ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
ই-পেপার |  সদস্য হোন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
রোববার ১৯ মে ২০২৪ ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১
ফুটপাত দখল মুক্ত করনে বাস্তবায়ন হচ্ছে না প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা
ফাহিম ফরহাদ, গাজীপুর
প্রকাশ: Sunday, 5 May, 2024, 10:04 PM

ফুটপাত দখল মুক্ত করনে বাস্তবায়ন হচ্ছে না প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা

ফুটপাত দখল মুক্ত করনে বাস্তবায়ন হচ্ছে না প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা

ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে হকার ব্যাবসায়ীদের দৌরাত্মে নগরবাসি অতিষ্ঠ। রাজধানী ও গাজীপুর-সহ এর আশপাশের অঞ্চলে বেপরোয়া বাস, মটরসাইকেল ইজি বাইকসহ বিভিন্ন যানবাহন ফুটপাতে উঠে সড়ক দূর্ঘটনায় পথযাত্রী মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে। এসব সড়ক দূর্ঘটনায় অনেকে আবার পঙ্গুত্ব বরণও করেছেন। তারপরও ফুটপাত থাকবে হকারদের দখলে, পথচারী চলবে রাস্তায়, এ যেন শহরের নিয়মে পরিণত ! ২০১৮ সালের আগস্ট মাসে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে 'গভর্নেন্স ইনোভেশন ইউনিট' এর সভায় সড়কে শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্যে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

ওই সভায় ২০ দফা দাবী সুপারিশ করা হয়েছিল। এর মধ্যে দুইটি সুপারিশ ছিল- ফুট ওভার ব্রিজ বা আন্ডারপাসের আশপাশে রাস্তা পারাপার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা এবং পথচারীদের চলাচলের সুবিধার্থে ফুটপাত হকারমুক্ত করণ। বাস্তবে এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের লেশমাত্রাও দেখা যায় না। কারন হিসেবে এ নির্দেশনা বাস্তবায়নকারি কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে-ই দায়ী করছেন সুশীল সমাজের অধিকাংশ। সেই সাথে অদৃশ্য একটি চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটকেও দায়ী করছেন সমাজের অনেকেই।


রাজধানী গাজীপুর-সহ এর আশপাশের গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলগুলোর মহাসড়ক ও রস্তার দুইধারের আবাসিক ও শিল্পাঞ্চল এলাকাগুলোর বাসিন্দারা রয়েছেন মাত্রাতিরিক্ত ভোগান্তিতে। এসব এলাকায় যানবাহন ও পথচারীদের চলাচলের রাস্তা দখলমুক্ত করণে কখনওবা নামমাত্র দায়সারা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করেন কর্তৃপক্ষ। পরবর্তীতে সু-দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও ভূমিকা শূন্য দেখা যায় কর্তৃপক্ষকে। কথিত রয়েছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর অসাধু কিছু ব্যাক্তির অদৃশ্য ইন্ধন ও স্থানীয় কিছু চাঁদাবাজদের ছত্রছায়া এমনকি ক্ষমতাসীন দলের নাম ভাঙ্গিয়েও চলে এসব ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে অবৈধ ব্যাবসা বাণিজ্য।

তবে কর্তৃপক্ষের অভিযানের পরপর-ই আবারও রাস্তার দুইপাশ অবৈধ দখল করে পসরা সাজিয়ে দোকান নিয়ে বসে হকাররা। কেউবা আবার দোকান থাকা সত্বেও ক্রেতার দৃষ্টিআকর্ষণার্থে দোকানের মালামাল বাহিরের ফুটপাত ও রাস্তার উপর সাজিয়ে করছেন রমরমা বাণিজ্য। এমনকি রান্নার কাজে ব্যাবহৃত দাজ্য পদার্থ বোতলজাত সিলিন্ডার গ্যাসের মতো বিস্ফোরক দ্রব্যও একের পর এক সাজিয়ে রাখা হচ্ছে রাস্তার দুইপাশে।

এ বিষয়ে একাধিক স্থানীয়দের অভিযোগ এর প্রেক্ষিতে শনিবার (০৪মে) গাজীপুর মহানগরীর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ডেগেরচালা ও আশপাশের এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায় ফুটপাত দখল করে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী এবং কাঁচাবাজারের পসরা সাজিয়ে বসেছে হকাররা। এর মধ্যে নজর কারা দৃশ্য ছিলো অর্ধ্বশতাধিত থ্রি-হুইলার ভ্যান যোগে কাঁচাবাজার ফলফলাদি ও স্ট্রিট ফুডের (খাবারের) দোকান। এছারাও চোখে পরে রাস্তা দখল করে মাছ বিক্রেতার দোকানও।

স্থানীয় স্থায়ী বাসিন্দারা বলছেন এদের ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে দোকান নিয়ে বসার কারনে জনসাধারণের চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। শীল্পনগরী হওয়ায় বিভিন্ন পোষাক কারখানার মালবাহী গাড়ী রিক্সা অটোসহ রোগীবাহী এ্যাম্বুলেন্স এমনকি প্রশাসনের গাড়ীও পড়ছে ভোগান্তিতে। এলাকাবাসি এহেন পরিস্থিতি হতে পরিত্রাণ পেতে চায়। তারা বলেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ সিটি কর্পোরেশনের যথোপযুক্ত দায়িত্বশীলরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখলে এ পরিস্থিতি থেকে ভূক্তভূগী সকল পথচারী জনসাধারণ পরিত্রাণ পাবে।

এ বিষয়ে কথা হয় কয়েকজন ফুটপাত ও রাস্তা দখল করে ব্যাবসা করা ফুটপাত ব্যাবসায়ীর সাথে। তাদের মধ্যে জামালপুরের মেলান্দহ থানার কুনিয়া গ্রামের আব্দুর রহিমের ছেলে রেজাউল করিম নগরীর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার ডেগেরচালার আসাদুল্লাহ সুপার মার্কেটের ফুটপাতে ব্যাবসা করেন এছারাও ওই এলাকায় ব্যাবসা করেন শেরপুরের ঝিনাইগাতী থানার গীলাগাছা ইউপির গৌরিপুর গ্রামের নজরুল ইসলাম (৪৫)।

এছারাও ময়মনসিংহ জেলার নন্দাইল থানার বিরগুষপালা গ্রামের জালালের ছেলে নাদিউল (১৫), একই জেলার ফুলপুর থানার বারিজা গ্রামের শফিকুল ইসলামের ছেলে ফল বিক্রেতা দেলোয়ার,  একই জেলার হালুয়াঘাট থানার জুগলী গ্রামের মকবুল হোসেনের ছেলে আল-আমিন (২৩), কিশোরগঞ্জ সদর থানার পাশদা গ্রামের মৃত কাজল মিয়ার ছেলে মাছ বিক্রেতা দিন ইসলাম (৩৫)।

তারা সকলে প্রতিবেদককে বলেন এটা অপরাধ হলেও আমরা গরীব মানুষ কি করে খাবো! তাই রাস্তা ও ফুটপাতে ব্যাবসা করে খাই। জানতে চাইলে বলেন ফুটপাতে আগে বেশি টাকা লাগতো এখন মাঝে মাঝে পুলিশ তারিয়ে দিলে চলে যাই আবার এসে বসি তখন যে টহল পুলিশ আসে তাদের সামান্ন কিছু (৫০-১০০) টাকা দিতে হয়। কেউবা আবার স্ট্রিট ফুড (খাবারের দোকান) থেকে কিছু খায় টাকা ছাড়া। এদের মধ্যে কয়েকজন বলেন এসব প্রকাশ্যে বল্লে ব্যাবসা করতে দিবেনা তাই আমরা এ বিষয়ে ক্যামেরায় কথা বলতে নারাজ। তবে এসকল বিষয়ের কথোপকথন গোপন ক্যামেরায় ধারণকৃত চিত্র প্রতিবেদকের নিকট সংরক্ষিত।

অপরদিকে নাম পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন পথচারী নারী পুরুষরা বলেন আগেতো শুধু ফুটপাত দখল করে ব্যাবসা বাণিজ্য পরিচালনা করতো হকাররা, এখন ফুটপাত ও রাস্তার দু'পাশ দখল করে ফুটপাত ব্যাবসায়ীরা ব্যাবসা করছে। রিক্সা অটোচালকদের অনিয়ন্ত্রিত অপরিকল্পিত রাস্তাদখলেও প্রশাসনিক ভূমিকা খুবি ক্ষিণ। স্থানীয়রা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীর নিকট প্রত্যাশা ব্যাক্ত করে এদের কঠোর হস্তে দমনের আশাবাদ ব্যাক্ত করেন।

এ বিষয়ে গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের উপ-সচিব আব্দুল হান্নান বলেন, কিছু মহল্লায়তো ফুটপাত নেই, তিনি বলেন কোন কোন এলাকায় এমন ফুটপাত দখল করা হয়েছে আমাকে জানায়েন উচ্ছেদের নির্দেশনা দিবো ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে। এ বিষয়ে গাছা থানা পুলিশের অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) জিয়াউল ইসলাম বলেন পুলিশের অভিযোগ আপনার কাছে কেন? পরক্ষণে তিনি জানান তদন্ত করে ব্যাবস্থা নিবেন।

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, গ্রীন ট্রেড পয়েন্ট, ৭ বীর উত্তম এ কে খন্দকার রোড, মহাখালী বা/এ, ঢাকা ১২১২।
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: info@notunshomoy.com
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status