|
মেট্রোরেল কি মাথার ওপরের শঙ্কা হয়ে উঠছে?
নতুন সময় প্রতিবেদক
|
![]() মেট্রোরেল কি মাথার ওপরের শঙ্কা হয়ে উঠছে? শত টন ওজনের অবকাঠামোর নিচে যে বিয়ারিং প্যাড বসানো থাকে, তা কী করে খসে পড়ে, সেই প্রশ্ন উঠেছে জনমনে। জবাব হিসেবে প্রকৌশলীরা বলছেন, এটা নকশা বা নির্মাণের ত্রুটির কারণে হতে পারে। প্রকল্পটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থাতে বুঝে নেওয়ার কথাও বলেছেন কেউ কেউ। ফলে সব মিলিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকার এই মেট্রোরেল ঢাকাবাসীর ‘মাথার ওপরের শঙ্কা’ হয়ে উঠছে কিনা, সেই প্রশ্ন তুলেছেন প্রকৌশলীদের কেউ কেউ। নয় বছর আগে ২০১৬ সালে উত্তরায় মেট্রোরেলের যে নির্মাণযজ্ঞ শুরু হয়, তা পরিণতি পায় ২০২২ সালের শেষে এসে। এর এক বছর আগে ২০২১ সালে একনেক সভায় প্রকল্পটির মেয়াদ দেড় বছর এবং ব্যয় প্রায় ১১ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা বাড়িয়ে সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। জাপানের কারিগরি সহায়তা ও অর্থায়নে ২০২২ সালে যখন মেট্রোরেল উদ্বোধন হয়, তখন এর পেছনে মোট ব্যয়ের পরিমাণ দাঁড়ায় ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা। এত বিপুল ব্যয়ের এ প্রকল্পে এবার এমন দুর্ঘটনা প্রথম নয়। ২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর মেট্রো লাইনের খামারবাড়ি এলাকায় একটি বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়লে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ট্রেন চলাচল ১১ ঘণ্টা বন্ধ থাকে। ওই ঘটনায় কেউ হতাহত হয়নি। কিন্তু রোববার দ্বিতীয় ঘটনায় প্রাণ যায় এক পথচারীর। এবারের ঘটনাও কাছাকাছি এলাকায়। ![]() মেট্রোরেল কি মাথার ওপরের শঙ্কা হয়ে উঠছে? রোববারের দুর্ঘটনার পর দুপুর থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত মেট্রোরেল চলাচল একেবারেই বন্ধ থাকে। বিকাল ৩টায় উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত ট্রেন চলাচল শুরু হয়। পরে সন্ধ্যা ৭টায় চলাচল শুরু হয় মতিঝিল থেকে শাহবাগ অংশে। তবে আগারগাঁও থেকে শাহবাগ অংশে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এদিন দুর্ঘটনার আট ঘণ্টা পরও খামারবাড়ির কেআইবি ইনস্টিটিউটের সামনের সড়কটি বন্ধ করে কাজ করতে দেখা গেছে জাপানি প্রকৌশলীদের। হঠাৎ মেট্রোরেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মেট্রোর ওপর নির্ভরশীল হয়ে ওঠা নগরবাসী বিপাকে পড়েন। এদের একজন নাসিরুল ইসলাম বলেন, “অফিস কারওয়ান বাজার, আগে বাসা ছিল ভূতের গলিতে। মেট্রোরেল আসার পর একটু হাত-পা ছঁড়িয়ে থাকার জন্য উত্তরা ১৮ নম্বর সেক্টরে ফ্ল্যাট কিনলাম। এখন এক দিন মেট্রো বন্ধ থাকলে যে প্যারা খাইতে হয়, বলার বাইরে।” আরেকজন ব্যাংক কর্মকর্তা শাহনেওয়াজ হ্যাপি বলেন, “বাসা মিরপুর ডিওএইচএস, বাচ্চা থাকে ডে কেয়ারে। মেট্রোরেল থাকায় সময়মত গিয়ে বাচ্চাকে পিক করতে পারি। আজ মেট্রো বন্ধ হল মানে আমাদের জন্য একটা বিপর্যয়। মেট্রো বন্ধ মানে মিরপুরের সড়কগুলোতে সাংঘাতিক যানজট লাগবেই। অফিস থেকে গিয়ে কীভাবে সব সামাল দেব?” যেভাবে ঘটনা তেজগাঁও থানার ওসি মোবারক হোসেন বলেন, ফার্মগেট মেট্রো স্টেশনের নিচে কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের (কেআইবি) সামনের ফুটপাত দিয়ে আবুল কালাম হেঁটে যাচ্ছিলেন। এমন সময় উপর থেকে বিয়ারিং প্যাড খসে পড়লে চাপা পড়ে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। দুপরে যখন ওপর থেকে ওজনদার রাবারের টুকরাটি খসে পড়ে, তখন খামারবাড়ির কেআইবি মিলনায়তনের সামনের ফুটপাতে চায়ের দোকানদার আমিন হোসেন বেচা-বিক্রিতে ব্যস্ত ছিলেন। হঠাৎ যখন বিয়ারিং প্যাডটা তার দোকানের সিগারেটের ‘শোকেসের’ ওপর ভেঙে পড়ে, তখন তিনি ভয় পান, আহতও হন। আমিন বলেন, “আমি তখন চা বানাইতাছিলাম। হঠাৎ দুড়ুম শব্দে কী যেন ভাইঙা পড়ল। আমার দোকানের সিগারেটের শোকেসের কাঁচ লাইগা আমার পেট কাইটা গেল। আমার দোকানে আমার ভাই হেলাল আছিল, সেও ব্যাথা পাইছে। আমরা দুইজনে উইঠা দেখি লোকটা পইড়া রইছে, রক্ত বাইর হইতাছে ফিনফিনায়া। আমরা যাইতে যাইতে তারে আর বাঁচা অবস্থায় পাই নাই।” ওই সময়ের মর্মান্তিক অবস্থা তুলে ধরে ওই দোকানদার বলেন, “এত বড় জিনিস মাথায় পড়লে মাইনষে বাঁচে। আমার মাথায় পড়লে কী হইত এইটা ভাবতাছি।” ঘটনার পর পর আশপাশের লোকজন ছুটে এসে মাথা থেতলানো অবস্থায় আবুল কালামকে পড়ে থাকতে দেখেন। ৩৫ বছর বয়সী আবুল কালাম নারায়ণগঞ্জে পরিবার নিয়ে থাকতেন। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লেখাপড়া শেষ করে তিনি ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা করতেন। তার পাঁচ বছর বয়সী এক ছেলে ও তিন বছর বয়সী এক মেয়ে রয়েছে। ঘটনার খবর জানতে পেরে তার পরিবার ছুটে যায় শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে। সেখানে আবুল কালামের স্ত্রী আইরিন আক্তার পিয়াসহ ভাই-বোনরা ছিলেন। তার বোনেরা ভাইয়ের শোকে মাটিতে গড়াগড়ি করে কাঁদছিলেন। নিহতের স্ত্রী আইরিনের কোলে ছিল তার ছোট মেয়েটি, যে আসলে বুঝতেই পারছিল না কী হারিয়েছে জীবনে। সংবাদকর্মীরা যখন পরিবারটির সাক্ষাৎকার নিচ্ছিলেন, তখন শিশুটির সব মনোযোগের কেন্দ্রে ছিল ক্যামেরা ও মাইক্রোফোনগুলো। অনেকেই শিশুটির জন্য আফসোস করছিলেন। সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে পরিবারটিকে সান্ত্বনা জানাতে যান সড়ক ও সেতু উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান, সেতু বিভাগের সচিব আব্দুর রউফসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। উপদেষ্টা ফাওজুল বলেন, “দেখেন একজনের জীবনের দাম তো আমরা কোনো কিছু দিয়ে দিতে পারব না। তবে আপনাদের যেন চলতে সমস্যা না হয়, বাচ্চারা যেন ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারে; সেই ব্যবস্থা আমরা করব। “প্রাথমিকভাবে আমরা আপনাদের পরিবারের জন্য পাঁচ লাখ টাকা দিচ্ছি। পরে আপনাদের পরিবারের কর্মক্ষম কেউ থাকলে তাকে চাকরি দেওয়া হবে। বাচ্চাদের পড়াশোনার জন্যও সহায়তা করা হবে।” কেন এ ঘটনা প্রকৌশলীরা বলছেন, কোনো সেতুর পিয়ার ও গার্ডারের মধ্যে কম্পন প্রতিরোধ ও স্থিতিস্থাপকতা সৃষ্টির জন্য এ ধরনের বিয়ারিং প্যাড ব্যবহার করা হয়। সাধারণত বিয়ারিং বলতে যেরকম গাড়ি বা ইঞ্জিনের বিয়ারিংকে বোঝানো হয়, সেতুর মতো স্থাপনাগুলোর ক্ষেত্রে বিয়ারিং প্যাডটা সেরকম নয়। তারা বলছেন, সেতু, উড়াল সড়ক বা উড়াল রেলের মতো স্থাপনার ক্ষেত্রে পিলারের ওপর আড়াআড়িভাবে একটি গার্ডার বসানোর প্রয়োজন হয়। সেই গার্ডার আর পিলারের মাঝামাঝি জায়গায় বসানো হয় রাবারের তৈরি এক ধরনের প্যাড, অর্থাৎ এই রাবারের প্যাড বা পাতের ওপর বসে থাকে গার্ডার। এই রাবারের প্যাডকেই প্রকৌশলীরা বলছেন বিয়ারিং প্যাড বা ভারবাহী প্যাড। যেই রাবারের টুকরোর ওপর শ’খানেক টনের গার্ডার চেপে বসে থাকে, সেটি কীভাবে খুলে পড়ে যায়, এই প্রশ্ন এসেছে অনেকের মনে। বিশেষজ্ঞরা এখানে নির্মাণ ত্রুটি বা নকশার ত্রুটির আশঙ্কার কথা বলছেন। দেশের সেতুগুলোর ‘কন্ডিশন সার্ভে’র কাজ করেন প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান, রাবারের প্যাড নিয়েও রয়েছে তার দীর্ঘ কাজের অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, “সেতু তৈরির সময় এর পিয়ারের (বা পিলার) ওপর রাবারের বিয়ারিং প্যাড বসানোর একটা সিট তৈরি করা হয় অনেক স্ট্রাকচারে। সিট হচ্ছে সোজা বাংলায় বললে পিলারের ওপরের অংশে চারদিকে একটা বিটের মতো করে দেওয়া, যেন রাবারটা পড়ে না যায়। আবার অনেক ক্ষেত্রে আঠা দিয়েও রাবারটা বসানো হয়। এটা নকশার ওপর নির্ভর করে। তবে যেহেতু রাবারের ওই প্যাডের ওপর শ খানেক টনের গার্ডারের ওজন থাকে, তাই সেগুলো সচরাচর খসে পড়ে না।” মনিরুজ্জামান বলছেন, “বিয়ারিং প্যাডটা মূলত রাবারের তৈরি। এর ভেতরে স্টিল প্লেটের কয়েকটা স্তর থাকে। দুটো মিলে কম্পোজিট একটা অ্যাকশন করে। যে ভাইব্রেশনটা গার্ডার থেকে আসতেছে, সেটা পিয়ারে ড্যাম্প করে পাঠাচ্ছে। অর্থাৎ কম্পন কমিয়ে দিচ্ছে গাড়ির ‘শক অ্যাবজর্বারের’ মতো। এর দামও