রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব কি খারাপ কিছু?
নতুন সময় ডেস্ক
|
![]() রাতে ঘন ঘন প্রস্রাব কি খারাপ কিছু? রাতে বারবার ঘুম থেকে প্রস্রাবের জন্য উঠার সমস্যাটিতে ভুগছেন অনেকেই। এই সমস্যাকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় ‘নকটুরিয়া’ বলা হয়। এটি শুধু ঘুমের ব্যাঘাতই ঘটায় না বরং দৈনন্দিন জীবনের মানও কমিয়ে দিতে পারে। রাতে ঘন ঘন প্রস্রাবের কারণ কী? ১. অতিরিক্ত তরল গ্রহণ: রাতে বা সারাদিনের খাবারের সঙ্গে অতিরিক্ত পানি বা তরল পান করলে রাতে প্রস্রাব বেশি হতে পারে। বিশেষ করে ক্যাফেইন বা অ্যালকোহল যুক্ত পানীয় প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়িয়ে দিতে পারে। ২. ডায়াবেটিস: ডায়াবেটিসের কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে গেলে কিডনি অতিরিক্ত প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীর থেকে গ্লুকোজ বের করে দেয়। এতে রাতে বারবার প্রস্রাব হতে পারে। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ: কারণ, ঝুঁকি এবং প্রতিরোধে যা যা করণীয়মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ: কারণ, ঝুঁকি এবং প্রতিরোধে যা যা করণীয় ৩. মূত্রনালীর সংক্রমণ: মূত্রনালী বা মূত্রথলিতে সংক্রমণ হলে প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া, ব্যথা এবং এর সঙ্গে ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ হতে পারে। ৪. প্রোস্টেট গ্রন্থির সমস্যা: পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রোস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে গেলে মূত্রনালীতে চাপ পড়ে এবং রাতে ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা দেখা দেয়। ৫. হরমোনের ভারসাম্যহীনতা: শরীরে অ্যান্টিডাইইউরেটিক হরমোন (ADH) এর মাত্রা কমে গেলে বা ঠিকমতো কাজ না করতে পারলে- কিডনি শরীরে পানি ধরে রাখতে পারে না, প্রস্রাবের সাথে অতিরিক্ত পানি বের করে দেয়। ৬. ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: উচ্চ রক্তচাপের কিছু ওষুধ বা শরীর থেকে পানি কমানোর (ডায়ুরেটিক) ওষুধ সেবন করলে রাতে প্রস্রাবের পরিমাণ বাড়তে পারে। তবে এ ধরনের ওষুধ প্রেসক্রাইব করার আগে চিকিৎসক এই ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জানিয়ে দিয়ে থাকেন। ৭. প্রাইমারি পলিডিপসিয়া: অতিরিক্ত পানি পান করা অনেকের অভ্যাস হয়ে দাঁড়ায়, যেটা কিছুটা মানসিক রোগও বটে। এজন্য বেশি বেশি পানি করেন, ফলশ্রুতিতে বার বার প্রস্রাবের বেগ পায়। রাতে প্রস্রাবের জন্য বারবার ঘুম থেকে উঠেন, এবং টয়লেট থেকে ফিরেই আবার পানি করেন। ৬. গর্ভাবস্থা: গর্ভাবস্থায় জরায়ুর মধ্যে চাপ বৃদ্ধির কারণে মূত্রাশয়ের উপরে চাপ পড়ে এবং ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ তৈরি হয়। ধূমপান প্রতিরোধ ও শারীরিক ক্ষতি পুনরুদ্ধারে করণীয়ধূমপান প্রতিরোধ ও শারীরিক ক্ষতি পুনরুদ্ধারে করণীয় প্রতিকার ও সমাধান কী হতে পারে? ১. তরল গ্রহণ নিয়ন্ত্রণ: রাতের খাবারের পর অপ্রয়োজনীয় অতিরিক্ত পানি বা তরল পান করা এড়িয়ে চলা উচিত। বিশেষ করে ক্যাফেইন ও অ্যালকোহলযুক্ত পানীয় পরিহার করাই শ্রেয়। ২. ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ: স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের মাধ্যমে-ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। ডায়াবেটিস থাকলেও- রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। নিয়মিত চেকআপ ও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলতে হবে। ৩. মূত্রনালীর সংক্রমণ এড়ানো: পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে। দিনের সময়টায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে এবং অযথা প্রস্রাব চেপে না রেখে- টয়লেট ব্যবহার করতে হবে। সংক্রমণ হলেও নিতে হবে- দ্রুত চিকিৎসা। ৪. প্রোস্টেট সমস্যার চিকিৎসা: প্রোস্টেট গ্রন্থির সমস্যা থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। প্রয়োজনে ওষুধ বা সার্জারির মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে হবে। ৫. হরমোনাল ভারসাম্য রক্ষা: হরমোনের সমস্যা থাকলে এন্ডোক্রিনোলজিস্টের পরামর্শ নিতে হবে ৬. এর পাশাপাশি পর্যাপ্ত ঘুম, মানসিক দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকা এবং হালকা ব্যায়াম- শরীর ও মনকে সতেজ রেখে একজন সুস্থ রাখতে পারে। ধূমপান প্রতিরোধ ও শারীরিক ক্ষতি পুনরুদ্ধারে করণীয়ধূমপান প্রতিরোধ ও শারীরিক ক্ষতি পুনরুদ্ধারে করণীয় চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে কখন? যদি রাতে ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকে, প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা জ্বালাপোড়া অনুভব করেন, বা প্রস্রাবের রং ও গন্ধে পরিবর্তন লক্ষ্য করেন, তাহলে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এটি কোনো গুরুতর রোগের লক্ষণ হতে পারে। রাতে ঘনঘন প্রস্রাবের সমস্যা অবহেলা করার মতো নয়। সঠিক সময়ে কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসা নিলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব। সুস্থ জীবনযাপনের জন্য সচেতনতা ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি। |
পূর্ববর্তী সংবাদ | পরবর্তী সংবাদ |