কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক অবরুদ্ধ
আহম্মেদুল কবির, কুড়িগ্রাম
প্রকাশ: Sunday, 15 September, 2024, 8:11 PM
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে নিয়োগ বাণিজ্যে ১৯ লক্ষ টাকা আত্মসাথের অভিযোগে এক প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ করে তার বিচার দাবী করা হয়েছে।
এলাকাবাসী জানায়, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলাধীন কাশিপুর ইউনিয়নের আজোয়াটারী মাস্টার পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক জোসেফ আলীর বিরুদ্ধে ১৯ লক্ষ টাকা আত্মসাতের এই অভিযোগ করে বিচার দাবী করা হয়।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, ওই বিদ্যালয়ে ০১জন আয়া ও ০১জন অফিস সহায়ক পদে লোক নিয়োগের বিপরীতে বিদ্যালয়ের উন্নয়নের জন্য তাদের নিকট থেকে ১৯ লক্ষ টাকা গ্রহণ করে ওই প্রধান শিক্ষক। দীর্ঘদিন প্রতিষ্ঠানটি জরাজীর্ণ অবস্থা থাকার পরেও বিদ্যালয়ের উন্নয়নের কাজ না করে টাকা আত্মসাতের চেষ্টা করলে এর প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারসহ বিভিন্ন দপ্তরের অভিযোগ করে স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসী। যার প্রেক্ষিতে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজারকে তদন্তের দায়িত্ব দেয় উপজেলা নির্বাহী অফিসার। সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তা প্রধান শিক্ষক ও সভাপতিকে অভিযোগের স্বপক্ষে প্রামাণাদিসহ উপস্থিত থাকার জন্য চিঠি প্রদান করে।
প্রধান শিক্ষক তদন্ত কর্মকর্তার চিঠির বিষয়টি কোনরূপ পাত্তা না দেয়ায় স্থানীয় অভিভাবক ও এলাকাবাসী বিষয়টি বিদ্যালয় প্রাঙ্গনেই সুরহা করার জন্য উদ্যোগ নিয়ে দফায় দফায় বৈঠক করে। বৈঠকে ওই প্রধান শিক্ষককে কোন ভাবেই উপস্থিত করতে না পারায় বিষয়টি কোনমতেই সুরহা হচ্ছিলো না।
এই পরিস্থিতিতে গত ১২ সেপ্টেম্বর এলাকায় মাইকিং করে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি,স্থানীয় অভিভাবক, এলাকাবাসী ওই প্রাধান শিক্ষকে নিয়ে বৈঠক করে। বৈঠকে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয় সংস্কারের নামে নিয়োগ বানিজ্যে ১৯ লক্ষ টাকার কোন হিসাব না দেয়ায় উত্তেজিত এলাকাবাসী প্রাধান শিক্ষকে দেড় ঘন্টা অফিস রুমে অবরুদ্ধ করে বিচার দাবী করে। এলাকাবাসী খলিলুর রহমান মিঠু, আজিজুল হক ও খলিল জানান, প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতির বিষয়টি নিয়ে আমরা বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করেছি। আজকে একটি তদন্ত হওয়ার কথা থাকলেও সেটি হয়নি। এখন আমরা আইনী প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি তদন্ত সাপেক্ষে খতিয়ে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেব।
অপরদিকে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক জোসেফ আলী জানান, এই নিয়োগে আমি কোন প্রকার টাকা গ্রহণ করিনি। একটি পক্ষ আমার কাছে প্রায় চাঁদা দাবি করে আসছে। চাঁদা না পেয়ে আজকে আমাকে অফিসকক্ষে অবরোধ করে রেখেছে। ওই বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি জাহিদুল হক জানান, আজকে তদন্ত হবার কথা ছিল আমরা গিয়েছিলাম তদন্ত কর্মকর্তা তিনি কাগজপত্র দেখে বলেছিলেন যে এটা মিথ্যা এটা নিয়ে আর কিছু করা লাগবেনা। আর নিয়োগে আমরা কোন প্রকার টাকা গ্রহণ করিনি। উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার আব্দুস সালামের মুঠোফোনে তিনি জানান, আজকে তদন্ত ছিল আমার এখানে কিন্তু প্রধান শিক্ষক ও সাবেক সভাপতি আসার কথা থাকলেও তারা আসেননি। গতকাল প্রধান শিক্ষক ফোন করে বলেছিলেন আমরা বিষয়টা সমাধান করব। আজকে স্কুলে যে ঘটনা ঘটেছিল সেটি আমাকে কেউ জানায়নি আর আমি জানি না। এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা মাহাতাব হোসেন জানান, আমি নতুন এসেছি বিষয়টি জানি না। তবে অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।