তুলনামূলক কম, কিন্তু গুরুত্ব অনেক বেশি।” এই বিয়ারিং প্যাড কী প্রায়ই খুলে পড়ে কিনা- এমন প্রশ্নে সেতুর ‘কন্ডিশন সার্ভে’র অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলছেন, “দুই একটা কেসে দেখছি টিলটিংয়ের কারণে বিয়ারিং প্যাড খুলে গেছে বা বন্যায় পড়ে গেছে। এটাও খুব বিরল, অনেক পুরনো স্ট্রাকচারের ক্ষেত্রে এরকম ঘটতে পারে।” এ বিষয়ক এক প্রশ্নে পরিবহন বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক সামছুল হক বলেন, "যদি বেয়ারিং প্যাডগুলো নিম্নমানের হয় তাহলেও তো সেগুলো ভায়াডাক্টের নিচ থেকে খসে পড়ার কথা না।" নির্মাণ ত্রুটি নিয়ে নতুন শঙ্কা? মেট্রোরেলের মতো ব্যয়বহুল স্থাপনার ক্ষেত্রে এরকম ঘটনা ১৩ মাসের ব্যবধানে দুবার ঘটার বিষয়টাকে কীভাবে দেখছেন জানতে চাইলে মনিরুজ্জামান বলেন, “যে গার্ডারের নিচ থেকে সেটা খসে পড়েছে, সেখানে কোনো একটা গ্যাপ বা ফাঁক তৈরি হতে পারে। অর্থাৎ সেই গার্ডারটা আর বিয়ারিং প্যাডের ওপর চাপ থাকেনি, সেখানে কিছুটা ফাঁক থেকে গেছে। এটা একটা সম্ভাব্য কারণ হতে পারে।” বুয়েটের পুরাকৌশল বিভাগের অধ্যাপক সামছুল হক মনে করছেন, এখানে কোনো নির্মাণ ত্রুটি ছিল, যেটা সংশোধন করা হয়নি। এটার জন্য পুরো একটা ‘সেইফটি অডিট’ করা প্রয়োজন মন্তব্য করে তিনি বলেন, “পুরো একটা সেফটি অডিট না করে এটা আবার চালু করা ঠিক হবে না। এই ঘটনা মানুষের মধ্যে ভয় তৈরি করেছে যে, ওপর দিয়ে মেট্রোরেল গেলে না জানি কী খসে পড়ে। এমনিতে আমাদের ঢাকা শহরে অনেক শঙ্কার মধ্যে মানুষকে থাকতে হয়। এখন মাথার ওপর আরেকটা শঙ্কা তৈরি করতে না চাইলে সেইফটি অডিট করতে হবে।” তিনি বলেন, “রাবার প্যাডটা ওখানে একলা বসে না। তার সঙ্গে কিন্তু ফ্রেম থাকে। যেন না সরে যায়, তার জন্য ব্যবস্থা আছে নিশ্চয়ই। এটা শত বছর আগের প্রযুক্তি। গত একশ বছরে এটা অনেক পূর্ণতা পেয়েছে। আর আমাদের দেশে আরবান ভিড়ের মধ্যে এটা খুলে পড়ে যায়।” ব্যয়বহুল এমন প্রকল্পে এরকম ঘটনা কেমনে ঘটে সেই প্রশ্ন রেখে এই পরিবহন বিশেষজ্ঞ বলেন, “এই মেট্রোরেল নির্মাণে আমরা তো টাকা কম দিই নাই। শুধু কনসালটেশনের জন্য ১১০০ কোটি টাকা নিয়েছে জাপানি কোম্পানি। এখন যে জাপানি কনসালটেন্টের এটা বুঝে নেওয়ার কথা ছিল, তারা ঠিকভাবে বুঝে নেয়নি।” স্থাপনাটি নতুন থাকতেই যদি এমন হয়, ভবিষ্যতে কী হতে পারে, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে এই অধ্যাপক বলেন, “মেট্রোরেলে এখনও আমরা হানিমুন পিরিয়ডে আছি, তাতেই এই অবস্থা। আমাদের এই স্থাপনাটার যেখানে দুর্বলতা আছে, সেখানে মেইনটেন্যান্স ভালোভাবে করতে হবে। “আমি বলবো, এগুলো একশ বছরের একটা ম্যাচিউর সায়েন্স। সেই জায়গা থেকে আমি দেখি, নির্মাণে কমপ্রোমাইজ করা হয়েছে। সেই হিসাবে আমি বলব, এই মৃত্যুর দায় কাউকে না কাউকে দিতে হবে। সামনে আরও মেট্রো হবে। এটার দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা না হলে সামনেও এরকম ঝুঁকি তৈরি হবে। অথচ মেট্রোরেলের মতো প্রজেক্টগুলো তৈরি করা হয় একেবারে ঝুঁকিমুক্তভাবে। চীনের ট্রেনগুলো দেখেন, এখন ওরা ৩০০ কিলোমিটার পার আওয়ার স্পিডে চালাচ্ছে, ৫০০ কিলোমিটারে নেওয়ার চেষ্টা চলছে। ওরা কীভাবে পারছে?” কেউ কেউ বলছেন, বাঁকের মধ্যে ভাইব্রেশনে পিয়ার আর গার্ডারের মধ্যে ফাঁকা তৈরি হয়ে প্যাডটা খসে পড়েছে। এ বিষয়ে এই অধ্যাপক পাল্টা প্রশ্ন তুলে বলেন, “বাঁকের মধ্যে কীভাবে নকশা করতে হবে, সেটা কী প্রকৌশলীদের জানা নেই? তাহলে কি ঝুঁকি রেখেই তারা এটা বানিয়েছে? জাপানিরা নির্মাণকাজে আপোস করলে তো তাদের ধরতে হবে।” ১৩ মাসের মধ্যে যেহেতু দুবার খুলেছে, তাহলে সেখানে নিশ্চই কোনো সমস্যা আছে বলে মনে করছেন এই অধ্যাপক। কর্তৃপক্ষ তদন্তে মনোযোগী! মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ বলছে, ২০২৪ সালে বিয়ারিং প্যাড সরে যাওয়ার ঘটনায় যে তদন্ত কমিটি হয়েছিল, সেটির সুপারিশগুলো বাস্তবায়ন করা হয়েছে। এ বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে মেট্রোরেল পরিচালনকারী কোম্পানি ডিএমটিসিএলের এমডি ফারুক আহমেদ বলেন, “আগের কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। সবগুলো পিলার ফিজিক্যালি এক্সপার্ট দিয়ে পরিদর্শন করা হয়েছিল।” রোববার দুপুরে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে যখন এমডি কথা বলছিলেন, পাশে থাকা সড়ক পরিবহন উপদেষ্টা ফাওজুল কবির আঙ্গুল তুলে প্রশ্ন করেন, “তাহলে এটা হলো কীভাবে?” ওই ঘটনায় কারো বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল কি না, জানতে চান সংবাদকর্মীরা। জবাবে ডিএমটিসিএলের এমডি বলেন, “তখন বলা হয়েছিল ডিফেক্ট লাইবেলিটি পিরিয়ডের মধ্যে এই ঘটনা ঘটেছে। তাই বিষয়টি সংশোধনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল তাদেরকে (ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে)। তারা তখন বলেছে, তারা সেটা সংশোধন করেছে।" এ সময় উপদেষ্টা বলেন, “এটা জাপানি ঠিকাদাররা করেছেন। এখানে বলা হচ্ছে এটা ডিফেক্ট লাইবেলিটি পিরিয়ডের মধ্যে ঘটেছে। তবে এখন যে কমিটি হচ্ছে এই কমিটি আগের কমিটির প্রতিবেদনও দেখবে।” রোববারের দুর্ঘটনায় পাঁচ সদস্যের আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান তিনি। সেই কমিটির প্রধান করা হয়েছে মেট্রোরেলের সাবেক এমডি ও বর্তমানে সেতু বিভাগের সচিব আব্দুর রউফকে। |
| পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |
