় জানতে চাইবেন কেন? আপনি ব্যক্তিগতভাবে বিভাগীয় প্রধানকে বলতে পারেন এমন না করলে ভালো। কিন্তু যখন পরিচয় জানতে চান, তখন এটির ভিন্ন মেসেজ যায়। এগুলো খুবই স্পর্শকাতর ইস্যু। তাই বুঝেশুনে কাজ করতে হবে।
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |