ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
বৃহস্পতিবার ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
গরু কাটার ছুরি দিয়ে রাবেয়াকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা সাইদুলের মুখে
নতুন সময় ডেস্ক
প্রকাশ: Friday, 12 May, 2023, 11:12 AM

গরু কাটার ছুরি দিয়ে রাবেয়াকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা সাইদুলের মুখে

গরু কাটার ছুরি দিয়ে রাবেয়াকে হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা সাইদুলের মুখে

গাজীপুর চৌরাস্তার একটি কলেজে স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন রাবেয়া আক্তার। ২০২০ সালে তাকে আরবি পড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। রাবেয়াসহ তার দুই বোন ও মাকে আরবি পড়ানোর জন্য তখন গৃহশিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয় সাইদুল ইসলামকে। তিনি গাজীপুরের একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করতেন। এ ছাড়া স্থানীয় একটি মসজিদের ঈমাম ছিলেন। আরবি পড়ানোর সুবাদে রাবেয়াদের বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতেন সাইদুল। রাবেয়ার পরিবারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক তৈরি হয় তার। একপর্যায়ে রাবেয়াকে বিভিন্ন সময় বিয়ের প্রস্তাব দেন তিনি। ২০২০ সালের শেষ দিকে কাউকে না জানিয়ে তাকে মৌখিকভাবে বিয়ে করেন সাইদুল। পরে বিয়েটি সামাজিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য রাবেয়া ও তার পরিবারকে চাপ দিতে থাকেন তিনি। 

এরপরও বিভিন্ন সময় রাবেয়ার সঙ্গে সাইদুল যোগাযোগের চেষ্টা করতেন। রাবেয়াকে উত্ত্যক্ত করার জন্য ২০২২ সালের অক্টোবরে গাজীপুর সদর থানায় একটি অভিযোগ করেন রাবেয়া। এতে সাইদুল কিছুদিন রাবেয়াকে উত্ত্যক্ত করা থেকে বিরত থাকে। কিন্তু গত দুই মাস ধরে রাবেয়ার কলেজে গিয়ে এবং বাসার বাইরে আসা-যাওয়ার পথে ফের তাকে উত্ত্যক্ত করতে থাকে সাইদুল। একপর্যায়ে তিনি রাবেয়াকে প্রাণনাশের হুমকি দেন। সম্প্রতি রাবেয়া উচ্চশিক্ষার জন্য দেশের বাইরে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন জানার পর বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি সাইদুল। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে রাবেয়াকে হত্যার পরিকল্পনা করে সাইদুল। 

রাবেয়াকে হত্যার জন্য স্থানীয় একটি কামারের দোকান থেকে ৬৫০ টাকা দিয়ে গরু জবাই করার ছুরি তৈরি করে। পরে গত সোমবার সন্ধ্যায় ওই ছুরি নিয়ে রাবেয়াদের বাসায় গিয়ে সরাসরি তার রুমে ঢুকে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ছুরি দিয়ে রাবেয়ার মাথা, গলা, হাত ও পায়ে কুপিয়ে এলোপাতাড়ি জখম করে। এ সময় রাবেয়ার চিৎকারে তার মা ও দুই বোন এগিয়ে এলে তাদেরও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে পালিয়ে যায় সাইদুল। তাদের চিৎকারে স্থানীয়রা এসে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাবেয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। বর্তমানে রাবেয়ার মা আইসিইউতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।


গত ৮ই মে গাজীপুরের সালনায় নৃশংসভাবে কলেজছাত্রীকে হত্যা এবং নিহতের মা ও দুই বোনকে মারাত্মক জখম করার ঘটনায় একমাত্র আসামি সাইদুলকে গ্রেপ্তারের পর এসব কথা জানায় র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন। বুধবার রাতে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর এলাকায় র‍্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‍্যাব-১ এর অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল দুপুরে রাজধানীর কাওরানবাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে এসব কথা জানান র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। 

খন্দকার মঈন বলেন, রাবেয়া ২০২০ সালে জয়দেবপুরের একটি কলেজ থেকে বিজ্ঞান বিভাগে থেকে এইচএসসি পাস করেন। এরপর গাজীপুর চৌরাস্তার একটি কলেজে স্মাতক দ্বিতীয় বর্ষে অধ্যায়নরত ছিলেন। পাশাপাশি তিনি আইইএলটিএস পড়ালেখার পাশাপাশি স্থানীয় একটি বিউটি প্রোডাক্টস অনলাইন শপে চাকরি করতেন। গ্রেপ্তার সাইদুল চট্টগ্রামের একটি মাদ্রাসা থেকে দাওরা পাস করে গাজীপুরের একটি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করার পাশাপাশি স্থানীয় একটি মসজিদে ইমামতি করতেন। এর পাশাপাশি এলাকার বিভিন্ন বাসায় গিয়ে আরবি পড়াতেন। দুই মাস আগে দুটি চাকরিই ছেড়ে দিয়ে শুধু বাসায় আরবি পড়াতেন। ঘটনার পর থেকে নিজের চুল-দাড়ি কিছুটা কেটে চেহারা পরিবর্তন করে টাঙ্গাইলের ভুঞাপুরে এক বন্ধুর বাসায় আত্মগোপনে যান। সেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব।

� পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ �







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: [email protected]
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status