কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় বাঘের দেখা মিলেছে বলে দাবি করেছে স্থানীয়রা। মহেশখালীর বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সোনাদিয়ায় খালের মাঝখান থেকে প্যারাবনের দিকে তাক করা একটি ক্যামেরার লেন্সে ধরা পড়েছে বাঘের অবয়ব। এ ঘটনা প্রচারের পর এলাকায় আতংক বিরাজ করছে।
ছবিতে দেখা যায়, সোনাদিয়ার প্যারাবন থেকে বের হয়ে খালের কিনায় দাঁড়িয়ে আছে বাঘটি। ক্যামেরার লেন্স ও সূর্যের রশ্মি মুখোমুখি হওয়ায়, স্তন্যপায়ী এই প্রাণী কিছুটা অস্পষ্ট। তবে দেখলেই বোঝা যায়, ছবির প্রাণীটি বাঘের অবয়ব।
এই ছবিটি তুলেছেন বন বিভাগের সহযোগী বননিরাপত্তা সংরক্ষণ কমিটির সদস্য মোহাম্মদ ফরহাদ। তিনি জানান, বৃহস্পতিবার সোনাদিয়ায় তারা টহলে যাচ্ছিলেন। খাল বেয়ে যাওয়া নৌকায় বন বিভাগের সদস্যরাও ছিলেন। হঠাৎ প্যারাবনের দিকে চোখ পড়তেই দেখতে পান বাঘ। ছবি তুলতে শুরু করেন তিনি। ভিডিও করেন। সূর্যের মুখোমুখি হওয়ায়, প্রাণীটিকে কোনভাবেই লেন্সে কব্জা করতে পারছিলেন না।
পরে সবাই মিলে ছবি বিশ্লেষণ করে জানান, ছবির স্তন্যপায়ী প্রাণীটি বাঘ। তবে প্রাথমিক ধারণা, এটি একটি মেছো বাঘ। সাইজে একটা বড় কুকুরের সমান।
কিন্তু দূর থেকে বাঘের আকৃতির সঙ্গে মেলাতে পারলেও ফরহাদরা এখনো নিশ্চিত নন যে, এটি মেছো নাকি আসল বাঘ। আর মেছো বাঘ যদি হয় তবে ভয়ের কিছু নেই বলে দাবি বনকর্মীদের।
কুতুবজোম ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট শেখ কামাল বলেন, বাঘের অবয়বের ছবি প্রচার হওয়ার পর এটি মেছোবাঘ বা বনবিড়াল- বন বিভাগের এমন কথায় বিশ্বাস করতে পারছেন না সোনাদিয়ার বাসিন্দারা। যে ছবি প্রকাশ পেয়েছে, তা দেখে সোনাদিয়ার মানুষ আতঙ্কে আছেন।
বাঘ আকৃতির এই ছবি নিয়ে উপকূলীয় বনবিভাগ চট্টগ্রামের মহেশখালীর গোরকঘাটা রেঞ্জের রেঞ্জ কর্মকর্তা এম আনিসুর রহমান বলেন, আমাদের টহল টিম বাঘ আকৃতির প্রাণীটি স্বচক্ষে দেখেছে। তারা জানিয়েছে, এটা বনবিড়ালের বড় প্রজাতি। এটা নিয়ে আতংকিত হবার কিছু নেই।
কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের সদর রেঞ্জ কর্মকর্তা সমীর রঞ্জন সাহা বলেন, উপকূলীয় বনের মহেশখালী ও কক্সবাজারের উপকূলের বনে বন বিড়াল ও মেছোবাঘের বিচরণ রয়েছে। মাঝে মাঝে সাইজে বড় মেছোবাঘ ও বনবিড়ালের দেখা মিলে। হঠাৎ দেখলে এগুলোকে বাঘ বা চিতাবাঘ বলে ভুল করে অনেকে।
তিনি বলেন, গত কয়েক বছরের বেশ কয়েকটি মেছোবাঘ ও বন বিড়াল মানুষের কবল থেকে উদ্ধার ডুলাহাজারা সাফারি পার্ক কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সোনাদিয়া দ্বীপে দেখা মেলা বাঘের অবয়বের প্রাণীটি এ দুই প্রজাতির কোনো একটি। এখানে বাঘের অস্তিত্ব সহজতর নয়। এরপরও উপকূলীয় বনকর্মী ও আমরা এলাকায় নজর রেখেছি।