৩৫ বছর বয়সেই ৩৬০ কোটি ডলারের মালিক তিনি
নতুন সময় ডেস্ক
|
![]() ৩৫ বছর বয়সেই ৩৬০ কোটি ডলারের মালিক তিনি এমনকি আমাদের ব্যর্থতাটা কেমন হতে পারে, সেটাও আমরা ভেবেছিলাম। এটা কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ঝুঁকিগুলো নিয়েও কাউকে না কাউকে ভাবতে হতো। ১০ বছর আগেও আমাদের পুরো প্রতিষ্ঠান একটা ঘরে এঁটে যেত। আমরা সবাই একসঙ্গে এক টেবিলে বসে দুপুরের খাবার খেতাম। আর এখন আমাদের অফিসে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ জন কাজ করে। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে যুক্ত হয় আরও প্রায় ৩ হাজার ৩০০ জন। একসময় যেখানে অল্প কিছু গ্রাহক আমাদের সেবাটি ব্যবহার করত, সেখানে এখন প্রতি মাসে ১০ কোটি লোক ক্যানভা ব্যবহার করে। লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য যখন আপনি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করতে পারবেন, আপনি যে স্বপ্ন দেখছেন, সেটাই হবে ভবিষ্যৎ। তখন আপনার কাজ হলো এই স্বপ্নকে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে পরিণত করা। ছোট কোনো লক্ষ্য ঠিক করবেন না। আপনার মই যেন এত ছোট না হয় যে আগায় উঠে ভাবতে হয়, ‘এখন তাহলে কী করব!’ আবার প্রথম ধাপটাই পেরোতে পারছেন না, মই এতটা উঁচু হলেও চলবে না। দুটোর মধ্যে সামঞ্জস্য থাকতে হবে। একদিকে যেমন আপনাকে একটা খ্যাপাটে স্বপ্ন দেখতে হবে, তেমনি ছোট ছোট ধাপে ওপরে উঠতে হবে। ভবিষ্যতে নিজেকে আপনি কোথায় দেখতে চান? সেটাই হলো উদ্দেশ্য (মিশন)। আর আমি মনে করি, লক্ষ্য সেই উদ্দেশ্য পূরণের একেকটি ধাপ। লক্ষ্য বিষয়টা ক্যানভার ডিএনএতে একদম শুরু থেকেই ছিল। আমরা আমাদের জন্য বড় বড় লক্ষ্য ঠিক করতাম, সেগুলো লিখে, এঁকে দেয়ালে সাঁটিয়ে রাখতাম। লক্ষ্য পূরণ হলে পার্টি করতাম। একটা উদাহরণ দিই। শুরুতে আমাদের লক্ষ্য ছিল সারা পৃথিবীর মানুষ যেন সহজে ডিজাইনের কাজ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা। সেটা করতে হলে তো সব ভাষাভাষী মানুষের কাছে পৌঁছানো প্রয়োজন। ২০১৩ সালে ক্যানভা চালু করার সময় এটা শুধু ইংরেজিতেই পাওয়া যেত। তখন প্রথম লক্ষ্য ঠিক করলাম, আমরা ওয়েবসাইটে স্প্যানিশ ভাষা চালু করব। পরের লক্ষ্য, ২০টি ভাষায় ক্যানভা চালু করব। পরের লক্ষ্য ১০০টি ভাষায়। এভাবে একসময় আমরা হিব্রু, আরবি, উর্দু, চীনার মতো কঠিন ভাষায়ও ক্যানভা চালু করে ফেললাম। প্রতিবছর আমাদের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এভাবে একের পর এক লক্ষ্য ঠিক করে যাচ্ছি। এখন ক্যানভায় ৫০ শতাংশের বেশি ব্যবহারকারীর মাতৃভাষাই ইংরেজি নয়। মূল্যবোধ তৃতীয় যে বিষয়ের কথা বলেছিলাম, তা হলো প্রতিষ্ঠানের মূল্যবোধ। এটার কাজ কি শুধু দেয়ালের শোভা বাড়ানো? না। যখন আমাদের প্রতিষ্ঠান ছোট ছিল, তখন সবার সঙ্গে সবার কথা হতো। সবাই জানত, আমরা কী করছি, কেন করছি। যখন আস্তে আস্তে বড় হলাম, অনেক লোক যুক্ত হলো, তখন আমাদের মূল্যবোধ ঠিক করার প্রয়োজন হলো। প্রতিদিন হাজারো সিদ্ধান্ত নিতে হয়। সবাই যদি প্রতিষ্ঠানের মূল্যবোধ না জানেন, তাহলে সিদ্ধান্ত নেবেন কী করে? অনেক কর্মশালা, আলোচনা, কাটাছেঁড়ার পর আমরা ছয়টি মূল্যবোধ নির্ধারণ করতে পেরেছি। ১. ভালোর জন্য কাজ করা ২. সব সময় সেরা হওয়ার চেষ্টা করা ৩. জটিল বিষয়কে সহজ করা ৪. অন্যকে ক্ষমতায়িত করা ৫. বড় বড় লক্ষ্য ঠিক করা এবং তা পূরণ করা ৬. ভালো মানুষ হওয়া। ক্যানভায় একেকটা দল থেকে শুরু করে ব্যক্তিপর্যায়েও আমরা এই মূল্যবোধ ছড়িয়ে দিতে পেরেছি। কেন এগুলো আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ? কারণ, আমি মনে করি, ব্যবসা মানে শুধু লাভ করা নয়; ব্যবসাই তো পরিবর্তন আনে, গ্রাহকদের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। ব্যবসাই পৃথিবীটাকে একটা চেহারা দেয়। আমি আশা করব, আপনাদের একেকটা উদ্যোগ আমাদের সেই পৃথিবীর দিকে নিয়ে যাবে, ১০ বছর পর আপনারা যেমন পৃথিবী চান। সূত্র: অনুষ্ঠানের ভিডিও, ইংরেজি থেকে অনূদিত
|
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |