ই-পেপার সোমবার ১৪ নভেম্বর ২০২২
সদস্য হোন |  আমাদের জানুন |  পডকাস্ট |  গুগলী |  ডিসকাউন্ট শপ
শনিবার ২৫ মার্চ ২০২৩ ১১ চৈত্র ১৪২৯
শীর্ষ ঋণখেলাপি আওয়ামী লীগের আসলামুল, তালিকায় বিএনপির আসলামও
নতুন সময় ডেস্ক
প্রকাশ: Wednesday, 25 January, 2023, 11:06 AM

শীর্ষ ঋণখেলাপি আওয়ামী লীগের আসলামুল, তালিকায় বিএনপির আসলামও

শীর্ষ ঋণখেলাপি আওয়ামী লীগের আসলামুল, তালিকায় বিএনপির আসলামও

ব্যাংক খাতের শীর্ষ ঋণখেলাপি এখন আওয়ামী লীগের প্রয়াত সংসদ সদস্য আসলামুল হক। তাঁর দুই প্রতিষ্ঠানের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ২ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে একটি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র সিএলসি পাওয়ার কোম্পানি ও অপরটি আবাসন খাতের মাইশা প্রপার্টি ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড। ঋণের বড় অংশ বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংকে, কিছু ঋণ রয়েছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংকে।

চট্টগ্রামের বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর রাইজিং স্টিল লিমিটেডের ঋণ ১ হাজার ১৪২ কোটি টাকা। তিনি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব।

আর চামড়া খাতের আলোচিত ক্রিসেন্ট গ্রুপের দুই প্রতিষ্ঠান দেশের দ্বিতীয় শীর্ষ খেলাপি গ্রাহক। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো রূপালী কম্পোজিট লেদার ওয়্যার ও ক্রিসেন্ট লেদার প্রোডাক্টস। প্রতিষ্ঠান দুটির ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৭২৮ কোটি টাকা। ক্রিসেন্ট গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এ কাদের। তাঁর ভাই ও জাজ মাল্টিমিডিয়ার কর্ণধার এম এ আজিজের রিমেক্স ফুটওয়্যার লিমিটেডের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৭৭ কোটি টাকা।

দেশের শীর্ষ ২০ ঋণখেলাপির তালিকা গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শহীদুজ্জামান সরকারের এক প্রশ্নের উত্তরে জাতীয় সংসদে এ তথ্য উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী। স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উপস্থাপন করা হয়। এই শীর্ষ খেলাপিদের কাছে মোট ঋণের পরিমাণ ১৯ হাজার ২৮৩ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১৬ হাজার ৫৮৭ কোটি ৯২ লাখ টাকা। দেশে মোট ঋণখেলাপি গ্রাহকের সংখ্যা ৭ লাখ ৮৬ হাজার ৬৫।

ব্যাংক কোম্পানি আইন অনুযায়ী, কোনো গ্রুপের কোনো ঋণ খেলাপি হলে পুরো ঋণই খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত হয়। সেই গ্রুপের ঋণ নেওয়ার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তাই পুরো ঋণকে খেলাপি ধরে হিসাব করা হয়েছে।

তালিকা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগ নেতাদের পাশাপাশি বিএনপির নেতাদের প্রতিষ্ঠানও রয়েছে শীর্ষ খেলাপির তালিকায়। ২০ খেলাপি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০টিই চট্টগ্রামের। আর শীর্ষ ২০ খেলাপির তালিকার বেশির ভাগই বিদ্যুৎ, জাহাজ নির্মাণ, পাদুকাশিল্প, ভোগ্যপণ্য ও ইস্পাত খাতের প্রতিষ্ঠান।

ব্যাংক খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, খেলাপির তালিকায় প্রকৃত চিত্র আসছে না। কারণ, প্রভাবশালী গ্রাহকেরা নিজেদের ঋণ বছরের পর বছর শোধ না করেও নিয়মিত দেখাচ্ছেন। ব্যাংকগুলো তাদের ঋণ প্রতিবছর পুনঃ তফসিল ও নবায়ন করে নিয়মিত রাখছে। আবার বাংলাদেশ ব্যাংক বিশেষ ব্যবস্থায় পুনঃ তফসিল, পুনর্গঠন সুবিধা দিয়ে খেলাপি ঋণ কম দেখানোর সুযোগ করে দিচ্ছে। এ ছাড়া করোনার কারণে ২০২০ ও ২০২১ সালের পুরোটাই ঋণ শোধ না করেও খেলাপিমুক্ত থাকার সুযোগ ছিল।


শীর্ষ তালিকায় আরও যাঁরা

সংসদে দেওয়া খেলাপির তালিকা অনুযায়ী, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড লিমিটেডের ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ৮৫৫ কোটি টাকা। এটি গড়ে তুলেছিলেন ৭ জন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার। প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারবাজারেও তালিকাভুক্ত ছিল। তবে আর্থিক অব্যবস্থাপনার কারণে এখন ব্যাংকের ঋণ খেলাপির তালিকায়। এটি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের প্রতিষ্ঠান।

