ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) কোটাবিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের হামলার পর ছত্রভঙ্গ হয়ে গেছেন। ফলে রাজধানীর পলাশী, নীলক্ষেত, জগন্নাথ হল ও শহীদ মিনারসহ ঢাকা মেডিকেল কলেজের ইমারজেন্সি গেটে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়েছেন তারা। বিক্ষিপ্ত হওয়ার পর তাঁরা এখনো সংগঠিত হতে পারেনি। এরই ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে ঢাবি রোকেয়া হলের ভেতরে প্রতিবাদী স্লোগান দিচ্ছেন শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে জড়ো হয়ে অবস্থান নিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর, দক্ষিণ ও সাত কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
সেখানে ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মাজহারুল কবির শয়ন বলেন, ‘বিএনপি এখানে টাকা দিয়েছে। আসিফ নজরুল, ফরহাদ মাজহাররা এখানে রয়েছেন। শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের দিক ঠেলে দিচ্ছে। আন্দোলনে মেয়ে শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করছে। আন্দোলনকারীরা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেছে, হলে হলে হামলা করেছে।’
এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের আবাসিক হল এলাকায় ছাত্রলীগের সঙ্গে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষ শুরু হয়েছে। প্রথমে হলের ভেতর থেকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করা হলে এ সংঘর্ষ বাধে। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু হয়।
এ সময় উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থীর মধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সহকারী সমন্বয়ক মাহিন সরকার আহত হয়েছেন। তবে তাৎক্ষণিকভাবে বাকিদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
সংঘর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর, দক্ষিণ ও ঢাকা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা যুক্ত হয়েছেন।
আজ সোমবার সাড়ে তিনটার দিকে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এ সময় উভয় পক্ষকে লাঠিসোঁটা হাতে দেখা গেছে। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত (৪টা পর্যন্ত) পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলছে।
কোটাবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘ছাত্রলীগের হামলায় এখন পর্যন্ত আমাদের ৫০ জন মেয়ে আহত। সব মিলিয়ে আজকে ঢাবিতে ১৫০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এই হামলার জবাবে আমরা আজকেই ঢাবিতে মিছিল করব।’
সরেজমিনে দেখা যায়, বিকেল ৩টার পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে হলপাড়ায় গেলে সূর্যসেন ও একাত্তর হল থেকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেন হলে অবস্থান নেওয়া ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা পাল্টা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। পরে মহসিন হল ও মধুর ক্যানটিনের দিক থেকে লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা করে ছাত্রলীগ। এ সময় শিক্ষার্থীরা ভিসি চত্বরে অবস্থান নিলে সেখানেও ধাওয়া করে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
পরে শিক্ষার্থীরা ভিসি চত্বর থেকে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। এ সময় প্রায় বিশ জনের অধিক আন্দোলনকারীকে মারধর করে ছাত্রলীগ।
এ বিষয়ে বিজয় একাত্তর হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আবদুল বাছির আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘হলের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিষয়টি নজরে রাখছি।’