রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে থাকা একটি বেওয়ারিশ একটি শিশুর লাশের দাবিদার তিন পরিবার। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নিখোঁজ হওয়া শিশুদের পরিবারগুলোর ধারণা আন্দোলনে প্রতিপক্ষ বা পুলিশের গুলিতে নিহত হতে পারে তাদের সন্তান। দ্রুত সন্তানের লাশ হলেও ফিরে পাওয়ার আকুতি তাদের। আর ডিএনএ পরীক্ষা করে পরিচয় নিশ্চিত হয়েই প্রকৃত পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, জামিনুল ইসলামকে হারিয়ে পাগলপ্রায় তার মা জামিলা। তিনি জানান, ১৩ বছর বয়সী জামিনুল নিখোঁজ হন ঢাকার সাভার থেকে।
রাজীব আলী ও জামিলা দম্পতির দাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় হত্যা করা হয়েছে তাদের সন্তানকে। তাই সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের মর্গে থাকা বেওয়ারিশ লাশটি তাদের সন্তানের।
এই লাশেরই দাবিদার মোহাম্মদপুরের ১৩ বছর বয়সী শিশু শামিমের অভিভাবকরাও। তারা বলছেন, সুরতহালের প্রতিবেদনের তথ্য দেখে তারা ধারণা করছেন বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে মর্গে থাকা মরদেহটি শামীমের হতে পারে।
ছাত্র আন্দোলন চলাকালে নিখোঁজ রাজধানীর গুলিস্তানের শাহিন হোসেনের পরিবারেরও দাবি, যেহেতু তাদের হারিয়ে যাওয়া সন্তানের বয়স ১৩ বছর, আর মরদেহটির সুরতহাল প্রতিবেদনে বয়স ১৩ বছর বলা হয়েছে তাই এটা হতে পারে শাহিনের মরদেহ।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, লাশের দাবিদারদের ডিএনএ নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। শনাক্তের পর প্রকৃত স্বজনের হাতে তুলে দেয়া হবে শিশুটির মরদেহ।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. নন্দ দুলাল সাহা গণমাধ্যমকে জানান, দাবিদারদের নমুন সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাদের ডিএনএ টেস্ট করা হবে। যার সঙ্গে মিলবে, আইনগতভাবে তাকে লাশ ফেরত দেয়া হবে।
এদিকে বেওয়ারিশ লাশের দাবিদার স্বজনদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগসহ আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত কাজ করছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্বেচ্ছাসেবীরা।
স্বেচ্ছাসেবক ফরহাদ হোসেন বলেন, হাসপতাল কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছে যে তারা যথাযথ আইন অনুসরণ করেই লাশ হস্তান্তর করবে।
বিশেষ ব্যবস্থায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসাসহ ৯০ দিনের মধ্যে স্বাস্থ্যখাতে দৃশ্যমান পরিবর্তন আসবে বলে স্বাস্থ্য অধিদফতরের দেয়া প্রতিশ্রুতির বিষয়টি মনিটরিং করছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।