ভোরের রাজধানীতে ভ্রাম্যমাণ পীরচক্র, টার্গেট নারীরা
নতুন সময় ডেস্ক
|
রাজধানীতে ‘ভ্রাম্যমাণ পীর’র দেখা মিলেছে। যাদের প্রধান টার্গেট ভোরবেলা হাটতে বের হওয়া নারীরা। এ ছাড়া রাস্তায় যার সঙ্গে দেখা হচ্ছে হাত মেলানোর পাশাপাশি তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন কেউ কেউ। ছয় থেকে সাতজনের এ পার্টিতে থাকেন একজন মুরব্বি। যাকে পীর সাজানো হয়। কথিত এই পীরকে ঘিরে গুণগান করতে থাকে বাকিরা। এ ফাঁকে টার্গেট খুঁজতে থাকেন অন্যরা। পথচারী কেউ এগিয়ে এলে তাকে বোঝানো হয় পীরের পারদর্শিতা। এভাবে নানা ফন্দি-ফিকির করে হাতিয়ে নেওয়া হয় নগদ টাকাসহ মূল্যবান সামগ্রী। চক্রটির সন্ধানে মাঠে নেমেছেন গোয়েন্দারা। রাজধানীর রামপুরায় গত ২২ জুলাই, সকাল সাড়ে ছয়টা। বোরকাপরা এক মহিলার মাথায় হাত বুলিয়ে দেন ওই পীর। পাশের দুটি লোক জানান, এ মুরব্বি অত্যন্ত পরহেজগার, কামেল লোক। যে কোনো সমস্যা তিনি সমাধান করতে পারেন। পাঁচ থেকে দশ মিনিট আলাপচারিতার পর ওই নারী বাসায় গিয়ে এক লাখ ১৮ হাজার টাকা এবং কানের এক জোড়া স্বর্ণের দুল এনে মুরব্বির হাতে তুলে দেন। পেছনে না তাকিয়ে ৩০ কদম হেঁটে বাড়ি ফেরার নির্দেশ দিয়ে কথিত কামেল লাপাত্তা। বাড়িতে গিয়ে ওই নারী বুঝতে পারেন তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। থানায় মামলা করার পর তিনি অভিযোগ নিয়ে আসেন গোয়েন্দা কার্যালয়ে। বিষয়টি নিয়ে ভুক্তভোগী ওই নারীর সঙ্গে হলে তিনি জানান, রাস্তায় হাঁটার সময় সেদিন ওই পীরের সাথে তার দেখা হয়। সেখানে ওই পীর তার ঈমান পরীক্ষা করার কথা বলেন। বিষয়টি কারো কাছে বললে তার সন্তানদের ক্ষতি হবে বলেও জানানো হয়। এরপরই ওই নারী বাসায় গিয়ে এক লাখ ১৮ হাজার টাকা এবং কানের এক জোড়া স্বর্ণের দুল এনে পীরের হাতে তুলে দেন। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, তারা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে। ৬ থেকে ৭ জনের একটি চক্রের সন্ধান পাওয়া গেছে। এই চক্রটিকে পুলিশ বলছে ‘ভ্রাম্যমাণ পীর, বা ‘বয়ান পার্টি’। ভোরবেলা হাঁটতে বের হন এমন নারীরাই হয় চক্রটির মূল টার্গেট। একজনকে পীর সাজিয়ে চক্রের সদস্যরাই তার প্রশংসা করতে থাকেন টার্গেট ব্যক্তির কাছ থেকে সব হাতিয়ে নেয়ার জন্য। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের মতিঝিল বিভাগের উপ-কমিশনার রাজীব আল মাসুদ বলেন, চক্রের সদস্যদের কাছে কেউ আসলে তারা বলেন, বড় কোন কিছু পাওয়ার আশায় ছোট স্বার্থ ত্যাগ করো। তোমার কাছে যা আছে, তাই দিয়ে দাও। আবার বলে, এমন সুযোগ আর পাবা না। তোমার জিনিস দ্বিগুণ-তিনগুণ হয়ে যাবে। তখন কেউ কেউ বিশ্বাস করে সব দিয়ে দেয়। ‘ভ্রাম্যমাণ পীর’ এর বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। এ ছাড়াও এ চক্রের সদস্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান তিনি।
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |