কুড়িগ্রামের উলিপুরে এডিপি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের বিষয় নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
আহম্মেদুল কবির, কুড়িগ্রাম
প্রকাশ: Saturday, 12 October, 2024, 2:01 PM
কুড়িগ্রাম উলিপুর উপজেলার এডিপি প্রকল্পের অর্থ আত্মসাতের বিষয় নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বলেছেন তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
গতবুধবার ৯ অক্টোবর বিকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে উক্ত প্রকল্পের- প্রকল্প চেয়ারম্যানের এক লিখিত অভিযোগের প্রেক্ষিতে এ তথ্য জানা যায়।
অভিযোগে জানা যায়, কুড়িগ্রামের উলিপুরে উপজেলা পরিষদের অফিস সহায়ক ফয়জার রহমানকে এডিপি প্রকল্পের চেয়ারম্যান উক্ত উপজেলার ধামশ্রেনী ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত ৭,৮,৯ ওয়ার্ডের সদস্য শাহানাজ পারভীন তার স্বাক্ষরিত প্রকল্পের ১ লাখ ১৩ হাজার টাকার একটি চেক গত ২ অক্টোবর উপজেলা পরিষদের অফিস সহায়ক ফয়জার রহমানকে দিয়ে জনতা ব্যাংকের উলিপুর শাখা থেকে ওই টাকা উত্তোলন করে আনতে বলেন। কিছু সময় পর অফিস সহায়ক ফয়জার রহমান ফিরে এসে প্রকল্প চেয়ারম্যানকে জানান, ব্যাংকে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় টাকা উত্তোলন করতে পারেনি। এ সময় তিনি চেকটি ফেরত চাইলে অফিস সহায়ক বলেন চেকটি আমার কাছে থাক আমি পরে টাকা উত্তোলন করে দিবো। প্রকল্প চেয়ারম্যান শাহানাজ পারভীনের সন্দেহ হলে তিনি পরদিন ব্যাংকের ম্যানেজারের কাছে গেলে জানতে পারেন ফয়জার রহমান ৩ অক্টোবর ১ লাখ ১০ হাজার টাকা উত্তোলন করে নিয়েছেন। এরপর ওই অফিস সহায়কের কাছে প্রকল্পের টাকা চাইলে টালবাহনা শুরু করে এবং মোবাইল ফোনে বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে এই বিষয়ে কাউকে কিছু জানালে কিংবা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানালে তাকেই বিপদে পড়তে হবে বলে জানিয়ে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেন।
এব্যাপারে প্রকল্প চেয়ারম্যান শাহানাজ পারভীন তার পক্ষে সাফাই করতে গিয়ে অভিযোগে বলেন, এর পূর্বেও বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা ব্যাংক থেকে তুলে এনে ফয়জার রহমান আমাদের দিতেন। এই বিশ্বাসে তাকে ১ লাখ ১৩ হাজার টাকার চেক দিয়ে ব্যাংক থেকে টাকা আনতে বলেছিলাম। এই প্রকল্পটি উপজেলা নারী ফোরামের। ওই টাকা দিয়ে ১১ জন দুঃস্থ মহিলাকে সেলাই মেশিন কিনে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু ফয়জার রহমান প্রকল্পের টাকা ব্যাংক থেকে তুলে আত্মসাত করায় আমি বিপদে পড়েছি। এ কারনে প্রতিকার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ করেছি।
অপরদিকে উপজেলা পরিষদের অফিস সহায়ক ফয়জার রহমান তার বিরুদ্ধে প্রকল্পের চেকের টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলনে করে আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করে টাকা উত্তোলনের কথা স্বীকার করে বলেন, শাহানাজ পারভীনের উপস্থিতিতে সাবেক নারী ফোরামের সভাপতি উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রিপা বেগমকে ব্যাংকের মধ্যেই উত্তোলনকৃত টাকা প্রদান করি। টাকা নিয়ে এখন তারা অস্বীকার করছে। টাকা নিয়ে তাদের মধ্যে কী সমস্যা হয়েছে সেটা সমাধান করতে না পেয়ে উল্টো আমার উপর দোষ চাপাচ্ছেন। বিষয়টি তদন্ত করলেই বেড়িয়ে আসবে বলে অভিযুক্ত অফিস সহায়ক ফয়জার রহমান জানান।
এ বিষয়ে সাবেক উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ও নারি ফোরামের সুবিধাভুগী রিপা বেগমের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, চিকিৎসা জনিত কারনে এলাকার বাহিরে আছি। ওই প্রকল্পের টাকা অফিস সহায়কের কাছেই আছে। তিনি আরও বলেন, ফিরে গিয়ে প্রকল্প চেয়ারম্যানকে সাথে নিয়ে বিষয়টি সমাধান করে দিব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আতাউর রহমান অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।