চট্টগ্রামের বিএনপি নেতা আসলাম চৌধুরীর রাইজিং স্টিল লিমিটেডের ঋণ ১ হাজার ১৪২ কোটি টাকা। তিনি বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব। চট্টগ্রামের পুরোনো ব্যবসায়ী পরিবার মোহাম্মদ ইলিয়াস ব্রাদার্সের ঋণের পরিমাণ ৯৬৫ কোটি টাকা।

তবে শুধু রাজনীতি করা ব্যবসায়ীরাই যে খেলাপি হচ্ছেন, এমনটা নয়। যেমন দেশের অভিজাত ব্যবসায়ী ও প্রয়াত শিল্পী নিতুন কুন্ডুর ছেলে অনিমেষ কুন্ডুর কোয়ান্টাম পাওয়ার সিস্টেমস লিমিটেডের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮১১ কোটি টাকা।

চট্টগ্রামের সাদ মুসা ফেব্রিকসের ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ১৭২ কোটি টাকা। এর কর্ণধার মোহাম্মদ মহসিন, তিনি নতুন প্রজন্মের সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান মেরিডিয়ান ফাইন্যান্সের সাবেক পরিচালক। প্রতিষ্ঠান-সংশ্লিষ্ট চট্টগ্রামের রেডিয়াম কম্পোজিট টেক্সটাইল মিলসের খেলাপি ঋণ ৭৭০ কোটি টাকা।

নারায়ণগঞ্জের বি আর স্পিনিং মিলসের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৭২১ কোটি টাকা।

চট্টগ্রামের এস এ গ্রুপের চেয়ারম্যান শাহাবুদ্দিন আলমের এস এ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেডের ঋণ ১ হাজার ১৭২ কোটি টাকা ও সামান্নাজ সুপার অয়েলের ১ হাজার ১৩০ কোটি টাকা। শাহাবুদ্দিন আলম মার্কেন্টাইল ব্যাংকের সাবেক পরিচালক।

এ ছাড়া নতুন করেও কিছু প্রতিষ্ঠান শীর্ষ খেলাপির তালিকায় উঠে এসেছে। এর মধ্যে মানহা প্রিকাস্ট টেকনোলজির ৬৪৭ কোটি টাকা। এর ঠিকানা ধানমন্ডির ১৬ নম্বর সড়কের ১৩ নম্বর বাসায়। আর আশিয়ান সিটির প্রতিষ্ঠান আশিয়ান এডুকেশন লিমিটেডের খেলাপি ঋণ ৬৫৩ কোটি টাকা। আশিয়ান সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নজরুল ইসলাম ভূঁইয়া।

এ ছাড়া চট্টগ্রামের আরএসআরএম স্টিলের প্রতিষ্ঠান এস এম স্টিল রি-রোলিং মিলের ঋণ ৮৮৮ কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠান দুটি রতনপুর গ্রুপের। গ্রুপটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাকসুদুর রহমান। তিনিও সাউথ বাংলা অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড কমার্স ব্যাংকের সাবেক পরিচালক।

রাজধানীর অ্যাপোলো ইস্পাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৮৭২ কোটি টাকা। এটি প্রয়াত শিল্পোদ্যোক্তা দীন মোহাম্মদের প্রতিষ্ঠান। তাঁর ফিনিক্স গ্রুপ ও অ্যাপোলো গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের আরও অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংক ও ফিনিক্স ফাইন্যান্সের অন্যতম উদ্যোক্তাও ছিলেন তিনি। তাঁর মুত্যুর পর নেতৃত্বশূন্যতায় গ্রুপটির সব প্রতিষ্ঠাই এখন ঝুঁকছে। আবার মৃত্যুর পর কর্মকর্তাদেরও অনেকে সুযোগ নিয়েছেন।

এ ছাড়া চট্টগ্রামের এহসান স্টিল রি-রোলিং মিলের খেলাপি ঋণ ৬২৪ কোটি টাকা ও সিদ্দিক ট্রেডার্সের ঋণ ৬৭০ কোটি টাকা।

পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ







  সর্বশেষ সংবাদ  
  সর্বাধিক পঠিত  
এই ক্যাটেগরির আরো সংবাদ
সম্পাদক ও প্রকাশক: নাজমুল হক শ্যামল
দৈনিক নতুন সময়, ২৫/১ পল্লবী, মিরপুর ১২, ঢাকা- ১২১৬
ফোন: ৫৮৩১২৮৮৮, ০১৯৯৪ ৬৬৬০৮৯, ইমেইল: newsnotunsomoy@gmail.com
কপিরাইট © দৈনিক নতুন সময় সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত | Developed By: i2soft
DMCA.com Protection Status