ঠাকুরগাঁওয়ে চিন্ময়ের মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভে শহরে তান্ডব, অতঃপর মামলা
মোঃ মামুন অর-রশীদ, ঠাকুরগাঁও
|
বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তি চেয়ে বিক্ষোভের নামে ঠাকুরগাঁওয়ে সেনাবাহিনী, পুলিশ ও সংবাদকর্মীসহ যানবাহনের ওপর হামলার ঘটনায় সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারুল ইসলাম সরকার, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান সুনাম, ছাত্রলীগ (নিষিদ্ধ) নেতা নাহিদ রহমান আকাশ, সাবেক ইউপি সদস্য মোখলেছুর রহমানসহ ৪৬ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আর ৫শ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা করেছে পুলিশ। বুধবার (২৭ নভেম্বর) বিকেলে এসআই (নি.) শফিউল ইসলাম বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন। এ ঘটনার পর অভিযান চালিয়ে ২৩ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। পরে রাতে বিশেষ আদালতের মাধ্যমে গ্রেপ্তারকৃতদের কারাগারে পাঠানো হয়। মামলার এজাহারে ৪৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ৪শ/৫শ জনকে আসামি করা হয়। তবে তাদের মধ্যে দুই আসামি অসুস্থ থাকায় পুলিশ হেফাজতে তারা ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন রতন চন্দ্র রায়, সুজন রায়, তাপস কুমার রায় ওরফে তপু, শিমুল কুমার দাস ,পরমেশ্বর বর্মন, পরিমল বর্মন, তপু রায়, ধনী চন্দ্র রায়, শান্ত রায়, রোমান চন্দ্র, সৃজন চন্দ্র বর্মন, ছোটন চন্দ্র বায়, পরিতোষ চন্দ্র রায়, শুভ্রদেব মদক ওরফে বাবু, কল্যাণ বর্মন, তরুন বর্মন, বঙ্কিম রায়, মলয় রায়, সুশীল চন্দ্র রায়, পলাশ চন্দ্র রায় ওরফে জয়, দিপু রায়, সবুজ চন্দ্র রায়, অমল দেব নাথ, বকুল চন্দ্র বর্মন, মতিউর রহমান, পরিমল, উজ্জল সিনহা, অমল সিংহ, অনিক সরকার, হৃদয় রায়, দিপু রায়, মহিদুল ইসলাম, বেলাল হোসেন, উত্তম কুমার রায়, কামরুল ইসলাম, তারেক রাসেল, বাচ্চু ইসলাম, আমিনুল ইসলাম, শাহাজাদা জনি, লুৎফর রহমান শিপন, সাদিবর ইসলাম, কামরুজ্জামান সুনাম নয়ন রায়, জিএম সিরাজী মিজান। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর মুক্তির দাবিতে একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠীর ছত্রছায়ায় মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) ঠাকুরগাঁও জেলা শহরের জেলা স্কুলমাঠে সমাবেশ করেন তার ভক্তরা। শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ শেষ হলেও পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে শহরে বিক্ষোভ প্রদর্শনের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন বিক্ষোভকারীরা। একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠী বা মহলের মদদে ও অর্থায়নে ঠাকুরগাঁও শহরের বিভিন্ন সরকারি অফিস-আদালত ও অবকাঠামোতে হামলা করাসহ রাস্তায় চলমান যানবাহনে হামলা করে সরকারি ও জনসাধারণের সম্পত্তির ক্ষতি করে। নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগসহ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, আওয়ামী লীগ ও তার সকল অঙ্গসংগঠন এবং সহযোগী অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা পরস্পরের সহযোগিতায় অভিন্ন উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বাঁশ ও কাঠের লাঠি-সোঁটা, লোহার রড, ইট-পাটকেলসহ বিভিন্ন ভোতা ও ধাঁরালো অস্ত্র নিয়ে ঠাকুরগাঁও বড় মাঠে অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা সেনাবাহিনীর ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করলে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। এতে ক্ষুদ্ধ হয়ে তারা সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। ভাঙচুর করা হয় যানবাহন। এ সময় আহত হোন বেশ কয়েকজন সেনাবাহিনীর সদস্য, পুলিশ সদস্য ও সংবাদকর্মী। এসময় ১০টি লোহার রড ও ৩টি হাসুয়া জব্দ করা হয়। এজাহারে আরও বলা হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা সকলে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মী-সমর্থক বলে নিজেদের দাবি করে। আসামিরা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে সন্ত্রাসবিরোধী আইন, ২০০৯ (সংশোধনী-২০১৩) এর ৬/৮/৯/১০/১১/১২/১৩ ধারার অপরাধ সংঘটন করে। এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুর রহমান জানান, সন্ত্রাস দমন আইনে এ মামলাটি করা হয়েছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
|
� পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ � |