কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার কান্দাপাড়া গ্রামে ছেলের বউকে ধর্ষণের একটি নেক্কার জনক ঘটনায় অভিযুক্ত শ্বশুর হযরত আলীকে গতকাল বুধবার ২৫ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১ টায় রৌমারী বাজার থেকে আটক করেছে পুলিশ, অভিযুক্ত অপর আসামি শাশুড়ী পলাতক রয়েছে।
ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বিগত ৭ বছর আগে ওই গ্রামের হযরত আলীর ছেলে আব্দুর রশিদের সাথে তার বিবাহ হয়। বিয়ের পর থেকে তারা স্বামী- স্ত্রী সংসারে সুখেই ছিলেন। গত ২ বছর আগে তার স্বামী মালয়েশিয়া যায়। এর পর থেকেই তার শ্বশুর বিভিন্ন সময় ওই নারীর ওপর কু'নজরে তাকাতে থাকে। এমতবস্থায় এক গভীর রাতে তাকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। পরে একথা কাউকে বললে হত্যা করাসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখায়।
এমন নেক্কার জনক ঘটনার কথা ওই নারী তার স্বামীকে জানালে ঘটনার বিষয় তার মা অর্থাৎ ওই নারীর শাশুড়ি রওশনারাকে বলতে বলে। তখন সে তার শাশুড়িকে নেক্কারজনক ঘটনাটি জানালে তিনি তার স্বামীকে কিছুই বলেন না। উপরন্তু শাশুড়ী এ ঘটনার কথা কাউকে না বলার জন্য বলেন এবং ভয়ভীতি দেখান। শাশুড়ীর এমন নিরবতা দেখে শ্বশুর পরে আবারও পরপর ২ দিন ধর্ষণ করে।
এঘটনায় ওই নারী ৩ মাসের অন্তঃসত্বা হলে শাশুড়ি রওশন আরা ওই নারীকে জোর পূর্বক বিভিন্ন গাছ গাছড়ার ঔষধ খাইয়ে গর্ভপাত ঘটায়। এতে সে গুরুতর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে ওই নারী বাধ্য হয়ে তার পিতা মহর আলীকে জানালে মহর আলী ময়মনসিংহ চরপাড়া ফাতিহা ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা করান।
উল্লেখ্য, যে এ ঘটনায় মহর আলী বাদী হয়ে শরীয়ত ও সামাজিক ভাবে শালিশী বৈঠকের জন্য চাক্তাবাড়ি স্বরলিপি যুব সংঘের সভাপতি পল্লী চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, (মাষ্টার) রফিকুল, নুর-ইসলাম, সৃজন মন্ডল ও আব্দুল কাইয়ুমকে বিচার দেন। সভাপতি আমিনুল ইসলাম বিষয়টি মিমাংসা করে দিবে বলে ওই নারীর কাছে জোর পূর্বক তার স্বামীকে ইসলামি শরিয়া মোতাবেক তালাক হয়েছে মর্মে তালাক নামায় সহি স্বাক্ষর নেয় এবং একই সাথে ওই নারীর ক্ষতিপূরণ বাবদ শ্বশুর হযরত আলীর কাছ থেকে নগদ ১ লক্ষ ৪০ হাজার টাকায় রফাদফা করেন এবং অভিযোগ মিথ্যা বলে প্রচারনা চালাতে থাকেন।
এতে ভুক্তভোগী আরো ক্ষতির সমূহ সম্ভবনা মনে করে অবশেষে ধর্ষকের শাস্তির দাবীতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর রৌমারী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
রৌমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আল হেলাল মাহমুদ বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টায় রৌমারী বাজারের ইসলামী ব্যাংকের পাশে শাহ আলমের চায়ের দোকান থেকে হযরত আলীকে গ্রেফতার করে কুড়িগ্রাম জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে এবং অন্য আসামি ওই নারীর শাশুড়ী পলাতক রয়েছে।